তৃণমূল নেতাদের পাড়ায় মুখ ফেরাল শহর বহরমপুর

২০১৩ সালের পুর-নির্বাচনে বহরমপুরের ২৮টি ওয়ার্ডের ২৬টিতেই কংগ্রেস জয়ী হয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০১৯ ০১:৪৭
Share:

অধীর চৌধুরী। নিজস্ব চিত্র

জেলা চেয়ারম্যান থেকে দলীয় মুখপাত্র, সভাপতি থেকে দাপুটে বিধায়ক—তৃণমূলের এক ঝাঁক নেতার আবাস বহরমপুর শহরে। অথচ সেই শহরের অধিকাংশ ওয়ার্ডে ভোটের নিরিখে এগিয়ে রয়েছে কংগ্রেস।

Advertisement

এমনকি, বহরমপুরের ২৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৩টি’তে দ্বিতীয় স্থানেও নেই তারা, সে জায়গায় থাবা বসিয়েছে, বিজেপি। তৃণমূলের অপূর্ব সরকার কোনওক্রমে তৃতীয় স্থানে। কমিশনের রিপোর্ট বলছে— বহরমপুর শহরে সর্বাধিক ভোট পেয়েছেন কংগ্রেসের অধীর চৌধুরী, দ্বিতীয় স্থানে বিজেপি’র কৃষ্ণ জোয়ারদার আর্য, তৃণমূলের ঠাঁই হয়েছে তৃতীয় স্থানে। বহরমপুর শহরে ভোট পড়েছে ১ লক্ষ ৪৫৬টি। সেখানে কংগ্রেস প্রার্থী ৭৪.৮৭ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। অধীরের প্রাপ্ত ভোট, ৭৫ হাজার ২০৮। বিজেপি প্রার্থীর ঝোলায় ১০.৮২ শতাংশ ভোট (১০ হাজার ৮৬৬)। তৃণমূল প্রার্থী অপূর্ব সরকার ১০.২৭ শতাংশ (১০ হাজার ৩১৯) ভোট পেয়েছেন।

২০১৩ সালের পুর-নির্বাচনে বহরমপুরের ২৮টি ওয়ার্ডের ২৬টিতেই কংগ্রেস জয়ী হয়েছিল। দু’টি আসন নিয়েই খুশি থাকতে হয়েছিল তৃণমূলকে। ২০১৬’র সেপ্টেম্বর মাসে পুরপ্রধান নীলরতন আঢ্য-সহ একাধিক কংগ্রেসের কাউন্সিলর দল বদলে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। নতুন সমীকরণে তৃণমূলের কাউন্সিলর হন ১৯ জন এবং কংগ্রেসের ৯ জন। লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশের কয়েক মাস আগে বহরমপুর পুরসভার মেয়াদ শেষ হলে রাজ্য সরকার মহকুমাশাসককে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ করে। কিছু দিনের মধ্যে অপূর্ব সরকারকে যুগ্মভাবে বহরমপুর পুরসভার প্রশাসক হিসেবে দলীয় ভাবে নিয়োগ করা হয়। তা নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি। তৃণমূলের অন্দরের খবর, ‘বহিরাগত’ অপূর্বকে প্রশাসকের পদ দেওয়ায় স্থানীয় মানুষ যে ভেতরে ভেতরে চটেছিলেন, ভোটে তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।

Advertisement

তৃণমূল নেতাদের ওয়ার্ডে দলের অবস্থাটা, একটু খতিয়ে দেখা যাক— নীলরতন আঢ্যের বহরমপুরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডে অধীর পেয়েছেন ৩৪৩১ ভোট, বিজেপি’র প্রাপ্তি ৪৪২ আর তৃণমূল পেয়েছে ৩১৪টি ভোট। জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র অশোক দাসের

১২ নম্বর ওয়ার্ডে কংগ্রেসের প্রাপ্ত ভোট ১৭২০টি। ২৬৩টি ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বিজেপি। ১৯০টি ভোট পেয়ে তৃতীয় তৃণমূল। ১৪ নম্বরের ওয়ার্ডের বাসিন্দা শহর তৃণমূলের সভাপতি নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায়। এখানেও অধীর ভোট পেয়েছেন ২৯১৭ ভোট। তৃণমূলের ঝুলিতে ৫১২টি ভোট। ২২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান সুব্রত সাহা। সেখানে অধীরের প্রাপ্ত ভোট ২৭৮৮, তৃণমূল পেয়েছে ৪০৯টি ভোট। পরিসংখ্যান বলছে— বহরমপুরের ১, ২, ৩, ৪, ৮, ৯, ১০, ১১, ১২, ১৫, ১৭, ২৪ ও ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপি রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে। জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলেন, ‘‘ফল বলছে আর যাই হোক, তৃণমূলের পাশে কেউ নেই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement