সিআইডি-র সাইটে ফরাসি খোঁচায় প্রশ্ন

ফরাসি ওয়েব-সুরক্ষা বিশেষজ্ঞ এলিয়ট অ্যাল্ডারসন রবিবার টুইট করে দাবি করেন, সিআইডি-র সাইটে নিরাপত্তাহীনতা কিছু সমস্যা আছে। তার জন্য সিআইডি তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৮ ০৪:৪৪
Share:

টেলিকম নিয়ন্ত্রক সংস্থার (ট্রাই) শীর্ষ কর্তা আর এস শর্মার চ্যালেঞ্জ নিয়ে তাঁর আধার-তথ্য ফাঁস করে দিয়েছিলেন। সেই ফরাসি ওয়েব-সুরক্ষা বিশেষজ্ঞই এ বার টুইট করে দাবি করলেন, বাংলার সিআইডি-র সাইটে নিরাপত্তা সংক্রান্ত কিছু সমস্যা আছে। গোটা ঘটনায় অন্য মাত্রা যোগ হল রাহুল গাঁধীর নামে একটি টুইটে। যা ‘নকল’ বলেই পরে জানা যাচ্ছে।

Advertisement

ফরাসি ওয়েব-সুরক্ষা বিশেষজ্ঞ এলিয়ট অ্যাল্ডারসন রবিবার টুইট করে দাবি করেন, সিআইডি-র সাইটে নিরাপত্তাহীনতা কিছু সমস্যা আছে। তার জন্য সিআইডি তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে। হঠাৎ ফরাসি এক বিশেষজ্ঞ কেন এবং কী ভাবে সিআইডি-র সাইটের নিরাপত্তা খতিয়ে দেখে ফেললেন, প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েই। রাজ্যের সাইবার মামলার বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি বিভাস চট্টোপাধ্যায়ের মতে, ‘‘ওয়েবসাইটের নিরাপত্তাহীনতা যথাযথ ভাবে খতিয়ে দেখতে হলে তার ভিতরে ঢুকতে হয়। উনি অনুমতি ছাড়া এই কাজ করলে ভারতীয় আইন অনুযায়ী তা অপরাধ।’’ প্রশাসনিক সূত্রের খবর, এর পিছনে কোনও রাজনৈতিক অভিসন্ধি আছে নাকি এটা কোনও চক্রের চক্রান্ত— সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

অ্যাল্ডারসনের টুইট-বিতর্ক সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ওয়াকিবহাল। টুইটের কথা জানার পরেই সিআইডি কর্তারা তাঁদের ‘সিস্টেম’ পরীক্ষা করে মুখ্যমন্ত্রীকে রিপোর্ট দিয়েছেন, তাঁদের দিক থেকে সব ঠিকই আছে। গোয়েন্দাদের একটি সূত্রের বক্তব্য, হ্যাকারদের হামলার কথা ভেবে নিয়মিত নিরাপত্তা বাড়ানো হয় ওয়েবসাইটের। তবে এক আন্তর্জাতিক সাইবার বিশেষজ্ঞ প্রকাশ্যে মন্তব্য করায় প্রয়োজনে দেশের সাইবার প্রযুক্তি ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সংস্থা ‘কম্পিউটার ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম’ (সার্ট)-এর সঙ্গেও কথা বলা হবে।

Advertisement

ফরাসি বিশেষজ্ঞের টুইটের নীচেই এ দিন রাহুলের নামে একটি মন্তব্য ঘিরে চর্চা শুরু হয়েছিল। সেখানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতার উদ্দেশে বলা হয়েছে, ‘‘গোটা বাংলাতেই নিরাপত্তা নিয়ে সমস্যা চলছে। আপনি বিষয়টা দেখুন।’’ কিন্তু পরীক্ষা করে দেখা যায়, ওই টুইটার হ্যান্ড্‌ল কংগ্রেস সভাপতির স্বীকৃত অ্যাকাউন্ট নয়। তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্রের দাবি, ‘‘সোশ্যাল মিডিয়ায় সঙ্ঘ-বিজেপির নোংরা খেলা চলছে। সংসদে আমরা এই নিয়ে সরব হব।’’ বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অবশ্য বলেন, ‘‘সিআইডি-র সাইট কোন বিদেশি হ্যাক করেছে, তা নিয়ে তদন্ত হওয়া উচিত। কিন্তু এর সঙ্গে বিজেপির সম্পর্ক খুঁজে পাওয়ার মধ্যে পাগলামি ছাড়া আর কী থাকতে পারে!’’ সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘বাংলায় অনেক সমস্যাই আছে। কিন্তু বিদেশের এক জন কী ভাবে সিআইডি-র সাইট পরীক্ষা করলেন, কী ভাবে কারা রাহুলের নাম টেনে আনল— গোটাটাই রহস্যাবৃত!’’

আধার কর্তৃপক্ষও এ দিন আবার অ্যাল্ডারসনের ‘কৃতিত্ব’ উড়িয়ে দাবি করেছেন, তাঁদের কোনও সার্ভার থেকেই ট্রাই চেয়ারম্যান শর্মার তথ্য চুরি যায়নি। শর্মারও বক্তব্য, ‘‘আমার সম্পর্কে যা তথ্য পোস্ট করা হয়েছে, সেগুলি আগেই প্রকাশিত হয়েছিল। আর চ্যালেঞ্জটা তথ্য প্রকাশের নয়। আধার নম্বর প্রকাশ করার জন্য আমার ক্ষতি হয়েছে, এমন প্রমাণ পেশ করতে হবে।’’ অ্যাল্ডারসনের দাবি ছিল, শর্মার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আধারের সংযোগ করা হয়নি। সেই দাবিও শর্মা উড়িয়ে দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন