সোমবার সন্ধ্যা থেকেই ওই এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছিল চিতাবাঘটি। —প্রতীকী ছবি।
চিতাবাঘের ভয়ে কাঁটা হয়ে ছিল হলদিবাড়ি থানার ভোজারিপাড়ার নয়ারহাটের বাসিন্দারা। অবশেষে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন তাঁরা। মঙ্গলবার দুপুরে ঘুমপাড়ানি গুলি ছুঁড়ে ধরা হয় সেই চিতাবাঘটিকে।
সোমবার সন্ধ্যা থেকেই ওই এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছিল চিতাবাঘটি। ওই দিনই বাঘের আক্রমণে এক ব্যক্তি ঘায়েল হন। বন দফতরের কর্মীরা চিতাবাঘটিকে ধরার জন্য খাঁচায় টোপ দিয়ে ফাঁদ পাতেন। তবে রাতে সেই ফাঁদে ধরা পড়েনি চিতাবাঘটি। বাঘটি যেখানে ছিল পর দিন সকালে অর্থাত্ মঙ্গলবার সেই জায়গাতেই কৌতুহলবশত উঁকিঝুঁকি মারছিলেন গ্রামেরই দুই বাসিন্দা ধীরেন্দ্রনাথ সেন এবং অতুল চন্দ্র রায়। তখনই হঠাত্ তাঁদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে চিতাবাঘটি। পরে ওই দুই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে হলদিবাড়ি হাসপাতালে নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসার পর দেওয়া হয়।
খবর পেয়ে পুলিশ এবং বন দফতরের কর্মীরা তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছন। বনকর্মীরা টোপের খাঁচার মধ্যে বন্দুক নিয়ে ঢোকেন। মাটি কাটার একটি জেসিবি মেশিনের সাহায্যে তাঁদের চিতাবাঘের আস্তানায় ঢোকানো হয়। সেখান থেকে তাঁরা ঘুমপাড়ানি গুলি ছোড়েন। তার পর জালের মধ্যে বাঘটাকে জড়িয়ে ফেলা হয়। বাঘের ভয়ে যখন সবাই দৌড়াদৌড়ি করছেন, ঠিক সেই সময় প্রফুল্ল সেন নামে এক ব্যক্তি জালে পড়া চিতাবাঘকে খুব কাছে দেখতে যান। তখনও বাঘটি পুরোপুরি ঝিমিয়ে পড়েনি। আচমকাই সেটি জালের ভিতর থেকে ওই ব্যক্তির উপর থাবা বসায়। তার বাঁ হাত ক্ষতবিক্ষত হয়। মুখের নীচেও হামলা করে বাঘটি। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে হলদিবাড়ি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কা নৌসেনার হামলা, আক্রান্ত সাড়ে তিন হাজার ভারতীয় মৎস্যজীবী
পুলিশ এবং বন দফতর সূত্রে জানা যায়, সোমবার একজন এবং মঙ্গলবার তিন জনকে চিতাবাঘটি ঘায়েল করে। তাঁদের মধ্যে এক জনের আঘাত গুরুতর। তাঁকে হলদিবাড়ি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। যদিও হলদিবাড়ি হাসপাতাল সূত্রে জানা যায় যে, মোট ন’জন চিতাবাঘের আক্রমণে ঘায়েল হয়ে হাসপাতালে আসে। এক জনকে ভর্তি করে বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়।
কোচবিহারের বনাধিকারিক বিমান বিশ্বাস বলেন, “চিতাবাঘটিকে ধরতে যৌথভাবে গরুমারার বন্যপ্রাণী বিভাগ, জলপাইগুড়ি এবং কোচবিহারের বন বিভাগের কর্মীরা অভিযান চালায়। ধৃত চিতাবাঘটিকে গরুমারা জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হবে।”