প্রতীকী ছবি।
মাঠে প্রায় তাঁবু খাটিয়ে সম্মেলন! দ্বারে দ্বারে ঘুরে সংগ্রহ করা চাল, ডাল, আনাজ দিয়ে রান্নার ব্যবস্থা। এমনই অভূতপূর্ব আয়োজনে কলকাতায় এ বার হতে চলেছে বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লকের পার্টি কংগ্রেস। ম্যারাপের নীচের মঞ্চেই বক্তৃতা করতে আসার কথা সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরি, সিপিআইয়ের অমরজিৎ কউরদের।
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর পরিকল্পিত মহাজাতি সদনে বাম জমানায় ফ ব-র শেষ পার্টি কংগ্রেস হয়েছিল। দলের নেতা অশোক ঘোষ তখন জীবিত। রাজ্যে সরকার বদলের পরে প্রথম পার্টি কংগ্রেসে যোগ দিতে অশোকবাবুরা অবশ্য গিয়েছিলেন চেন্নাই। সম্মেলনের জন্য সেখানে তৎকালীন জয়ললিতা সরকারের সহযোগিতাও মিলেছিল। কিন্তু এ বার কলকাতায় মহাজাতি সদনের জন্য আবেদন করে ফ ব-র অভিজ্ঞতা হয়েছে অন্য। সদনের অছি পরিষদের তরফে জানানো হয়েছে, দু’দিনের জন্য প্রেক্ষাগৃহ দেওয়া যেতে পারে, তার বেশি নয়। ফ ব-র নেতৃত্ব যোগাযোগ করেছিলেন অছি পরিষদের সভাপতি এবং রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সঙ্গে। তিনিও একই কথা বলেন। তখনই ফ ব-র সিদ্ধান্ত, আগামী ১২ থেকে ১৬ ডিসেম্বর মৌলালির রামলীলা ময়দানে ম্যারাপ বেঁধেই হবে দলের অষ্টাদশ পার্টি কংগ্রেস!
ফ ব-র রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘কয়েক বছর ধরেই রাজ্যের হাতে থাকা কোনও প্রেক্ষাগৃহ চাইলে পাওয়া যায় না। এ বার মহাজাতি সদন নিয়েও অদ্ভুত আচরণ করা হল! আমাদের সম্মেলন দু’দিনে মিটিয়ে ফেলা সম্ভব নয়। তাই নিজেদের মতো করে মাঠেই পার্টি কংগ্রেস করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’’ প্রেক্ষাগৃহ আদায়ের জন্য স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাইতেও রাজি হননি ফ ব নেতৃত্ব। দলের কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘সরকারি কোনও পরিষেবা ছাড়া গত মাসে রাজ্য সম্মেলনও পুরুলিয়ায় আমাদের সীমিত সাধ্যেই করেছি।’’
বারংবার যোগাযোগের চেষ্টা হলেও মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়বাবুর বক্তব্য জানা যায়নি। তবে সরকারি এক সূত্রের বক্তব্য, ‘‘ফ ব-র সম্মেলনে বাধা দেওয়ার কোনও উদ্দেশ্য ছিল না। আরও অন্যদের ভাড়া দেওয়ার ব্যাপার আছে বলে টানা পাঁচ দিন প্রেক্ষাগৃহের ব্যবস্থা করা যায়নি।’’
ধর্মতলার লেনিন মূর্তি থেকে ১২ তারিখ রামলীলা ময়দান পর্যন্ত ফ ব-র মিছিল হবে পার্টি কংগ্রেসের সূচনায়। শ’পাঁচেক প্রতিনিধির নথিভুক্তিকরণ হবে সেই সন্ধ্যায়। পর দিন সকালে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক সূচনা। বিকেলে ইয়েচুরি, অমরজিৎ, ক্ষিতি গোস্বামী, পার্থ ঘোষদের নিয়ে বাম নেতৃত্বের সমাবেশ। সে দিন সন্ধ্যা থেকে ১৬ তারিখ পর্যন্ত চলবে পার্টি কংগ্রেসের আলোচনা ও কমিটি গঠন। যেখানে এ বার নেতৃত্ব বদলের সম্ভাবনা যথেষ্ট।