হুগলির হরিপালে নয়ানজুলিতে বাস পড়ে মৃত পাঁচ জন

মঙ্গলবার, সপ্তমীর দিন সকাল ৯টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির হরিপালের ঝাউতলায় অহল্যাবাই রোডের উপর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হরিপাল শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৮ ০২:২৯
Share:

দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাসটি টেনে তোলা হচ্ছে। মঙ্গলবার। ছবি: দীপঙ্কর দে

তীব্র গতিতে যাওয়া বাসটি আচমকা গড়াতে গড়াতে রাস্তা থেকে ৩০ ফুট নীচে পড়ছিল। বাসের ভিতর থেকে ভেসে আসা আর্ত চিৎকার শুনে ছুটে আসেন এলাকার লোকজন। জলের মধ্যে থেকে যখন উদ্ধার করা হচ্ছে যাত্রীদের, তখনই চার জন মারা গিয়েছেন। পরে হাসপাতালে এক জনের মৃত্যু হয়। মৃত পাঁচ জনের মধ্যে তিন জন মহিলা। আহত ২২ জন। পুলিশের অনুমান, ওভারটেক করতে গিয়ে খানাখন্দে পড়ে স্টিয়ারিংয়ের ‘নাট’ কেটে যাওয়াতেই এই বিপত্তি।

Advertisement

মঙ্গলবার, সপ্তমীর দিন সকাল ৯টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির হরিপালের ঝাউতলায় অহল্যাবাই রোডের উপর। আরামবাগ থেকে হাওড়াগামী যাত্রিবাহী বাসটি নয়ানজুলিতে উল্টে পড়ে। আহতদের মধ্যে কয়েক জনের আঘাত গুরুতর। হতাহতদের অধিকাংশই আরামবাগ মহকুমার বিভিন্ন জায়গার বাসিন্দা।

মৃতেরা হলেন খানাকুল গণেশবাজারের সোনারানি পাল (৭০) ও মৌমিতা ঘোষ (২৯), হরিপালের দ্বারহাট্টার উত্তম সাহা (৫৬), ডানকুনির বাসিন্দা সুনীতি দত্ত (২৬)‌ এবং বাসটির খালাসি পিন্টু মণ্ডল (৩৮)। তাঁর বাড়ি আরামবাগের আরান্ডি ১ অঞ্চলে।

Advertisement

দেখুন ভিডিয়ো:

জানা গিয়েছে, বেসরকারি বাসটি আরামবাগের গড়ের খাট থেকে হাওড়া যাচ্ছিল। ঝাউতলা এলাকায় ডাকাতিয়া খালের উপর একটি সেতু পেরোনোর পরেই সেটি রাস্তার উপরে দু’টি পাল্টি খেয়ে ডান দিকে প্রায় ৩০ ফুট নীচে নয়ানজুলিতে গিয়ে পড়ে। বাসের সামনের দু’টি চাকা খুলে গিয়ে রাস্তার ধারের রেলিংয়ে আটকে ঝুলতে থাকে। স্থানীয় বাসিন্দারা নয়ানজুলিতে নেমে উদ্ধারকাজ শুরু করেন। আহতদের হরিপাল গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আঘাত গুরুতর থাকায় পরে কয়েক জনকে কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। কয়েক জনকে নিয়ে যাওয়া হয় আরামবাগ হাসপাতালে।

দেরি করে আসার অভিযোগে গ্রামবাসীরা পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। পরে ডুবুরি আসে। জেলা (গ্রামীণ) পুলিশ সুপার সুকেশ জৈন, ডিআইজি (ট্রাফিক) হুমায়ুন কবীর, মন্ত্রী অসীমা পাত্র, স্থানীয় বিধায়ক বেচারাম মান্না ঘটনাস্থলে আসেন। পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘কী করে দুর্ঘটনা ঘটল, তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরাও তদন্ত করছেন।’’

কাজী নিজাম নামে আহত এক যাত্রী বলেন, ‘‘বাসটি খুব জোরে চলছিল। আচমকা রাস্তার উপর পাল্টি খেয়ে নীচে পড়ে।’’ প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের একাংশের বক্তব্য, বালিবোঝাই একটি ট্রাককে ওভারটেক করার সময়ে রাস্তার খানাখন্দ এড়াতে গিয়ে বাসের স্টিয়ারিংয়ের ‘নাট’ কেটে যায়। ফলে প্রচণ্ড গতিতে থাকা বাসটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি চালক। বাসের চালক এবং কন্ডাক্টর পলাতক। স্থানীয় বাসিন্দা পলাশ মাঝি বলেন, ‘‘অহল্যাবাই রোডে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। কিন্তু যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণে এখানে পুলিশ-প্রশাসনের কোনও কড়াকড়ি নেই।’’ পুলিশ অবশ্য এই অভিযোগ মানেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন