রেড পান্ডা
বনকর্তারা বলে থাকেন সিকিম, অরুণাচল প্রদেশ ছাড়া একমাত্র দার্জিলিং-কালিম্পংয়ের জঙ্গলে দেখা মেলে লুপ্তপ্রায় রেড পান্ডার। তবে তার সংখ্যা নিয়ে নানারকম মতভেদ রয়েছে। সেই সংশয় দূর করতেই এ বার প্রথম বিজ্ঞানসম্মত সুমারির কাজ শুরু হতে চলেছে। বন দফতর সূত্রের খবর, ১৩ মার্চ থেকে কালিম্পঙের নেওড়াভ্যালি জাতীয় উদ্যানে ওই কাজ শুরু হবে। ডাইরেক্ট সাইটিং, মল সংগ্রহ ছাড়াও রেডপান্ডার ডিএনএ পরীক্ষা করে তার সংখ্যা জানার চেষ্টা হবে। ১৭ মার্চ অবধি সুমারির কাজ চলবে।
২০১২ সালে এক দফায় সুমারির কাজ হয়েছিল। তারপরে দার্জিলিং পদ্মজা নাইডু হিমালয়ান জুলজিক্যাল পার্কের অফিসারদের একাংশের তত্ত্বাবধানে গত বছরও দার্জিলিঙে সিঙ্গালিলা জাতীয় উদ্যানে সমীক্ষা হয়। কিন্তু তা পুরোপুরি বিজ্ঞানসম্মত ছিল না বলে বন দফতরের অফিসারেরা মনে করছেন। তাই এ বার চোখে দেখে গোনা ছাড়াও গন্ডার বা বাঘ সুমারির মত মলসংগ্রহ ও ডিএনও পরীক্ষা করে জিনগত বৈচিত্র দেখে সুমারিতে জোর দেওয়া হয়েছে। বন দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘রেডপান্ডার সংখ্যা নিয়ে নানা বক্তব্য রয়েছে। বিজ্ঞানসম্মত সুমারি প্রয়োজন।’’
রাজ্য বন দফতরের বন্যপ্রাণ শাখার তরফে সুমারির কাজ করা হলেও তাতে সহযোগিতা করবে দার্জিলিং চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। সঙ্গে একাধিক স্বেচ্ছাসেবী এবং পশুপ্রেমী সংগঠনকে সুমারির কাজে নামানো হচ্ছে। ১৩ মার্চ লাভাতে প্রশিক্ষণের পর ১৪-১৭ মার্চ সুমারির কাজ চলবে। কম করে ২০টি দলে ভাগ হয়ে সদস্যরা নেওড়াভ্যালি জঙ্গলে ঘুরবেন। গোটা প্রক্রিয়াটি তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে রয়েছেন উত্তরবঙ্গের মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) উজ্জ্বল ঘোষ।
বন কর্তারা জানাচ্ছেন, ২০০২-তে এক দফায় সিঙ্গালিলা এবং লাগোয়া পাহাড়ি এলাকা জুড়ে রেডপান্ডার সমীক্ষা হয়েছিল। তাতে শুধুমাত্র খালি চোখে দেখার উপর ভিত্তি করে সুমারি হয়। মূলত দার্জিলিং চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ কাজ করেছিলেন। তখন ৭৮টির মত রেডপান্ডার দেখা মিলেছিল বলে পরে রিপোর্ট করা হয়। ২০১২ সালে সিঙ্গালিলায় ৩৮টি এবং নেওড়াভ্যালিতে ৩২টি রেডপান্ডার হদিশ মিলেছিল বলেও রিপোর্ট হয়। কিছু বনকর্তা মনে করেন, দেখার ভিত্তিতে গণনা করলে সংখ্যার গরমিল হতেও পারে। এ বার খালি চোখের একটি হিসাব রাখা হবে। সঙ্গে মল সংগ্রহ করে পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকবে। এ ছাড়া রেডপান্ডাগুলোকে ধরে রক্তের নমুনা নিয়ে ডিএনএ টেস্ট হবে। পরিবেশপ্রেমী সংগঠন ন্যাফের কো-অর্ডিনেটর অনিমেষ বসু বলেন, ‘‘লুপ্তপ্রায়দের সঠিক সংখ্যাটা জানা খুব জরুরি।