Firhad Hakim

অধীরকে বিজেপি-যোগ টেনে নিশানা ফিরহাদের

ফিরহাদের অভিযোগ, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তৃণমূলকে ‘পিছন থেকে ছুরি মারা’র চেষ্টা করেছিলেন। সেই অঙ্কেই বিজেপিকে আসন পাইয়ে দেওয়া হয়।

Advertisement

সামসুদ্দিন বিশ্বাস

বহরমপুর শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০২২ ০৬:৩৫
Share:

ফিরহাদ হাকিমের আক্রমণ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ও সাংসদ অধীর চৌধুরীকে। ফাইল চিত্র।

মুর্শিদাবাদে এসে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ও সাংসদ অধীর চৌধুরীকে কার্যত ‘বিজেপির দালাল’ বলে আক্রমণ করলেন রাজ্যের মন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা ফিরহাদ হাকিম। অধীরের নাম না করে তাঁকে ‘মিরজাফর’ আখ্যাও দিয়েছেন মন্ত্রী। ফিরহাদের অভিযোগ, কয়েক দিন আগে বহরমপুরে অধীরের জনসভায় বিজেপি কিছু লোক পাঠিয়েছিল। কারণ, বিধানসভা ভোটে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বিজেপিকে দু’টি আসন জিততে সাহায্য করেছিলেন! কংগ্রেস অবশ্য পাল্টা বলেছে, তাদের পিছন থেকে ছুরি মেরেছে তৃণমূল, নতুন ‘মিরজাফর’ তৃণমূল নেত্রীই!

Advertisement

মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেসের ডাকে বহরমপুরে সমাবেশ ছিল গত ৩ নভেম্বর। রাজ্যে এআইসিসি-র পর্যবেক্ষক এ চেল্লা কুমার থেকে শুরু করে সাংসদ আবু হাসেম (ডালু) খান চৌধুরী, একাধিক প্রাক্তন বিধায়ক ও জেলা সভাপতি উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশে ভিড় হয়েছিল ভালই। জেলায় তৃণমূল আবার তার পাল্টা সভার ডাক দিয়েছিল।

বহরমপুর ও নবগ্রামে রবিবারের সভা থেকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীরকেই নিশানা করেন ফিরহাদ। তিনি বলেন, ‘‘সেই দিন যে সভাটা (কংগ্রেসের) হয়েছে, সেখানে দেখা গেল কতগুলো গাড়ি এসেছিল যাতে বিজেপির ঝান্ডা লাগিয়ে। সেই গাড়িগুলি ব্রিজের ধারে রাখা ছিল। সেই মানুষগুলো এসে সেই মানুষটাকে বলল, তুমি পাল্টি খেয়েছে, খেয়ে আমাদের দু’টি আসন দিয়েছো! তাই তোমার অন্তত মনোরঞ্জনের জন্য দু’-চারশো লোক আমরা পাঠিয়ে দিলাম! বিজেপি সে দিন কৃতজ্ঞতা স্বীকারের জন্য লোক পাঠিয়েছিল।’’ পরে আবারও ফিরহাদ বলেছেন, ‘‘বিজেপি ভুল করে নিজেদের ঝান্ডা লাগিয়ে লোক পাঠিয়েছিল অধীরবাবুর সভায়।’’

Advertisement

গত বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস ও বামেদের জোট ছিল। কিন্তু মুর্শিদাবাদ-সহ গোটা রাজ্যেই তারা কোনও আসন পায়নি। এই জেলায় দু’টি আসনে জিতেছিল বিজেপি। কংগ্রেস ও সিপিএমের জোটকে ‘এক ল্যাংড়া অন্য ল্যাংড়াকে জড়িয়ে ধরে খেলছে’ বলে কটাক্ষ করেছেন ফিরহাদ। তাঁর অভিযোগ, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তৃণমূলকে ‘পিছন থেকে ছুরি মারা’র চেষ্টা করেছিলেন। সেই অঙ্কেই বিজেপিকে আসন পাইয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু মুর্শিদাবাদের মানুষ তৃণমূলকে জেলার ২০টি আসনে জিতিয়ে সেই চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়েছেন।

এই সূত্রে ধরেই এ দিন ফিরহাদের মন্তব্য, ‘‘এখন উন্নয়ন দেখছে মুর্শিদাবাদ। এই মুর্শিদাবাদ মুর্শিদকুলি খাঁর মুর্শিদাবাদ। যে মুর্শিদাবাদ ভারতবর্ষে মিরজাফরকে পাল্টি করতে দেখেছে। এখন এই নতুন মিরজাফর যে এসেছে, পিছন দিক দিয়ে ছুরি মারছে, সেটাও এই মুর্শিদাবাদ দেখেছে! তাই সাবধানে থাকুন!’’

বহরমপুরের প্রাক্তন বিধায়ক প্রদেশ কংগ্রেস নেতা মনোজ চক্রবর্তী পাল্টা বলেন, ‘‘গত বৃহস্পতিবার বহরমপুরে আমাদের সভায় লোকের ভিড় দেখে ভয় পেয়ে, ওরা খেই হারিয়ে ফেলেছে। যার ফলে আবোলতাবোল বকছে!’’ মনোজের আরও মন্তব্য, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেসের হাত ধরে ক্ষমতায় এসেছিলেন। এখন তিনি কংগ্রেসকে পিছন থেকে ছুরি মারছেন। ফলে, নতুন মিরজাফর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপির সব চেয়ে বড় দালাল তৃণমূলই!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন