Murshidabad Unrest

‘পুলিশ জোর করে তুলে নিয়ে যেতে চাইছে’! বোসকে চিঠি লিখল মুর্শিদাবাদে নিহতদের পরিবার, পাল্টা ব্যাখ্যা পুলিশের

পুলিশ সূত্রে খবর, দু’জনকে অপহরণ করা হয়েছে, এই মর্মে তাদের কাছে অভিযোগ জমা পড়েছিল। তার ভিত্তিতেই অভিযান চালিয়েছে জঙ্গিপুর পুলিশ জেলা এবং বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশের দল।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০২৫ ১৯:০০
Share:

সিভি আনন্দ বোসকে চিঠি লিখল মুর্শিদাবাদে জোড়া নিহতের পরিবার। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

হঠাৎ করেই ‘নিখোঁজ’ মুর্শিদাবাদে অশান্তির আবহে নিহত হরগোবিন্দ এবং চন্দন দাসের স্ত্রী! অপহরণের অভিযোগ পাওয়া মাত্রই তাঁদের খোঁজে নামে পুলিশ। খুঁজতে খুঁজতে সল্টলেকে তাঁদের হদিসও মেলে। সেই পুলিশি অভিযানের পরেই এ বার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে চিঠি লিখে নিরাপত্তার দাবি জানাল দুই নিহতের স্ত্রী। তাঁদের অভিযোগ, পুলিশ তাঁদের জোর করে তুলে নিয়ে যেতে চাইছে।

Advertisement

আগামী মঙ্গলবার মুর্শিদাবাদের সুতিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক সভা রয়েছে। সম্প্রতি ওয়াকফ সংশোধনী আইনের বিরোধিতায় মুর্শিদাবাদের যে সব জায়গায় হিংসা ছড়িয়েছিল, তার মধ্যে সুতি অন্যতম। সেখানে অশান্তির আবহ দূর হওয়ার পরেই মুখ্যমন্ত্রীর এই সভায় স্বাভাবিক ভাবে অনেকের নজর রয়েছে। ওই সভার আগে শমসেরগঞ্জের দুই নিহত হরগোবিন্দ এবং তাঁর ছেলে চন্দন দু’জনের স্ত্রীর ‘নিখোঁজ’ হয়ে যাওয়া চর্চা শুরু হয়েছে জেলায়।

পুলিশ সূত্রে খবর, দু’জনকে অপহরণ করা হয়েছে, এই মর্মে তাদের কাছে অভিযোগ জমা পড়েছিল। তার ভিত্তিতেই অভিযান চালিয়েছে জঙ্গিপুর পুলিশ জেলা এবং বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশের দল। সেই পুলিশের বিরুদ্ধে দরজা ভেঙে বাড়িতে প্রবেশ এবং জোর করে হরগোবিন্দ এবং চন্দনের স্ত্রীকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। দাস পরিবারের দাবি, তাদের মোটেই অপহরণ করা হয়নি। নিরাপত্তার কারণে তারা আত্মগোপন করেছে।

Advertisement

পুলিশি অভিযানের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন বিজেপি নেতা সজল ঘোষ এবং আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি। তাঁদের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর সভায় দুই নিহতের স্ত্রীকে নিয়ে যেতে চাইছে প্রশাসন। সেই কারণেই এই পুলিশি অভিযান।

রাজ্যপাল বোসকে লেখা চিঠিতেও এই সম্ভাবনার কথা লিখেছেন হরগোবিন্দ এবং চন্দনের স্ত্রী। তাঁরা বলেছেন, ‘‘মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর যে সভা অনুষ্ঠিত হতে চলেছে, সেখানে আমাদের উপস্থিত থাকার কোনও ইচ্ছা নেই। যেখানে আমাদের স্বামীদের নির্মম ভাবে হত্যার সত্যতাকে মিথ্যা শান্তির গল্পে চাপা দেওয়া হবে।’’

পুলিশি অভিযান নিয়ম মেনে হয়নি বলেও অভিযোগ করেছে নিহতদের পরিবার। চিঠিতে লেখা হয়েছে, ‘‘কোনও মহিলা কনস্টেবল ছিল না। যা সম্পূর্ণ ভাবে আইন এবং আমাদের মর্যাদার পরিপন্থী।’’ পরিবারের দাবি, পুলিশ তাদের জানিয়েছে যে, হরগোবিন্দেরই ছেলে অপহরণের একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাই ওই অভিযান। কিন্তু ওই অভিযোগের কোনও নথি তাদের দেখানো হয়নি বলেই দাবি পরিবারের। তাদের আরও দাবি, হরগোবিন্দের ছেলেকে ভয় দেখিয়েই ওই অভিযোগ করানো হয়েছে।

নিহতের পরিবার রাজ্যপালকে লেখা চিঠিতে জানিয়েছে যে, তারা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছে। তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হোক। তারা কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হতে চায়। তা যাতে নিরাপদে তারা করতে পারে, তা-ও নিশ্চিত করা হোক। পুলিশের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ তুলে তদন্তেরও দাবি জানিয়েছে নিহতের পরিবার।

যদিও জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার সুপার অমিত সাউ বলেন, ‘‘অপহরণের নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তকারী আধিকারিক ঘটনাস্থলে পৌঁছেছিলেন। নিয়মমাফিক তদন্ত হয়েছে। এর বাইরে যে যা অভিযোগ করছেন, সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement