কুলিক পাখিরালয়ে গাছের ডালে পাখির ঝাঁক। —ফাইল ছবি
এক মাস ধরেই পাখি গণনা শুরু হয়েছে কুলিকে। আজ, শনিবার এবং রবিবার হতে চলেছে তার চূড়ান্ত গণনা পর্ব। বন দফতরের রায়গঞ্জ ডিভিশনের তরফে তা জানানো হয়েছে। তাদের আশা, গত বছর ৯৭ হাজারের মতো পরিযায়ী এসেছিল কুলিকে। এ বার সেই সংখ্যা বাড়বে বলেই তাঁরা আশাবাদী।
কুলিকের হিজল, জারুল, অর্জুন, মেহগনির বনাঞ্চলে আস্তানা পরিযায়ীদের। সাধারণত জুনের শেষ থেকে শুরু করে জুলাইয়ে চলে আসে ওপেন বিল স্টক বা শামুক খোল, পানকৌড়ি, ইগ্রেট, নাইট হেরনের দল। হিজল, অর্জুন গাছের মাথায় মাথায় পরিযায়ীতে ভরে যায়। বাসা বেঁধে ডিম পাড়ে পরিযায়ীর দল। যার টানে পাখিপ্রেমীরা ভিড় করেন। এ বছর মে মাসের শেষ থেকে শুরু করে জুনের মধ্যেই চলে এসেছে অতিথিরা। ছানাগুলি বড় হয়ে উড়তে শিখলেই ডিসেম্বর নাগাদ তারা দলবল নিয়ে ফিরে যাবে।
তবে মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছায় কুলিককে সাজিয়ে তুলতে সংস্কার কাজ শুরু হয়েছিল গত বছর ডিসেম্বর থেকেই। তাই কুলিকে সাধারণের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করা হয়। পুরো পাখিরালয়টিকে পাঁচিল দিয়ে ঘেরা হয়েছে। তাতে পাখির দল আগের চেয়ে সুরক্ষিত এবং নিরাপদ থাকবে বলেই মনে করছেন বনকর্তারা। কারণ, পাঁচিল না থাকায় এতদিন আশেপাশের গ্রাম থেকে বনাঞ্চলে অবাধে লোকজন ঢুকত। এখন তা বন্ধ হয়েছে।
বন দফতরের রায়গঞ্জ ডিভিশনের বনাধিকারিক দ্বিপর্ণ দত্ত বলেন, ‘‘গত এক মাস ধরেই পাখি গণনা চলছে। নিয়মমাফিক প্রক্রিয়া মেনে গণনার কাজ হচ্ছে। যে সব তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে, সেগুলি একত্রিত করা হচ্ছে। সেই হিসাব ঠিক কিনা, তা যাচাই করতে শনিবার এবং রবিবার গণনার চূড়ান্ত পর্বের কাজ করা হবে। পরিবেশপ্রেমী বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সাহায্যও নেওয়া হচ্ছে।’’
বন দফতর সূত্রে খবর, সাতটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সাহায্য নেওয়া হচ্ছে গণনার কাজে। বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে গাছগুলিকে নম্বর দিয়ে সেগুলিতে কতগুলি করে পাখির বাসা রয়েছে, তা দেখা হবে। নিয়ম মাফিক সেই মতো পাখির সংখ্যা গণনা করা হবে। তবে বন দফতরের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বছর ঝড়বৃষ্টিতে জেলাতে বড় কোনও বিপর্যয় ঘটেনি। সেই হিসাবে কুলিক পক্ষি নিবাসে পাখিদের ক্ষয়ক্ষতি কমই হয়েছে। তবে গাছ থেকে পড়ে মাঝে মধ্যেই পাখির ছানার মৃত্যু ঘটছে।
সংস্কারের পরে পুজোর আগেই নতুন রূপে সাজিয়ে কুলিক পক্ষিনিবাস সাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে বলে ঠিক করেছিলেন কর্তৃপক্ষ। তবে উৎসাহীরা প্রতিদিনই দেখতে এসে ঘুরে যাচ্ছেন দেখে অগস্টের মাঝামাঝি থেকেই উৎসাহীদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে।