দলের দশা বেহাল! কোচবিহার থেকে পুরুলিয়া, এক কালের শক্ত ঘাঁটিতে সংগঠন ভেঙে পড়েছে তাসের ঘরের মতো। কোচবিহারে সাম্প্রতিক লোকসভা উপনির্বাচনে ফল হয়েছে শোচনীয়। তবু সেই বেহাল দলের হাল ধরার প্রতিযোগিতা এখন তীব্র!
রেকর্ড সময় বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য সম্পাদক পদে ছিলেন অশোক ঘোষ। তাঁর মৃত্যুর পরের এক বছরে ভারপ্রাপ্ত হিসাবে কাজ সামলেছেন প্রবীণ প্রাক্তন সাংসদ বরুণ মুখোপাধ্যায়। এ বার ১৮-১৯ মার্চ বৈদ্যবাটিতে ফ ব-র রাজ্য কাউন্সিল অধিবেশন (সিপিএমের যেমন প্লেনাম) থেকে পূর্ণ সময়ের রাজ্য সম্পাদক কে হবেন, তা নিয়েই এখন দলে শোরগোল চরমে! দলের একাংশ হুগলি জেলার এক শ্রমিক নেতাকে রাজ্য সম্পাদক করতে চায়। আর সভাপতি পদে রাজ্য নেতৃত্বের একাংশের পছন্দ উত্তর দিনাজপুরের এক প্রাক্তন মন্ত্রী। কিন্তু মুর্শিদাবাদের অন্য এক নেতাও সভাপতি পদের দাবিদার। প্রয়োজনে রাজ্য কাউন্সিলে ভোটাভুটিতে যেতেও তাঁর আপত্তি নেই। এমতাবস্থায় ঐকমত্য না হলে স্বয়ং সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত বিশ্বাসই রাজ্য দলের ভার হাতে রাখবেন কি না, তা নিয়েও উত্তপ্ত চর্চা হচ্ছে দলের অন্দরে।
দলের নেতা-কর্মীদের একাংশের বক্তব্য, সাধারণ সম্পাদক রাজ্যে দলের ভার নিলে খুব খারাপ বার্তা যাবে। বস্তুত, তেমন সম্ভাবনা ঠেকাতে বৈদ্যবাটিতে সম্মেলনের মধ্যে যে কোনও রকম ‘অপ্রীতিকর’ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে, এমনও বলে রাখছেন তাঁরা! দলের বড় অংশই মনে করছে, অশোকবাবুর জীবদ্দশাতেও যে দুই নেতা বামফ্রন্টের মধ্যে ফ ব-র মুখ হিসাবে বেশির ভাগ প্রতিনিধিত্ব করেছেন, তাঁদেরই এখন সম্পাদক ও সভাপতি পদে নিয়ে আসা উচিত। যে প্রস্তাবে অন্য একাংশ আবার পাল্টা বলছে, বকলমে দলের নিয়ন্ত্রণ তৃণমূলের হাতে যাতে চলে না যায়, তা দেখেই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। সব মিলিয়ে দেবব্রতবাবু আতান্তরে!
ফ ব-র এক রাজ্য নেতা বলছেন, ‘‘নিচু তলায় হাল তো খুব খারাপ। সামনের বছর পঞ্চায়েত নির্বাচনে বাম সংগঠন ভেঙে আরও বিজেপি-র দিকে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। সেই সময়ে নেতৃত্ব এমন হাতে থাকা উচিত, যাঁরা অন্তত সংগঠনটাকে কিছুটা হলেও ধরে রাখতে পারবেন।’’ সেই হাত কাদের হবে, তার জন্যই দৌ়ড় এখন তুঙ্গে!