ঋতু বদলে পোকার আক্রমণ, চাষে ক্ষতি দক্ষিণবঙ্গে

ঋতু বদলানোর সঙ্গে সঙ্গে আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় সঙ্কট তৈরি হয়েছে চাষে। বৈশাখ আসতে না আসতেই কালবৈশাখীর দাপটে দক্ষিণবঙ্গে চাষের জমিতে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। রবিবার বিকেলে আচমকা ঝড় ও সেই সঙ্গে শিলাবৃষ্টিতে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। শিলাবৃষ্টির জেরে আমের পাশাপাশি ক্ষতি হয়েছে বোরো চাষেও। নষ্ট হয়েছে মাচার সব্জিও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:৩৫
Share:

ঋতু বদলানোর সঙ্গে সঙ্গে আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় সঙ্কট তৈরি হয়েছে চাষে। বৈশাখ আসতে না আসতেই কালবৈশাখীর দাপটে দক্ষিণবঙ্গে চাষের জমিতে বিরূপ প্রভাব পড়েছে।

Advertisement

রবিবার বিকেলে আচমকা ঝড় ও সেই সঙ্গে শিলাবৃষ্টিতে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। শিলাবৃষ্টির জেরে আমের পাশাপাশি ক্ষতি হয়েছে বোরো চাষেও। নষ্ট হয়েছে মাচার সব্জিও। এ দিকে গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো আর এক বিপত্তি পোকার আক্রমণ। বৃষ্টি থামার পরে চড়া রোদের সঙ্গে আর্দ্রতা বাড়লেই শুরু হচ্ছে রোগ পোকার আক্রমণ। এর ফলে চাষে আরও বিপর্যয় আসতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন কৃষি বিজ্ঞানীরা। নদিয়ার বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, ঝড়-বৃষ্টি এখন চলতেই থাকবে। কালবৈশাখীর হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় না থাকলেও তার পরবর্তী পদক্ষেপ করার জন্য কৃষকদের নিয়মিত আবহাওয়ার পূর্বাভাস সম্বন্ধে খেয়াল রাখতে বলা হয়েছে।

নদিয়া, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগণা-সহ দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে চাষিরা বিশ্ববিদ্যালয়ে কৃষি বিজ্ঞানীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে উচ্ছে, শসা, ভেন্ডি, বেগুন, পটল, লাউ, কুমড়োতে শোষক ও ল্যাদা পোকার আক্রমণের কথা ইতিমধ্যেই বলছেন। বহু জায়গায় গোড়া পচা রোগও দেখা দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি বিজ্ঞানী কৌশিক ব্রহ্মচারী বলেন, ‘‘এই আবহাওয়ায় সবথেকে ক্ষতির আশঙ্কা সব্জিতে। প্রথম বৃষ্টিতে তেমন কিছু না হলেও বার বার ঝড়-বৃষ্টিতে মাচার সব্জি যেমন নষ্ট হবে তেমনি চাষিদের প্রথমেই খেয়াল রাখতে হবে মাটিতে গাছের গোড়ায় যাতে জল না জমে। অন্য কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার আগে জল বের করে দেওয়ার ব্যবস্থাও করতে হবে।’’

Advertisement

নানা এলাকার চাষিরা এ প্রসঙ্গে জানাচ্ছেন, আর্দ্রতা আর রোদে বাদামি শোষক পোকার আক্রমণও শুরু হচ্ছে। বাদামি শোষক পোকা ধানের শিষ ওঠার জায়গা অর্থাৎ মাঝকাঠি নষ্ট করে দেয়। তবে পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি, সাত মাইল, এগরার কিছু জমিতে ঝোড়ো হাওয়ায় ধান গাছ ঝঁুকে মাটিতে শুয়ে পড়েছে। আমের বোঁটা কালো হয়ে ছোট আম ঝরে পড়ার কথাও জানিয়েছেন উত্তর ২৪পরগনার আমচাষিরা।

কৃষি বিজ্ঞানী অমিত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মাকড়ের উপদ্রবেই আম ও ধানের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। অনেক চাষি অবশ্য এখন থেকেই জৈব কীটনাশক ব্যবহার শুরু করেছেন। যাঁরা করেননি তাঁরা আগাম প্রস্তুতি নিন। কারণ, ঝড়-বৃষ্টি আর গরম পাল্লা দিয়ে চলতে থাকলে সব রকম চাষেই প্রভাব পড়বে। অন্তর্বাহী কীটনাশক হু হু করে ক্ষতি বাড়াবে।’’ তাই প্রাথমিক অবস্থায় কীটনাশক হিসাবে নিমের তেল ব্যবহারেরও পরামর্শ দিয়েছেন কৃষি বিজ্ঞানীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন