আয়ুর্বেদের ছুরি চলবে কোথায়, জানিয়ে দিল রাজ্য

২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরও এই বিষয়ে একটি নির্দেশ জারি করে। কিন্তু তাতে অসংখ্য ফাঁক ও বিভ্রান্তি থেকে গিয়েছিল। এবং আয়ুষ চিকিৎসকেরা অ্যালোপ্যাথি ওষুধ লিখবেন কি না, সেই ব্যাপারে কিছুই স্পষ্ট করে বলা ছিল না।

Advertisement

পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:৪৩
Share:

নীতির স্বচ্ছতা ছিল না। সেই সুযোগে অনেক আয়ুর্বেদ চিকিৎসক যথেচ্ছ ছুরি-কাঁচি চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠছিল। সেই সঙ্গে তাঁরা নির্বিচারে অ্যালোপ্যাথি ওষুধও দিচ্ছিলেন।

Advertisement

এই অবস্থায় তিন বছরের ধোঁয়াশা কাটিয়ে অবশেষে আয়ুর্বেদ চিকিৎসকদের অ্যালোপ্যাথি ওষুধ দেওয়া এবং অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা পদ্ধতি প্রয়োগের ব্যাপারে সুস্পষ্ট বিজ্ঞপ্তি জারি করল রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। জানিয়ে দিল, আয়ুর্বেদ-মতে ক্ষারসূত্র অস্ত্রোপচার করতে পারবেন ওই চিকিৎসকেরা। কিন্তু অন্য কোনও অপারেশন করতে পারবেন না।

শুক্রবার ডিরেক্টর জেনারেল (আয়ুষ)-এর জারি করা নির্দেশিকায় বৈধ ডিগ্রিধারী আয়ুর্বেদ চিকিৎসকেরা কী কী অ্যালোপ্যাথি ওষুধ দিতে পারবেন এবং অ্যালোপ্যাথির কোন কোন চিকিৎসা পদ্ধতি প্রয়োগ করতে পারবেন, তার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে জানানো হয়েছে, বেশ কিছু প্যারাসিটামল, অ্যান্টিবায়োটিক, ম্যালেরিয়ার ওষুধ, ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ তেল, আয়রন ট্যাবলেট, ওআরএস দেওয়া যাবে। ক্যানসারের ওষুধ ছাড়া বিভিন্ন জাতীয় স্বাস্থ্য প্রকল্পে ব্যবহৃত ওষুধও দিতে পারবেন আয়ুর্বেদ চিকিৎসকেরা। কী কী করতে পারবেন না তাঁরা? সেই তালিকায় আছে মেডিকো-লিগ্যাল বিষয়ের তত্ত্বাবধান, ময়না-তদন্ত করা, ইন্ট্রা-ভেনাস ইঞ্জেকশন দেওয়া, আই-ভি ড্রিপ দেওয়া এবং ব্লাড ট্রান্সফিউশন।

Advertisement

সুপ্রিম কোর্ট ও দিল্লি হাইকোর্টের দু’টি রায়ে বলা হয়েছিল, আয়ুর্বেদ চিকিৎসকেরা অ্যালোপ্যাথি ওষুধ দিতে পারবেন না বা সার্জারি করতে পারবেন না। ১৯টি রাজ্য আইন তৈরি করে সিদ্ধান্ত নেয়, প্রয়োজন হলে তাদের এলাকার আয়ুর্বেদ ডাক্তারেরা অ্যালোপ্যাথি ওষুধ লিখতে এবং অস্ত্রোপচার করতে পারবেন। ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরও এই বিষয়ে একটি নির্দেশ জারি করে। কিন্তু তাতে অসংখ্য ফাঁক ও বিভ্রান্তি থেকে গিয়েছিল। এবং আয়ুষ চিকিৎসকেরা অ্যালোপ্যাথি ওষুধ লিখবেন কি না, সেই ব্যাপারে কিছুই স্পষ্ট করে বলা ছিল না।

স্বাস্থ্য শিবিরের বক্তব্য, বহু ভুয়ো চিকিৎসক ধরা পড়ার পরে এ ব্যাপারে একটা সুস্পষ্ট নির্দেশ জরুরি হয়ে উঠেছিল। কারণ, রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল এক দিকে সিআইডি-কে জানিয়েছিল, সুপ্রিম কোর্ট ও দিল্লি হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী আয়ুষ চিকিৎসকেরা অ্যালোপ্যাথি ওষুধ লিখতে পারেন না। অন্য দিকে, বিভিন্ন সরকারি অ্যালোপ্যাথি হাসপাতালে আয়ুর্বেদ চিকিৎসকেরা ইন্টার্নশিপ করছিলেন, অ্যালোপ্যাথি ওষুধ লিখছিলেন, অস্ত্রোপচারেও সাহায্য করছিলেন। ফলে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছিল।

এই অবস্থায় রাজ্যের নির্দেশ ‘ভাল পদক্ষেপ’ বলে মন্তব্য করেছেন রাজ্য আয়ুর্বেদ কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার গৌতম দত্ত। তবে তাঁর মতে, আইভি ড্রিপ এবং ইন্ট্রাভেনাস ইঞ্জেকশনের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা উচিত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement