আদিবাসী কিশোরীকে গণধর্ষণের ঘটনায় ধৃতদের জেল হেফাজতের নির্দেশ হল। সোমবার তাদের মেদিনীপুর আদালতে হাজির করা হলে চোদ্দো দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ হয়। ঘটনায় ছ’জন জড়িত ছিল বলে অভিযোগ। পুলিশ ছ’জনকেই গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের চিহ্ণিত করতে টিআই প্যারেড হবে। তাদের মেডিক্যাল পরীক্ষা হবে বলেও পুলিশ সূত্রে খবর। এদিন আদালত এই দুই আবেদনই মঞ্জুর করেছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ বলেন, “অভিযুক্ত ছ’জনকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। তদন্তে সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” খুব কম সময়ের মধ্যে এই ঘটনার তদন্ত শেষ করার চেষ্টা চলছে বলেও পুলিশের এক সূত্রে খবর। তদন্ত শেষ হলেই চার্জশিট জমা দেওয়া হবে।
ঘটনাটি ঘটে গত শুক্রবার সন্ধ্যায়। ঘটনার জেরে চাঞ্চল্য ছড়ায় শালবনি থানার শালডহরায়। ওই দিন এক খুড়তুতো বোনকে নিয়ে বাড়ির পাশের জঙ্গলে শৌচকর্ম করতে গিয়েছিল বছর ষোলোর ওই কিশোরী। সেই সময় জঙ্গলে ছিল ছ’জন যুবক। দুই কিশোরীকে তারা জোর করে গভীর জঙ্গলে নিয়ে যায়। চিত্কার করতে শুরু করলে কিশোরীদের মুখে কাপড় চাপা দেওয়া হয়। গভীর জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে দু’জনকে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। খুড়তুতো বোন জ্ঞান হারায়। এরপর ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করা হয়। রাতে জ্ঞান ফেরে খুড়তুতো বোনের। তার কাছে মোবাইল ফোন ছিল। জ্ঞান ফেরার পর মোবাইল ফোনে সে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে। পরিবারের লোকেরা বিষয়টি গ্রামবাসীদের জানান। গ্রামের বেশ কয়েকজন দল বেঁধে ওই জঙ্গলে যায়। তখনও ছ’জন যুবক জঙ্গলে ছিল। রাতে গ্রামবাসীদের দল বেঁধে আসতে দেখে তারা পালানোর চেষ্টা করে। চারজন পালিয়েও যায়। তবে রাজীব মুর্মু এবং বাদল মুর্মু নামে দু’জন গ্রামবাসীদের হাতে ধরা পড়ে। এই দু’জনকে শালডহরায় নিয়ে আসা হয়। শনিবার সকালে ঘটনাটি জানাজানি হয়। খবর পেয়ে নতুনডিহি থেকে বেশ কয়েকজন গ্রামবাসী
শালডহরায় যায়।
শনিবার সন্ধ্যায় ঘটনার খবর পৌঁছয় পুলিশের কাছে। রাতে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের হলে ওই দুই যুবককে গ্রেফতার করা হয়। পরে গ্রেফতার করা হয় শালকু মুর্মু এবং মঙ্গল মুর্মু নামে আরও দুই অভিযুক্ত যুবককে। রবিবার যোগেন্দ্র মুর্মু এবং মঙ্গল মুর্মু নামে বাকি দুই অভিযুক্তও ধরা পড়ে। সোমবার ধৃত ছ’জনকেই মেদিনীপুর আদালতে হাজির করা হয়। কেন অভিযুক্তদের হেফাজতে চাইল না পুলিশ? পুলিশের এক সূত্রের দাবি, তদন্তের প্রয়োজনেই ধৃতকে হেফাজতে চাওয়া হয়। তখন অভিযুক্তকে জেরা করে ঘটনার সম্পর্কে নতুন তথ্য হাতে পাওয়া যায়। শালডহরার এই ঘটনার ক্ষেত্রে যা যা জানার তা ইতিমধ্যে জানা হয়ে গিয়েছে। অভিযুক্ত ছ’জনের মধ্যে ছ’জনই ধরা পড়ে গিয়েছে। ফলে, ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করার প্রয়োজনই নেই। জেলা পুলিশের এক কর্তার কথায়, “অভিযুক্ত সকলে ধরা পড়ে যাওয়ায় দ্রুতই তদন্ত এগোচ্ছে।”