—নিজস্ব চিত্র।
ত্রাণ নিয়ে উত্তরবঙ্গে ক্ষোভ চলছেই। মালদহের রতুয়ায় রবিবার বিডিও অফিসে যথেচ্ছ ভাঙচুর চালিয়ে গোডাউনের তালা ভেঙে ত্রাণ লুঠ করলেন বন্যা দুর্গতরা। তাঁদের হাতে হেনস্থা হতে হয় মহকুমাশাসক ও যুগ্ম বিডিওকে। প্রশাসনের কর্তাদের বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হয় পুলিশও।
গণ্ডগোল হয়েছে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরেও। রেল পুলিশ সূত্রে জানা যায়, এ দিন ভালুকা রোড স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকার সময় কাটিহারগামী একটি মালগাড়িতে জোর করে উঠে পড়েন কয়েক জন যাত্রী। মালগাড়ি ছাড়ার পর তাঁরা মিলনগড় স্টেশনে ট্রেন দাঁড় করাতে জোরাজুরি করেন। গার্ড রাজি হননি। হরিশ্চন্দ্রপুর স্টেশনে ট্রেন থামতেই প্রথমে গার্ডকে মারধর শুরু করেন ওই যাত্রীরা। চালক ছুটে আসলে তাঁকেও মারধর করা হয়। ত্রাণের দাবিতে মালদহের চাঁচল থেকে রতুয়াগামী রাজ্য সড়ক অবরোধ করেও বিক্ষোভ দেখিয়েছেন বানভাসিদের একাংশ। রবিবার বিকেলে রতুয়ার ভাদো বালিয়া বিনোদপুর এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। ঘণ্টাখানেক ধরে অবরোধ চলার পর পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ উঠে যায়। সিপিএমের দাবি, সরকারি অব্যবস্থা ও ত্রাণ নিয়ে দলবাজিতে মানুষ ক্ষুব্ধ। তাতেই আইনশৃঙ্খলা অবনতির আশঙ্কা দেখা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: নেপালি পড়শিদের ভরসায় কাটছে দিন
এরই মধ্যে বন্যা পরিস্থিতি দেখতে আজ সোমবার মালদহ পৌঁছেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার বিকেলে তিনি কলকাতা থেকে রওনা হন। উঠেছেন মালদহের গৌড়ভবনে। আজ সকালে প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। দক্ষিণ দিনাজপুর-উত্তর দিনাজপুরেও মুখ্যমন্ত্রীর যাওয়ার কথা। প্রশাসনের দাবি, মূলত ত্রাণের কাজে গতি আনতেই এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
আক্রান্ত: হাসপাতালে ভর্তি রতুয়ার যুগ্ম বিডিও। —নিজস্ব চিত্র।
মালদহে ফুলহারের জল কমতে থাকলেও বাড়ছে গঙ্গা ও মহানন্দার জল। রেল চলাচল এ দিনও বিপর্যস্ত ছিল। আটকে পড়া যাত্রীদের জন্য আজ হাওড়া থেকে বেঙ্গালুরু বিশেষ ট্রেন চালাচ্ছে দক্ষিণ-পূর্ব রেল। ৮১ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশাপাশি চাঁচল থেকে মালদহ যাওয়ার সব ক’টি রাস্তা দিয়ে বন্যার জল বইতে থাকায় সেগুলিতে যাতায়াত বন্ধ। শুধু রতুয়া হয়েই যাতায়াত চলছে। এ দিন সকালে রতুয়ার মহারাজপুরে সম্বলপুর সার্কিট বাঁধ ভেঙে মহানন্দার জল ঢুকে প্লাবিত হয়েছে তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা। কালিন্দ্রী নদীর জল ঢুকে প্লাবিত হয়েছে মানিকচকের গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন এলাকা।
পুরাতন মালদহের নলডুবিতে বেহুলা নদীর জলে ভেসেছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কও।
জল থেকে বাঁচতে গাছের উপর বাঁশের মাচা করে আশ্রয় নিয়ে আছেন জলবন্দি দক্ষিণ দিনাজপুরের হরিরামপুর ব্লকের গোকর্ণ এলাকার একাধিক গ্রামের মানুষ।