কিচিরমিচির ফেরাতে চারটি বিনোদন পার্কের গাছে হাঁড়ি

বন দফতরের এই শাখা সূত্রে খবর, চন্দ্রকোনা রোডের পরিমল কানন, মেদিনীপুর শহরের ক্ষুদিরাম পার্ক, বিদ্যাসাগর পার্ক ও পুলিশ লাইনের পার্কে প্রাথমিক ভাবে পাখির এই বাসা তৈরি হবে।

Advertisement

রূপশঙ্কর ভট্টাচার্য

চন্দ্রকোনা রোড শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৯ ০৩:১৭
Share:

চলছে তোড়জোড়। নিজস্ব চিত্র

হারিয়ে যাচ্ছে পাখি, হারাচ্ছে তাদের কলরব। পাখি সবের সেই রব ফেরাতেই উদ্যোগী হয়েছে বন দফতর। পাখিদের পুনর্বাসনে পার্কের গাছে গাছে বাসা বানিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রকল্পের নাম ‘কিচিরমিচির’। এতে পশ্চিম মেদিনীপুরের চারটি বিনোদন পার্কে পাখিদের জন্য গাছে হাঁড়ি বসিয়ে বাসা বানিয়ে দিচ্ছে বনদফতরের নগর ও বিনোদন শাখা।

Advertisement

বন দফতরের এই শাখা সূত্রে খবর, চন্দ্রকোনা রোডের পরিমল কানন, মেদিনীপুর শহরের ক্ষুদিরাম পার্ক, বিদ্যাসাগর পার্ক ও পুলিশ লাইনের পার্কে প্রাথমিক ভাবে পাখির এই বাসা তৈরি হবে। এতে সাফল্য এলে বনদফতরের অন্য পার্কেও রূপায়িত হবে ‘কিচিরমিচির’ প্রকল্প। প্রকল্পে যুক্ত করা হচ্ছে স্কুলের ছাত্রছাত্রীদেরও। মেদিনীপুর শহরের চারটি পার্কের জন্য চারটি স্কুল ও চন্দ্রকোনা রোডের পরিমল কাননের জন্য ছ’টি স্কুল— মোট ১০টি স্কুলকে বাছা হয়েছে। প্রতিটি স্কুলের ১০ জন করে মোট ১০০ জন ছাত্রছাত্রী বনদফতরের কর্মীদের সঙ্গে নজর রাখবে হাঁড়ির বাসায় পাখিদের আনাগোনা, তারা ডিম পাড়ছে কিনা, বাচ্চা হল কিনা ইত্যাদি।

ইদানীং বনজঙ্গলের সঙ্গে পার্কগুলিতেও সে ভাবে চোখে পড়ে না পাখি। গাছগাছালিতে পাখিদের বাসাও অমিল। তা পাখি ও পাখির বাসা ফিরিয়ে আনতেই বনদফতরের পার্কগুলিতে যে সব গাছ রয়েছে সেখানে মাটির হাঁড়ি টাঙিয়ে দেওয়া হবে। সেখানে যাতে পাখিদের আনাগোনা বাড়ে, তারা বাসা বাঁধতে পারে, বংশবিস্তারও করতে পারে সে জন্যই এই উদ্যোগ। বনদফতরের নগর ও বিনোদন শাখার এক আধিকারিক জানালেন, ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে পাখি নিয়ে আগ্রহ বেশি।

Advertisement

তাই প্রাথমিক থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের যুক্ত করা হচ্ছে এই প্রকল্পে। তারাই হাঁড়িতে নিজেদের নাম ও পাখি বিষয়ক দুটি স্লোগান লিখে সেই হাঁড়ি টাঙাবে গাছে গাছে। ছাত্রছাত্রীদের এ জন্য বিশেষ পরিচয়পত্র দেওয়া হবে। তা দেখিয়ে তারা যে কোনও সময় বিনামূল্যে পার্কে ঢুকে কাজ করতে পারবে। বন দফতরের কর্মীরাও হাঁড়িতে নজর রাখবেন বলে জানানো হয়েছে।

আগামী ২০ জুলাই জেলার ৪টি পার্কের গাছে গাছে একযোগে ১০০টি হাঁড়ি টাঙানো হবে। তার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। বনদফতরের মেদিনীপুর রেঞ্জের নগর ও বিনোদন শাখার আধিকারিক নিত্যানন্দ রায় কর্মকার বলেন, ‘‘আপাতত জেলার চারটি পার্কে কিচিরমিচির প্রকল্পে পাখিদের জন্য হাঁড়ির বাসা করে দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। এখন মোট ১০০টি হাঁড়ি টাঙানো হবে। ১০টি স্কুলের একশো ছাত্রছাত্রীকে এই কাজে যুক্ত করা হচ্ছে।’’

সব থেকে বেশি হাঁড়ি টাঙানো হবে চন্দ্রকোনা রোডের পরিমল কাননে। এই পার্কের বিট অফিসার তাপস কারক বলেন, ‘‘পরিমল কাননের বিভিন্ন গাছে ৬০টি হাঁড়ি টাঙানো হবে। ইতিমধ্যে মাটির হাঁড়ি নিয়ে আসা হয়েছে, গাছও নির্দিষ্ট করা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন