জনসংযোগের শুরুতেই আফজলের কাছে ধৃতের পরিবার

দুর্গাপুজোর নবমীতে দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হয়েছিলেন তৃণমূলের পাঁশকুড়া ব্লক সভাপতি কুরবান শা। ওই ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছে শেখ খালেক আহমেদ এক ব্যক্তি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৯ ০১:২২
Share:

কুরবান শা। —ফাইল চিত্র।

ভাই ছিলেন এলাকার দাপুটে তৃণমূল নেতা। তাঁর খুনের পরে পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী এলাকায় দলের দায়িত্বভার তুলে দিয়েছিলেন দাদার কাঁধে। সেই দায়িত্ব নেওয়ার সপ্তাহখানেক পরে এলাকাবাসীর সঙ্গে মঙ্গলবার প্রথমবার জনসংযোগ সারলেন আফজল শা। আর রাজনীতিতে সক্রিয় ভাবে পা দেওয়ার প্রথম দিনই আফজলের দ্বারস্থ হলেন ভাইয়ের খুনের ঘটনায় ধৃতের স্ত্রী এবং পরিজন। স্ত্রী দাবি করলেন, তাঁর স্বামী নির্দোষ। যদিও এ দিন ওই মহিলাদের সঙ্গে দেখা করেননি আফজল।

Advertisement

দুর্গাপুজোর নবমীতে দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হয়েছিলেন তৃণমূলের পাঁশকুড়া ব্লক সভাপতি কুরবান শা। ওই ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছে শেখ খালেক আহমেদ এক ব্যক্তি। এ দিন সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ আফজলের সঙ্গে দেখা করতে কুরবানের বাড়িতে আসেন ধৃত খালেক আহমেদের স্ত্রী, বৌমা-সহ পাঁচ মহিলা। তবে তাঁদের পরিচয় জানার পরেই আটকান প্রতিবেশীরা। কুরবানের বাড়ির পাহারায় থাকা পুলিশ কর্মীরাও আসেন।

ওই সময় অবশ্য আফজল বাড়িতে ছিলেন না। তিনি ছিলেন মাইশোরা বাজারে দলীয় কার্যালয়ে। পুলিশি পাহারায় ওই মহিলারা সেখানে আসেন। আফজলের সঙ্গে দেখা করার আর্জি জানিয়ে খালেকের স্ত্রী শামসাদ বেগম বলেন, ‘‘আমার স্বামী অসুস্থ। খুনের সঙ্গে তাঁর কোনও যোগ নেই। আফজল দয়া করে যদি ওঁকে মুক্তি দেন।’’

Advertisement

আফজল ওই মহিলাদের সঙ্গে দেখা করেননি। বরং তিনি ভিলেজ পুলিশকে ফোন করে ডাকেন। খবর দেন পাঁশকুড়া থানাতেও। আফজল বলেন, ‘‘যেভাবে ওই মহিলার সন্ধ্যায় আমাদের বাড়িতে এসেছেন, তাতে আমি এবং আমার পরিবার এখনও নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি। পুলিশকে জানিয়েছি।’’ পাশাপশি আফজলের বক্তব্য, ‘‘আমরা খালেকের নামে কোনও অভিযোগ করিনি। পুলিশ এই খুনের ঘটনায় ওর জড়িয়ে থাকার প্রমাণ না পেলে কেন গ্রেফতার করবে!’’

কুরবান খুনের পরেই পরিবহণ মন্ত্রীর প্রস্তাবে সায় দিয়ে রাজনীতিতে নেমেছেন আফজল। পাঁশকুড়া তৃণমূল ব্লক নেতৃত্ব তাঁকে মাইশোরা অঞ্চলে দলের কোর কমিটির প্রধান করেছেন। এ দিন মাইশোরা এলাকার বিভিন্ন জায়গায় ঘোরেন আফজল। কথা বলেন সাধারণ মানুষজনের সঙ্গে।

দলীয় সূত্রের খবর, বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ মাইশোরা বাজার এলাকা থেকে একটি মোটরবাইক র‍্যালি বার হয়। মাইশোরা বাজার থেকে শ্যামপুর হয়ে ফের মাইশোরা বাজারে আসে র‌্যালি। সেখান থেকে রাধাবল্লভপুর, সাহালাজপুর, চকগোপাল, মাঠ যশোড়া, ধারন্দা, মনসাপুকুর বাজার হয়ে মাইশোরা বাজারে শেষ হয় র‍্যালি। পথে চকগোপাল, সাহালাজপুরে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে কিছুক্ষণ বসেন আফজল। তাঁকে দেখে এগিয়ে আসেন অনেক দলীয় সমর্থক। তাঁদের সঙ্গে জন সংযোগের মাধ্যমে আফজল এলাকার মানুষজনের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।

আফজলকে সামনে পেয়ে অনেককেই তাঁর ভাইয়ের মৃত্যুর ঘটনায় সান্ত্বনা দেন। এ দিন আফজল বলেন, ‘‘কখনও ভাবিনি ভাইয়ের অসম্পূর্ণ কাজ সম্পূর্ণ করতে আমাকে রাজনীতির ময়দানে নামতে হবে। শুভেন্দু, শিশিরবাবু আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছেন, তা আমি মাথা পেতে নিয়েছি। আগামী দিনে মাইশোরায় আমার ভাইয়ের দলের অসম্পূর্ণ সমস্ত কাজ দ্রুত শেষ করতে উদ্যোগী হব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন