প্রশ্ন তবু উঠছেই। ফাইল চিত্র
দীর্ঘ টালবাহানার পরে মুকুল রায়কে দলে নিল বিজেপি। মুকুল চেয়েছিলেন রাজ্য বিজেপির মঞ্চে নয়, তাঁর অন্তর্ভুক্তি ঘটুক বিজেপির সদর কার্যালয়ে। সেই অনুরোধও রাখলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। তবে দফতরে থাকলেও তিনি নিজে মঞ্চে থাকলেন না। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদকে দিয়ে কাজ সারলেন। যদিও গত মার্চে কর্নাটকের কংগ্রেস নেতা এস এম কৃষ্ণ দলে যোগ দেওয়ার সময় নিজে হাজির ছিলেন বিজেপি সভাপতি। যোগদান অনুষ্ঠানের আগে-পরে অবশ্য অমিতের সঙ্গে দেখা করেন মুকুল।
কয়েক মাস ধরে চর্চা চললেও মুকুলকে নিতে এত সময় কেন লাগাল বিজেপি? গেরুয়া শিবির সূত্রের ব্যাখ্যা, আরএসএস এবং বিজেপির একাংশের আপত্তিই এর কারণ। ওই অংশের যুক্তি ছিল, সারদা এবং নারদ-কাণ্ডে অভিযুক্ত মুকুলকে দলে নিলে তার দায়ভারও নিতে হবে। দলীয় সূত্রের খবর, এ হেন প্রতিকূল পরিস্থিতিতে মুকুলের হয়ে আগাগোড়া ব্যাট করে গিয়েছেন কৈলাসই। গত সপ্তাহে দিওয়ালি মিলনের অনুষ্ঠানে বিজেপি দফতরে তিনি বিষয়টি নিয়ে অমিতের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেন।
বিজেপির তরফে এক সময় প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, মুকুল তৃণমূলের বেশ কিছু সাংসদ ও বিধায়ককে বার করে এনে একটি মঞ্চ গড়ুন। যা বিজেপির সঙ্গে জোট গ়ড়ে কাজ করবে। পরবর্তী কালে চেষ্টা হয়েছিল মুকুলের তৈরি ন্যাশনালিস্ট তৃণমূল কংগ্রেসকে আবার খাড়া করার, যা কি না বকলমে কাজ করবে বিজেপির হয়ে। কিন্তু সেই পরিকল্পনাও বাস্তবায়িত হয়নি।
আরও পড়ুন: আড়াল থেকেই কি মুকুলের পাশে যাওয়ার বার্তা
দলের প্রাক্তন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের বিজেপিতে চলে যাওয়া নিয়ে তৃণমূল অবশ্য কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি। মুকুলের বিজেপি-যাত্রা কতটা গুরুত্বহীন, তা বোঝাতে প্রতিক্রিয়া দিতেও নারাজ তারা! আর স্বয়ং মুকুল নতুন দলে যোগ দিয়েও ফের বলেছেন, বিজেপি না থাকলে তৃণমূল আজকের জায়গায় পৌঁছতে পারতো না। তাঁর ঘোষণা, ‘‘বাংলার মানুষ হাঁফিয়ে উঠেছেন। তাঁরা বিকল্প খুঁজছেন। পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ক্ষমতা দখল করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’’
মুকুলের ফের দাবি, ‘‘বিজেপি সাম্প্রদায়িক দল নয়, বরং ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক দল। আমি মনে করি, বিজেপি না থাকলে তৃণমূল আজকের জায়গায় পৌঁছতে পারতো না।’’ মন্ত্রী রবিশঙ্করের দাবি, ‘‘মুকুল রায়কে নেওয়ার ফলে বিজেপির বিস্তার হবে। তৃণমূলের ক্ষমতা দখলের পিছনে তাঁর অবদান রয়েছে।’’ বিজেপির সর্বভারতীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) শিবপ্রকাশও বলেছেন, ‘‘তৃণমূলের সরকারকে উৎখাত করতে মুকুলবাবুর ক্ষমতার আমরা পূর্ণ সদ্ব্যবহার করব।’’