বিকাশ ভবনের সামনে চলছে বিক্ষোভ। —ফাইল চিত্র।
রবিবার বিকাশ ভবনের সামনে আন্দোলন চলাকালীন চাকরিহারাদের পাশে এসে দাঁড়ালেন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের নির্যাতিতার বাবা-মা। তাঁরা এসে আন্দোলন মঞ্চ ঘুরে দেখলেন এবং চাকরিহারাদের সঙ্গে কথা বললেন।
রবিবার রাত ১০টার পরে নির্যাতিতার বাবা-মা সেখানে পৌঁছন। চাকরিহারাদের আন্দোলনে পাশে থাকার বার্তা দিলেন। সেখানে নির্যাতিতার বাবা-মা বলেন, “আমরা চাকরিহারা শিক্ষকদের পাশে রয়েছি। তাঁদের এই আন্দোলন যাতে সাফল্য পায়ে সেই আশা রাখছি। আমার মেয়ের উপর যে অন্যায় হয়েছিল তার বিরুদ্ধে যেমন ন’মাস ধরে আমরা লড়াই করছি। ওঁদেরও বলব সেরকমই ধৈর্য ধরে লড়াইটা চালিয়ে যেতে। জয় অবশ্যই হবে।”
তাঁরা আরও বলেন, এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী, পুলিশ প্রসাশন এবং মন্ত্রী সকলেই ব্যর্থ। চালে কাকর আছে না কি কাকোরের চাল সেটা অবশ্যই খুঁজে বের করতে হবে। কারণ যারা মানুষ গড়ার কারিগর তাঁদের উপর পুলিশ লাঠি চালাচ্ছে, লাথি মারছে। যে রকম পুলিশের ভূমিকা দেখা গিয়েছিল আমার মেয়ের বিষয়। সেই একই ভূমিকা পুলিশের দেখা গেল শিক্ষকদের বিরুদ্ধে।যাঁরা শিক্ষক গড়ার কারিগর তাঁরা আজকে রাস্তায়। এটা আমাদের লজ্জা। চাকরিহারাদের চাকরি যাওয়ার জন্য দুর্নীতি দায়। আমার মেয়ের বিষয়ে যেমন স্বাস্থ্য দফতর দায়ী, ওঁদের চাকরি যাওয়ার জন্য শিক্ষাদফতর দায়ী। আগামী দিনে ওঁদের যদি নবান্ন অভিযান বা কালীঘাট ঘেরাও অভিযান থাকে তা হলে সেই অভিযানেও আমরা ওঁদের পাশেই থাকব।” নির্যাতিতার বাবা-মায়ের প্রশ্ন, “ওঁদের ‘মিরর ইমেজ’ বা ওএমআর শিট কেন দিচ্ছে না? ওটা দিলেই তো কে ‘যোগ্য’ আর কে ‘অযোগ্য’ সেটা প্রমাণিত হয়ে যাবে। সব কিছু শেষে ওঁদের বলব আপনারা ধৈর্য ধরুন অবশ্যই সাফল্য আসবে।”
শনিবারের মতো রবিবারও স্কুলপড়ুয়াদের নিয়ে এসে বিকাশ ভবনের সামনে ক্লাস করানো হয়েছে। এই বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই পদক্ষেপ করেছে পশ্চিমবঙ্গ শিশু সুরক্ষা কমিশন। তারা জানিয়েছে, শনিবারের ঘটনায় শিশু সুরক্ষা, জুভেনাইল জাস্টিস আইন লঙ্ঘিত হয়েছে। এই বিষয়ে তিন দিনের মধ্যে বিধাননগর কমিশনারেটের থেকে রিপোর্ট তলব করেছে কমিশন।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার বিকাশভবনের সামনে আন্দোলনকারী এবং পুলিশের মধ্যে ধস্তাধস্তির ঘটনায় শুক্রবার বিধাননগর উত্তর থানায় মামলা দায়ের হয়। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার নির্দিষ্ট ধারায় মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। এর পরেই ১৭ জন শিক্ষককে নোটিস পাঠিয়েছে পুলিশ। তাতে তারা জানিয়েছে, ওই শিক্ষকেরা সরকারি সম্পত্তি নষ্ট, ভাঙচুর, সরকারি কর্মীদের কাজে বাধাদান করেছেন বলে তদন্তে জানা গিয়েছে। তাই তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন বলে জানানো হয়েছে নোটিসে। ২১ মে, আগামী বুধবার সকাল ১১টায় থানায় হাজির হতে হবে ওই শিক্ষকদের। উপস্থিত না হলে বিএনএসের ৩৫(৬) ধারায় তাঁদের গ্রেফতার করা হতে পারে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।