প্রাক্তন দমকলমন্ত্রী প্রতিম চট্টোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
অসুস্থ ছিলেন কয়েক বছর ধরেই। বিধাননগরের এক বেসরকারি হাসপাতালে রবিবার সকালে ৭৯ বছর বয়সে মৃত্যু হল প্রাক্তন মন্ত্রী এবং বামফ্রন্টের শরিক মার্ক্সবাদী ফরওয়ার্ড ব্লকের শীর্ষ নেতা প্রতিম চট্টোপাধ্যায়ের। টানা ১৫ বছর দমকলমন্ত্রী থাকায় ওই দফতরের সঙ্গেই তাঁর নাম ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে গিয়েছিল বাম জমানায়।
বাম জমানার শেষ কয়েক জন বর্ণময় চরিত্রের মধ্যে প্রতিমবাবু ছিলেন অন্যতম। রাম চট্টোপাধ্যায়ের ভাবশিষ্য, নিজের কাজকর্মের জন্য নিজেকেই ‘রংবাজ’ তকমা দিতে পারতেন অট্টহাসি সমেত! বাম ঘরানার মন্ত্রী বলতে যে ছবি বোঝায়, প্রতিমবাবুর চালচলন ছিল তার চেয়ে আলাদা। ডান হাতে ঘড়ি, সরু ফ্রেমের চশমায় শৌখিন থাকতেন। রাজনীতির পাশাপাশি বাংলা ছবিতে নায়কের বাবা-সহ একাধিক চরিত্রে অভিনয় করে গিয়েছেন। সঙ্গে হিরে বিশেষজ্ঞও! লাইসেন্স করা রিভলভার ছিল নিজের। আগ্নেয়াস্ত্র কোমরে গুঁজে মহাকরণ বা আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে বামফ্রন্ট বৈঠকে হাজির হতেন কখনও কখনও! গুলি চালিয়ে দেবেন না তো? এই প্রশ্নে রসিকতাই ছিল প্রতিমবাবুর জবাব। হুগলির তারকেশ্বর কেন্দ্র থেকে মাফব-র হয়ে জিতেছেন অনেক বার, ১৯৯৬ থেকে ২০১১ পর্যন্ত দমকলমন্ত্রী। পরিবর্তনের বছরে প্রাক্তন আইপিএস রচপাল সিংহের কাছে হারার পরে আর ভোটে দাঁড়াননি। দলের রাজ্য সম্পাদকও হয়েছিলেন। তবে ভগ্নস্বাস্থ্যের কারণেই ইদানীং সক্রিয় রাজনীতি থেকে অব্যাহতি নিয়েছিলেন।
মাঝেমধ্যেই অসুস্থ হতেন। গত ১৪ মার্চই হাসপাতাল থেকে বাড়ি গিয়েছিলেন প্রতিমবাবু। বিধাননগরের বাড়িতে এ দিন সকালে আবার অবস্থার অবনতি হতে হাসপাতাল এবং সেখানেই অন্ত। তাঁর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু, সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র-সহ বাম নেতৃত্ব এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।