মঙ্গলকোটে অনুব্রত। পিছনে মহিলা রক্ষীরা। ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়
জ়েড ক্যাটিগরির নিরাপত্তা তিনি পানই। এ বার অনুব্রত মণ্ডলের নিরাপত্তা বলয়ে শামিল মহিলাও!
তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি ওরফে অনুব্রতের নিরাপত্তায় যুক্ত হয়েছেন চার সশস্ত্র মহিলা নিরাপত্তারক্ষী। রবিবার পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটে অনুব্রতর সভামঞ্চে ওই মহিলা রক্ষীদের দেখাও গিয়েছে। বীরভূমের এক তৃণমূল নেতা মজা করে বলছেন, ‘‘দাদা কোথাও গেলে এমনিতেই মহিলারা তাঁকে বরণ করেন। এ বার মহিলারা তাঁকে নিরাপত্তাও দেবেন।’’
অনুব্রত নিজে অবশ্য বলেছেন, ‘‘এ ব্যাপারে যা বলার জেলার পুলিশ সুপার বলবেন।’’ বীরভূমের পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ বলেন, ‘‘যিনি নিরাপত্তা পাচ্ছেন, তাঁকে কী ভাবে নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে, তা সংবাদমাধ্যমকে বলা যায় না।’’
রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরের পরামর্শ মেনে ২০১৩ সালের গোড়ায় রাজ্যে যে ক’জন তৃণমূল নেতাকে নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছিল, সেই তালিকায় ছিলেন অনুব্রতও। বর্তমানে তিনি জ়েড ক্যাটিগরি নিরাপত্তা পান। তাঁকে সর্বক্ষণ ঘিরে থাকেন সশস্ত্র ছ’জন দেহরক্ষী। সেই তালিকায় এ বার চার সশস্ত্র মহিলা রক্ষী যুক্ত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: কেশিয়াড়িতে আজ সভা মুখ্যমন্ত্রীর
কেন এমন ব্যবস্থা?
জেলা পুলিশ এবং তৃণমূলের শীর্ষ নেতাদের একাংশের মতে, গোয়েন্দা দফতরের রিপোর্ট অনুযায়ী, অনুব্রত মণ্ডলের উপরে হামলা হতে পারে—এমন আশঙ্কা পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে থেকেই ছিল। লোকসভা নির্বাচনের আগে জেলার প্রতিটি ব্লকে সভা করছেন অনুব্রত। ওই সব সভায় নিয়মিত অভিযোগ করছেন ঝাড়খণ্ড থেকে মাওবাদী নিয়ে এসে বিজেপি জেলায় ঝামেলা পাকাচ্ছে। সম্প্রতি জঙ্গলমহলে মাওবাদীদের প্রভাব নতুন করে লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বীরভূমের ৯টি ব্লক মাওবাদী প্রভাবিত বলে চিহ্নিত। ৭টি ব্লক ঝাড়খণ্ড সীমানা লাগোয়া। বেশ কয়েক বার বিজেপির এক নেত্রীর সঙ্গে অনুব্রতের দ্বৈরথ জেলার রাজনৈতিক তাপ বাড়িয়েছে। কোথাও গেলে সুযোগ বুঝে অনুব্রতকে ঘিরে হেনস্থা করতে পারেন বিরোধী দলের মহিলা কর্মী-সমর্থকেরা—এমন আশঙ্কাও করছে শাসকদল।
সব মিলিয়ে ‘পরিস্থিতি’ বুঝেই স্বরাষ্ট্র দফতর মহিলা নিরাপত্তারক্ষী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জেলা পুলিশ সূত্রের খবর। জেলা বিজেপির সভাপতি রামকৃষ্ণ রায়ের কটাক্ষ, ‘‘অনুব্রত এত ‘ভাল’ কাজ করেছেন যে, দলের মহিলাদের হাতেই আক্রান্ত হতে পারেন। সে জন্যই হয়তো তড়িঘড়ি মহিলা রক্ষী দেওয়া হয়েছে।’’