বন চেনাবে বন ‘সাথী’

ভারতের শেষ ভূখণ্ড কলস, বন দফতরের বিট অফিসের বারান্দায় দাঁড়ালেই সামুদ্রিক হাওয়ার ঝাপটা। বঙ্গোপসাগরের কোলে বাদাবনে ঢাকা এক ফালি সেই দ্বীপে, মিষ্টি জল আর দিন দশেকের রসদ নিয়ে ভেসে পড়েন যে বনকর্মী— এ বার তাঁর সঙ্গে আস্ত একটা হপ্তা কাটানোর সুযোগ এসে গিয়েছে।

Advertisement

রাহুল রায়

শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৭ ০৪:১৩
Share:

ভারতের শেষ ভূখণ্ড কলস, বন দফতরের বিট অফিসের বারান্দায় দাঁড়ালেই সামুদ্রিক হাওয়ার ঝাপটা।

Advertisement

বঙ্গোপসাগরের কোলে বাদাবনে ঢাকা এক ফালি সেই দ্বীপে, মিষ্টি জল আর দিন দশেকের রসদ নিয়ে ভেসে পড়েন যে বনকর্মী— এ বার তাঁর সঙ্গে আস্ত একটা হপ্তা কাটানোর সুযোগ এসে গিয়েছে।

বক্সা বাঘ-বনের আদমা বিটের কর্মীরা লোকালয়ে নেমে আসেন সপ্তাহান্তে, রবিবার সকালে। চাল, আলু, ছোট্ট শিশিতে হপ্তাভরের তেল আর রেঞ্জ অফিস থেকে খান কয়েক হাতি তাড়ানোর চকোলেট বোমা নিয়ে পাহাড় ভেঙে ফিরে যান ডিউটিতে।

Advertisement

সাবেক সভ্যতা থেকে অনেক দূরে, হাতি-চিতাবাঘ এবং ডাঁস মশার সঙ্গে সাত দিনের বুনো অভিজ্ঞতা চাইলে, থাকা যাবে সেখানেও। বন দফতরের নয়া প্রকল্প ‘বন্যপ্রাণ সাথী’ দরজাটা খুলছে এ মাসের মাঝামাঝি।

তবে, অরণ্যের দিনরাত্রির উল্লাস নয়, আদিম পরিবেশে বনকর্মীদের নিত্য লড়াইয়ের অভিজ্ঞতা ছুঁয়ে জল-জঙ্গল ভালবাসতে শিখিয়ে বন্যপ্রাণের মরমী বন্ধু তৈরি করাই লক্ষ্য। চিফ ওয়াইল্ড লাইফ ওয়ার্ডেন প্রদীপ ব্যাস ধরিয়ে দিচ্ছেন, ‘‘বনকর্মীরা প্রাণ মুঠোয় নিয়ে কী করে বন বাঁচাচ্ছেন, তাঁদের সঙ্গে দিন কয়েক থেকে সেই অভিজ্ঞতাটুকু কুড়িয়ে আনতে পারলে দেখবেন, বন্যপ্রাণ সম্পর্কে লোকের উৎসাহ বাড়ছে।’’

১৫ মার্চ থেকে ৬ এপ্রিল— বন দফতরের ওয়েবসাইটে এই বিজ্ঞাপন নিশ্চিত সাড়া ফেলবে, মনে করছেন প্রদীপবাবু। তবে, প্রাপ্তিযোগ বলতে ওই অভিজ্ঞতাটুকুই এবং তা পেতে হবে ট্যাঁকের কড়ি গুনে। নামের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ‘শ্রী’ কিংবা ‘সাথী’— রাজ্য সরকারের আর পাঁচটা প্রকল্পের সঙ্গেএর তফাত এখানেই।

বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আঠারো বছরের ঊর্ধ্বে যে কেউই ‘বন্যপ্রাণ সাথী’ হয়ে উঠতে পারেন। তবে তার আগে ডাক্তারি শংসাপত্র দেখিয়ে তাঁকে প্রমাণ দিতে হবে, শারীরিক ভাবে শুধু সুস্থ নয়, বনের ঝড়-ঝাপটা সামাল দেওয়ার মতো সক্ষমও তিনি। তার পরেই, নগদ পনেরো হাজার টাকায় মিলবে আদিম বনের অভিজ্ঞতা কুড়ানোর সুযোগ।

বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন বলছেন, ‘‘মনে রাখবেন, আয়ের মুখ দেখতেই এমন প্রকল্পের কথা ভাবা হয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement