আবার দার্জিলিং জেলা সভাপতি

গৌতমের হাতেই ভার

সাত মাস পর আবার গৌতম দেবের হাতেই দার্জিলিং জেলার দলের দায়িত্ব তুলে দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।কে জেলা সভাপতির পদে বসানো হয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৬ ০২:৫০
Share:

ও মন্ত্রীমশাই! পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে ডাকছেন পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব। ছবি: সন্দীপ পাল।

সাত মাস পর আবার গৌতম দেবের হাতেই দার্জিলিং জেলার দলের দায়িত্ব তুলে দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার দুপুরে কলকাতা ফেরার আগে উত্তরকন্যার ভিআইপি গেস্ট হাউসের সামনে দাঁড়িয়ে নতুন জেলা সভাপতির নাম ঘোষণা করেন দলের জেলা পর্যবেক্ষক, মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। গত বছরের নভেম্বর মাসে গৌতমবাবুকে সরিয়ে রঞ্জন সরকারকে জেলা সভাপতির পদে বসানো হয়েছিল।

Advertisement

তৃণমূল সূত্রের খবর, পুরসভা, পঞ্চায়েত থেকে বিধানসভা, পরপর ভোটে হারের পর জেলায় শুধু সংগঠনকে চাঙ্গা করাই নয়, নতুন নেতৃত্বকে তুলে আনার দায়িত্বও দেওয়া হয় গৌতমবাবুকে। তবে এখনও কোনও জেলা কমিটি গঠন করা হয়নি। শুধুমাত্র জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি হিসাবে বিকাশ সরকারের নাম ঘোষণা হয়েছে। আগামী দিনে, রাজ্য নেতৃত্বের পরামর্শ মতো জেলা কমিটি গঠন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নতুন জেলা সভাপতিকে।

জেলার পর্যবেক্ষক অরূপবাবু বলেন, ‘‘আমাদের নেত্রীর নির্দেশেই গৌতম দেবকে জেলা সভাপতি করা হয়েছে। উনি ছাড়া বিকাশ সরকার যুব সংগঠনের দায়িত্ব সামলাবেন। বাকি, মহিলা-ছাত্র-সহ অন্য সংগঠনগুলি দায়িত্ব কাকে দেওয়া হবে তা পরে ঠিক হবে। সেই সঙ্গে রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনার পর গৌতমবাবু পূর্ণাঙ্গ জেলা কমিটি গঠন করবেন।’’ দায়িত্ব পাওয়ার পরে গৌতমবাবু বলেন, ‘‘নেত্রী আমার উপর আবার আস্থা রেখেছেন এতে আমি কৃতজ্ঞ। শিলিগুড়িতে আমাদের পরপর ভোটের ফল খারাপ হয়েছে। আমাদের ঘুরে দাঁড়াতেই হবে। মানুষের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক, জনসংযোগ বাড়াতে হবে। সমস্ত স্তরের নেতা-কর্মী সবাই মিলে পরিশ্রম করতে হবে।’’ অপসারিত জেলা সভাপতি রঞ্জন সরকার বলেন, ‘‘দলনেত্রী সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। দল আমাকে যে দায়িত্ব দেবে সেটাই পালন করব।’’

Advertisement

দলীয় সূত্রের খবর, ২০০৪ সালের ১৪ জুলাই গৌতমবাবু প্রথমবার তৃণমূলের জেলা সভাপতি হন। তার পর থেকে গত বছরের নভেম্বর পর্যন্ত তিনি ওই দায়িত্বে ছিলেন। কিন্তু গত বছর প্রথমে পুরসভা, পরে মহকুমা পরিষদে বামেদের কাছে হারে তৃণমূল। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী, এসজেডিএ-র চেয়ারম্যান, এনবিএসটিসি-র চেয়ারম্যান-সহ অন্তত ৮টি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি পদে থাকায় গৌতমবাবু দলের কাজে ঠিকঠাক সময় দিতে পারছেন বলেও দলের অন্দরে আলোচনা শুরু হয়।

এর পরেই পুরসভার কাউন্সিলর রঞ্জনবাবুর মতো তরুণ নেতাকে দলের দায়িত্ব দেওয়া হয়। অরূপ বিশ্বাসকে জেলার দায়িত্ব দেওয়া ছাড়াও, জেলা কমিটির মাথায় একটি পরামর্শদাতা কমিটি গঠন করা হয়। তার চেয়ারপার্সন করা হয় গৌতমবাবুকেও। বিধানসভা ভোটে গৌতমবাবু ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি কেন্দ্রে জিতলেও শিলিগুড়ির তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রেই তৃণমূল হারে। জেলার সমতলে সংগঠনের কাজকর্ম নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। ভাইচুং ভুটিয়া বিধানসভা হারের পর প্রকাশ্যেই জেলার কয়েকজন নেতার নামে বিষোদগার করেন। তিনি তৃণমূল নেত্রীকে নাম করে রিপোর্টও পাঠান।

তৃণমূলের জেলার কয়েকজন প্রবীণ নেতা জানান, তরুণ প্রজন্মকে দলের বিভিন্ন সংগঠনের দায়িত্ব দেওয়া হলেও সুযোগ্য নেতৃত্বের অভাব রয়েছে। হাতে গোনা কয়েকজন থাকলেও ভোটের সময় তাঁদের ভূমিকা নিয়ে তৃণমূল নেত্রী অসন্তুষ্ট। দলের এক রাজ্য নেতা জানান, আপাতত গৌতমবাবুকে সভাপতি করা ছাড়া নেত্রীর কোনও বিকল্প ছিল না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন