প্রতীকী ছবি।
উত্তর ২৪ পরগনার গ্রামীণ এলাকায় গত দু’মাস ধরে জ্বরের প্রকোপ কমার কোনও লক্ষণ নেই। একের পর এক মৃত্যু ঘটেই চলেছে। বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবারের হিসেব অনুযায়ী, হাবরা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ডেঙ্গি-আক্রান্ত ২ দু’জন ব্যক্তি মারা গিয়েছেন।
গত দেড় মাসে মৃত্যুর সংখ্যাটা অন্তত জনা পঞ্চাশ। কিন্তু অভিযোগ, ডেঙ্গির লক্ষণ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলেও মৃত্যুর পরে অনেক ক্ষেত্রে ‘ডেঙ্গি’ লেখা হচ্ছে না। ‘হৃদযন্ত্র বিকল’ এমনকী, ‘সেপ্টিসেমিয়া’ও মৃত্যুর কারণ হিসাবে নথিভুক্ত করা হচ্ছে স্বাস্থ্য দফতরের খতিয়ানে।
‘আতঙ্কিত হবেন না’ বলে আশ্বাস বাণী শোনা যাচ্ছে স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের গলায়। জানাচ্ছেন, চিকিৎসায় গাফিলতি নেই কোথাও। স্বাস্থ্যশিবির, ডেঙ্গি সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে প্রচার চলছে বলেও তাঁদের দাবি। ব্লিচিং, মশা মারার তেলও ছড়ানো হচ্ছে।
দেগঙ্গা, বাদুড়িয়া, হাবরার মতো এলাকার মানুষজন অবশ্য চোখে যা দেখছেন, তা হল, কোনও এলাকায় মৃত্যু ঘটলে তড়িঘড়ি কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তা নেহাতই দু’চার দিনের মতো। দেড়-দু’মাস ধরে জ্বরের প্রকোপ বেড়ে চললেও যে তৎপরতা দেখানোর দরকার ছিল স্বাস্থ্য দফতর বা প্রশাসনের, তার ছিটেফোঁটাই কেবল চোখে পড়ছে।
বৃহস্পতিবার দেগঙ্গার বিভিন্ন এলাকা ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখেন জেলাশাসক অন্তরা আচার্য। জেলাশাসক বলেন, ‘‘বেসরকারি প্যাথলজি ল্যাবরেটরি থেকে যে ভাবে ডেঙ্গির কথা রক্তের রিপোর্টে লেখা হচ্ছে, তাতে আতঙ্ক আরও বেশি ছড়িয়েছে।’’ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রাঘবেশ মজুমদার বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘কিছু স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসক নেই। অন্য স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে চিকিৎসক এনে পরিস্থিতি সামাল দিতে হচ্ছে।’’
কিন্তু সব হাসপাতালে ডেঙ্গির পরীক্ষার ব্যবস্থা না থাকাতেই তো বাইরে থেকে গাঁটের কড়ি খরচ করে পরীক্ষা করাতে বাধ্য হচ্ছেন রোগীরা। সেই সমস্যা কতটা সামলানো যাবে, তা নিয়ে স্পষ্ট উত্তর নেই স্বাস্থ্যকর্তাদের কাছে।