TMC

পলাতক দিবাকরকে ছাড়াই প্রশাসনিক-দলীয় বৈঠক

তিনি মারধরের ঘটনার অভিযুক্ত। তিনি ফেরার। দল তাঁকে সাসপেন্ড করেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০১:০২
Share:

প্রতীকী ছবি

তিনি মারধরের ঘটনার অভিযুক্ত। তিনি ফেরার। দল তাঁকে সাসপেন্ড করেছে। তাই একদিকে যেমন তিনি জেলা পরিষদ অফিসে ডাকা বৈঠকে গরহাজির, তেমনই দলীয় বৈঠকেও তিনি বা তাঁর ঘনিষ্ঠরা ব্রাত্য!

Advertisement

কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের এক আধিকারিক সিদ্ধার্থ ঘোষকে মারধর করায় থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে শহিদ মাতঙ্গিনী পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিবাকর জানা, শান্তিপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান সেলিম আলি-সহ অন্যদের বিরুদ্ধে। ঘটনার পর থেকেই ওই দুই মূল অভিযুক্ত পলাতক।

শনিবার তমলুকে জেলা পরিষদ অফিসে জেলার সমস্ত পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও বিডিওদের নিয়ে উন্নয়ন সংক্রান্ত বৈঠক ডেকেছিল জেলাপ্রশাসন। স্বাভাবিকভাবেই তমলুকে হওয়া বৈঠকে এ দিন হাজির ছিলেন না ‘পলাতক’ দিবাকর। জেলা পরিষদ সূত্রের খবর, এ দিন সকাল ১১টা থেকে জেলা পরিষদের সভা কক্ষে বৈঠক শুরু হয়। সেখানে জেলা পরিষদের সভাধিপতি, কর্মাধ্যক্ষ ও জেলাশাসক-সহ অন্য আধিকারিকদের উপস্থিতিতে ১০০ দিনের কাজ, বাংলা আবাস যোজনা এবং বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের পর্যালোচনা করা হয়।

Advertisement

অন্য দিকে, মারধর করার দিনই দিবাকর এবং সেলিমকে তৃণমূল থেকে সাসপেন্ডের নির্দেশ দিয়েছেন জেলা শীর্ষ নেতৃত্ব। দলীয় সূত্রের খবর, জেলা নেতৃত্বের নির্দেশেই শুক্রবার দিবাকর এবং সেলিমকে বাদ দিয়ে শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লক তৃণমূল নেতারা বিশেষ বৈঠক করেন। নোনাকুড়ি বাজারে ব্লক তৃণমূলের অফিসে জরুরি ভিত্তিতে ওই বৈঠক ডেকেছিলেন ব্লক তৃণমূলের আহ্বায়ক শরৎ মেটিয়া। সেখানে ছিলেন দিবাকরের বিরোধী গোষ্ঠীর অন্যতম নেতা জয়দেব বর্মণ ও অপূর্ব জানা।

এছাড়া, ছিলেন পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি শোভা সাউ, পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ বিভাস কর, শান্তিপুর-২ পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান সন্তোষ ঘড়া, খারুই-১ পঞ্চায়েতের প্রধান শেখ সেরাজুল, বল্লুক-২ পঞ্চায়েতের সদস্য রণজিৎ গুছাইত এবং অন্য নেতারা। তবে বৈঠকে দিবাকরের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ব্লক তৃণমূলের যুগ্ম আহ্বায়ক উত্তম সাহু এবং আরও কয়েকজনকে ডাকা হয়নি। এর কারণ হিসাবে উঠে এসেছে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের মারধরের ঘটনায় দিবাকরের নাম জড়ানোর তত্ত্ব।

ওই বৈঠকে, দলের পরবর্তী কর্মসূচি পালনে শরৎ, জয়দেব-সহ অন্য নেতারা ঐক্যবদ্ধভাবে চলার পক্ষে সওয়াল করেন। বৈঠক চলাকালীন পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী ফোনে ব্লক নেতৃত্বদের কাছে খোঁজখবর নেন বলেও খবর। বৈঠকে দলের একাংশ অভিযোগ করেন, দিবাকর দলের ব্লক সভাপতি পদে না থাকলেও প্রায় চার বছর ধরে তিনি ব্লকে দলের সাংগঠনিক কাজকর্ম নিয়ন্ত্রণ করতেন।

তৃণমূল সূত্রের খবর, দিবাকর ও তাঁর ঘনিষ্ঠ কয়েকজন নেতাকে বাদ দিয়েই এবার থেকে ব্লকে দলের সাংগঠনিক কাজকর্ম পরিচালনার পরিকল্পনা করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে দিবাকরের বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা জয়দেব-সহ অন্য কয়েকজন নেতাকে বিশেষ দ্বায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। বৈঠকে ব্লক তৃণমূলের নেতৃত্ব জানান, জেলা নেতৃত্বের নির্দেশ মেনে পরবর্তী কর্মসূচি পালন করা হবে। শীঘ্রই একটি বর্ধিত সভাও ডাকা হবে।

ব্লক তৃণমূল আহ্বায়ক শরৎ বলেন, ‘‘জেলা নেতৃত্বের নির্দেশ মেনেই বৈঠক ডাকা হয়েছিল। দিবাকর ও সেলিমকে দল থেকে সাসপেন্ড করায় ওঁদের ডাকা হয়নি। বৈঠকে উপস্থিত নেতৃত্ব ঐক্যবদ্ধভাবে সংগঠনের বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের কথা বলেছেন। মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীও এ ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়েছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন