ঘরে-বাইরে আপত্তি, দুঃখপ্রকাশ করলেন গৌতম দেব

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে কুকথার জন্য ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই প্রকাশ্যে দুঃখপ্রকাশ করলেন সিপিএম নেতা গৌতম দেব। প্রকাশ্য জনসভায় তৃণমূল নেত্রী সম্পর্কে ‘মাল’ শব্দটি গৌতমবাবু ব্যবহার করার পরে বিভিন্ন মহল থেকে নিন্দার ঝড় উঠেছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৭ ০২:৩০
Share:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে কুকথার জন্য ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই প্রকাশ্যে দুঃখপ্রকাশ করলেন সিপিএম নেতা গৌতম দেব। প্রকাশ্য জনসভায় তৃণমূল নেত্রী সম্পর্কে ‘মাল’ শব্দটি গৌতমবাবু ব্যবহার করার পরে বিভিন্ন মহল থেকে নিন্দার ঝড় উঠেছিল। দলের মধ্যে একাংশ কর্মী-সমর্থকদের মনোবল চাঙ্গা করার লক্ষ্যে গৌতমবাবুকে ভর্ৎসনা না করারই পক্ষপাতী ছিলেন। কিন্তু চাপের মুখে শেষ পর্যন্ত দুঃখপ্রকাশই করতে হয়েছে তাঁকে।

Advertisement

সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক গৌতমবাবু সোমবার লিখিত বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, ‘রবিবার ছাত্রনেতা শহিদ কমরেড সুদীপ্ত গুপ্তের স্মরণে আয়োজিত সভায় আমি রাজ্য পরিস্থিতি নিয়ে নানা বিষয়ে বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর নাম উল্লেখ করে দু-একটি কথা বলেছি, যা ব্যক্তি-আক্রমণের সমতুল। আমার এ ধরনের ব্যক্তি-আক্রমণ করার উদ্দেশ্য ছিল না। এ জন্য আমি দুঃখিত’। দলীয় সূত্রের খবর, সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র শহরে ফিরে বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ নেন। নেতাজিনগরের ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু। তিনিও গোটা বক্তব্য সম্পর্কে প্রাথমিক রিপোর্ট দেন। জনমানসে অত্যন্ত বিরূপ প্রতিক্রিয়া হচ্ছে, এই বার্তা আলিমুদ্দিনের তরফে পৌঁছে দেওয়া হয় রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য গৌতমবাবুকে। তার পরেই তাঁর বিবৃতি।

এর আগে তৃণমূল নেত্রী সম্পর্কে অশালীন মন্তব্য করে প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়েছিলেন বিমানবাবু। প্রাক্তন সাংসদ অনিল বসুকে কুৎসিত মন্তব্যের দায়ে প্রকাশ্যে ভর্ৎসনা করেছিল দল। সেই তালিকায় গৌতমবাবুও যোগ হওয়ার পরে সিপিএম নেতৃত্ব দাবি করছেন, ভুল করলে ক্ষমা চাওয়ায় কোনও অমর্যাদা নেই। কিন্তু তাপস পাল, সোনালি গুহ, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বা ইদ্রিশ আলিদের জন্য তৃণমূল কখনও এই পন্থা নেবে কি?

Advertisement

দুঃখপ্রকাশের আগে দিনভর রাজ্যের নানা থানায় গৌতমবাবুর নামে অভিযোগ দায়ের করেছেন মহিলা তৃণমূলের কর্মীরা। নেতাজিনগর-সহ কলকাতার বেশ কিছু থানা, মুর্শিদাবাদের ১০টি বা হুগলির উত্তরপাড়ার মতো থানায় অভিযোগগুলি বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পুলিশ জেনারেল ডায়েরি হিসাবেই নিয়েছে। প্রতিক্রিয়া হয়েছে বামফ্রন্টের অন্দরেও। আগের দিনের সভা হয়েছিল চার বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের ডাকে। বাম শরিক দলের তিন ছাত্র সংগঠন ছাত্র ব্লক, পিএসইউ এবং এআইএসএফের রাজ্য সম্পাদক সৌম্যদীপ সরকার, নওফেল মহম্মদ সফিউল্লা, শুভম বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন যৌথ বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, গৌতমবাবুর মন্তব্যে তাঁরা হতাশ ও মর্মাহত। তাঁদের কথায়, ‘বামপন্থার পাঠশালায় তাপস পাল, সোনালি গুহ তৈরির শিক্ষা দেওয়া হয় না বলেই আমরা বিশ্বাস করি’। গৌতমবাবুকে দিয়ে দুঃখপ্রকাশ করিয়েই এই চাপের মোকাবিলা করেছে আলিমুদ্দিন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন