—ফাইল চিত্র।
শনিবার ব্রিগেড মঞ্চে ছিলেন বিনয় তামাং। তার আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তিনি আট দফা দাবির একটি তালিকা দিয়েছেন। সেখানে আলাদা গোর্খাল্যান্ডের কথা বলা নেই। বরং জিটিএ-র সাংবিধানিক স্বীকৃতির কথা বলা হয়েছে। একই সঙ্গে পাহাড় ও ডুয়ার্সের চা শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি পাকা করা, চা বাগান ও সিঙ্কোনা প্ল্যান্টেশনের শ্রমিকদের জমির অধিকার দেওয়ার মতো দাবি তো আছে, একই সঙ্গে দার্জিলিংয়ের সর্বাঙ্গীণ উন্নয়নের জন্য কেন্দ্রের কাছে বছরে ৪০০ কোটি টাকার প্যাকেজও চেয়েছেন বিনয়। পাশাপাশি পাহাড়ের ১১টি জনগোষ্ঠীকে আদিবাসী স্বীকৃতি দেওয়ার দাবিও তুলেছেন।
গত ছ’মাস ধরে বিনয় বারবারই জানিয়েছেন, তিনি এবং তাঁর দল আর এনডিএ-র সঙ্গে নেই। বরং বিভিন্ন সময়ে তৃণমূল সরকার যে তাঁদের সাহায্যে হাত বাড়িয়ে দিয়েছে, তার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন তিনি। এ বারে তাই মোর্চার প্রতিনিধি হিসেবে তিনি ও অনীত থাপা হাজির ছিলেন ব্রিগেডের মঞ্চে। যে দাবিপত্র তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে দিয়েছেন, তাতেও বহু ক্ষেত্রে রাজ্যের সহযোগিতার কথা বলা হয়েছে।
দাবিপত্রে বিনয় গোর্খাদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা এবং রাজনৈতিক সুরক্ষা সুনিশ্চিত করাকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। নেপালিভাষী ভারতীয়দের ভাষাগত সংখ্যালঘু হিসেবে মান্যতা দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে ওই দাবিপত্রে। ১১টি জনগোষ্ঠীকে আদিবাসী স্বীকৃতি দেওয়ার দাবিতে বলা হয়েছে, এর মধ্যে দু’বার প্রস্তাবটি কেন্দ্রকে পাঠিয়েছে রাজ্য। কিন্তু কেন্দ্র এখনও তা ঝুলিয়ে রেখেছে। একই সঙ্গে জিটিএ-কে উত্তর-পূর্বের উন্নয়নমূলক সংগঠন ডোনার-এ অন্তর্ভুক্ত করা এবং জিটিএ চুক্তি অনুসারে কালিম্পং জেলার অন্তর্ভুক্ত ডিআই ফান্ডের জমি জিটিএ-কে হস্তান্তর করার দাবিও জানান বিনয়।
অনেকেই বলছেন, লোকসভা ভোটের আগে পাহাড়ে নিজের প্রভাব বাড়াতে সব মহলের দাবিকেই ওই দাবিপত্রে জায়গা দিয়েছেন বিনয়। তিনি বলেছেন, ‘‘পাহাড়বাসীর দাবি তুলে ধরেছি। মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি বিগ্রেড সমাবেশে উপস্থিত তৃতীয় ফ্রন্টের মুখ্য আহ্বায়কের কাছেও দাবিপত্র পাঠিয়েছি। তৃতীয় ফ্রন্টের সঙ্গে আমরা আছি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, ফ্রন্ট ক্ষমতায় এলে আমাদের প্রতিটি দাবি মেটান হবে।’’
পাহাড়ের লোকজনের ধারণা, এ বারের সফরে বিষয়গুলি মুখ্যমন্ত্রীও তুলবেন। জিএনএলএফ এবং গোর্খা লিগের মতো দল মনে করছে, আর্থিক প্যাকেজ দিয়ে পাহাড়ের সমস্যা পুরোপুরি মেটান সম্ভব নয়। তাঁদের বক্তব্য, এই সমস্যা রাজনৈতিক ভাবেই মেটাতে হবে। পাহাড় সফরে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে পৃথক বৈঠক করতে পারেন বলে জানিয়েছে দুই দলই।