বঞ্চনার বিহিত চাইতে অশোক-অমিত একসুর

সভায় থাকলেও বিতর্কে অংশ নেননি বিজেপির বিধায়ক ও রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তবে পরে বাইরে তাঁর পাল্টা সওয়াল, ‘‘যারা এখন এত কথা বলছে, তারা রাজ্যকে ৩২% রাজস্বের ভাগ দিত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৮ ০৫:৩০
Share:

অর্থ কমিশনের মতো সাংবিধানিক সংস্থার উপরেও কেন্দ্রীয় সরকার খবরদারি করছে বলে বিধানসভায় সরব হল বিরোধীরা। তাদের বেঁধে দেওয়া সুরেই সামিল হলেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী। বিজেপিকে বাদ দিয়ে রাজ্যের শাসক ও বিরোধী পক্ষ মিলে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হল, রাজ্যের ন্যায্য পাওনা আদায়ের জন্য প্রয়োজনে একজোট হয়ে কেন্দ্রের কাছে দরবার করা হবে। আর সভার মধ্যে একঘরে হয়ে গিয়ে বিজেপি বাইরে ‘পরামর্শ’ দিল, মেলা-খেলা-ফূর্তিতে রাজ্য সরকার খরচ কমালেই তাদের আর কেন্দ্রের কাছে টাকার ভাগ নিয়ে মাথা ঘামাতে হবে না।

Advertisement

বিধানসভায় মঙ্গলবার ‘রাজ্যের প্রতি বরাদ্দের ক্ষেত্রে কেন্দ্রের বঞ্চনা’ বিষয়ে সরকারি প্রস্তাব এসেছিল। বিরোধী সিপিএম যে খসড়া প্রস্তাব দিয়েছিল, নীতিগত ভাবে তার সঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রী সম্মত হয়েছেন বলে এ দিন সভায় জানিয়েছেন পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কেন্দ্রের কাছ থেকে রাজ্যের প্রাপ্য রাজস্বের ভাগ ৪২% থেকে বাড়িয়ে ৫০% করার বাম দাবিতেও সায় দিয়েছে শাসক পক্ষ। আর জবাবি ভাষণে পার্থবাবু আবেদন জানিয়েছেন, প্রাপ্য আদায়ের জন্য রাজ্যের স্বার্থে বাকি সব দলের বিধায়কদের সঙ্গে বিজেপির প্রতিনিধিরাও যেন গলা মেলান।

সভায় থাকলেও বিতর্কে অংশ নেননি বিজেপির বিধায়ক ও রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তবে পরে বাইরে তাঁর পাল্টা সওয়াল, ‘‘যারা এখন এত কথা বলছে, তারা রাজ্যকে ৩২% রাজস্বের ভাগ দিত। এখন বাড়িয়ে ৪২% করা হয়েছে। আর রাজ্য সরকার মেলা-খেলা, ফূর্তি-ফার্তায় খরচা কমালে ওই ৪২%-এই কাজ হয়ে যাবে!’’

Advertisement

সিপিএমের বিধায়ক এবং শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্য অভিযোগ করেন, পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের জন্য হিসেবের ভিত্তিবর্ষ বদল করে ২০১১ করায় রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশের মতো বিজেপি-শাসিত কিছু রাজ্যের ফায়দা হচ্ছে। এমন প্রশ্ন এ দেশে আগে কখনও উঠত না, বিজেপির জমানায় উঠছে। রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রও অশোকবাবুর অভিযোগকে সমর্থন করে বলেন, বাংলা, ওড়িশা, তামিলনাড়ু বা কেরলের মতো যে সব রাজ্য টাকা খরচ করতে পেরেছে, ভিত্তিবর্ষ বদলের ফলে তারাই অসুবিধায় পড়েছে। বাংলা, পঞ্জাব, দিল্লি, কেরল, অন্ধ্রপ্রদেশ ও পুদুচেরী মিলে রাষ্ট্রপতির কাছে দাবিপত্র পাঠানো হয়েছে বলেও তিনি জানান।

অশোকবাবু অবশ্য মনে করিয়ে দেন, ত্রয়োদশ অর্থ কমিশন বলেছিল কেন্দ্র যেমন তাদের রাজস্বের উৎস রাজ্যের সঙ্গে ভাগ করবে, তেমনই রাজ্যকেও একই ভাবে সাহায্য করতে হবে পুরসভা ও পঞ্চায়েতের মতো স্থানীয় শাসনের সংস্থাকে। অথচ শিলিগুড়ি পুরসভা রাজ্যের কাছ থেকে ন্যায্য পাওনা পাচ্ছে না। তাঁর কথায়, ‘‘রাজ্যের স্বার্থে যেমন আপনাদের সঙ্গে সরব হচ্ছি, একই কায়দায় পুরসভার জন্য আপনাদের কাছে দাবি আদায় করতে চাই।’’ স্থানীয় সংস্থাকে রাজস্বের ভাগ দেওয়া যে রাজ্যের দায়িত্ব, সে কথা বলেছেন কংগ্রেসের সুখবিলাস বর্মাও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন