আজ সকাল আটটা থেকে গোটা দেশের সঙ্গে এ রাজ্যের ৪২টি লোকসভা কেন্দ্রের ভোট গণনা শুরু হবে।
এ রাজ্যে মোট বুথের সংখ্যা ৭৮,৭৯৯। গণনা হবে ৫৮টি গণনাকেন্দ্রের ৪৬৬৮টি টেবিলে। গোড়ায় গোনা হবে পোস্টাল ব্যালট এবং ইলেকট্রনিক্যালি ট্রান্সমিটেড পোস্টাল ব্যালট সিস্টেম (ইটিপিবিএস)। মিনিট দশেকের মধ্যে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)-ও স্ট্রং রুম থেকে গণনাকেন্দ্রে চলে আসবে। সাধারণ ভাবে ১৯-২০ রাউন্ডের মধ্যেই গণনা প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যাবে। সবচেয়ে বেশি ২৫ রাউন্ড গোনা হবে কলকাতা দক্ষিণ এবং ঝাড়গ্রাম কেন্দ্রে। আবার জলপাইগুড়ি, রায়গঞ্জ এবং বালুরঘাটে দশ রাউন্ডেই গণনা শেষ হয়ে যেতে পারে। নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর, মোটামুটি ভাবে সকাল ৯টার মধ্যে প্রথম রাউন্ড গণনার ফল প্রকাশিত হবে। ‘ট্রেন্ড’ বোঝা যাবে দুপুর থেকেই। আর বিকেল চারটে থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে ইভিএম গণনা শেষ হয়ে যাবে বলে আশা করা যায়।
তবে আনুষ্ঠানিক ফল ঘোষণা হতে রাত গড়িয়ে যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ, ইভিএম গোনার পরে বিধানসভা কেন্দ্রপিছু পাঁচটি করে ভোটার ভেরিফায়েব্ল পেপার অডিট ট্রেল (ভিভিপ্যাট)-এর স্লিপ গুনে সংশ্লিষ্ট ইভিএমের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হবে। রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসারের উপস্থিতিতে একটি লোকসভা কেন্দ্রের অধীনে থাকা প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রের সব ক’টি বুথের নম্বর স্লিপে লিখে সেগুলি একটি বাক্সে রাখা হবে। লটারি হবে প্রার্থীদের এজেন্টের উপস্থিতিতে। যে প্রথম পাঁচটি নম্বর উঠবে, সেই বুথগুলির ইভিএম এবং ভিভিপ্যাট স্লিপের ফল মিলিয়ে দেখা হবে।
কমিশন সূত্রে জানানো হয়েছে, ভিভিপ্যাটের ফলের সঙ্গে ইভিএমের ফল না-মিললে ভিভিপ্যাটের ফলকেই চূড়ান্ত বলে গণ্য করা হবে। যদিও রাজনৈতিক মহলের মতে, সে ক্ষেত্রে অন্য ইভিএমগুলি নিয়েও প্রশ্ন উঠে যাবে এবং বিরোধীরা ইভিএম কারচুপির যে অভিযোগ তুলছেন, সেই বিতর্ক আরও জোরদার হবে। তবে তেমন পরিস্থিতির উদ্ভব হবে না বলেই প্রত্যয়ী নির্বাচন কমিশন।
কমিশন সূত্রে বলা হচ্ছে, গণনা নির্ভুল করার ব্যাপারে তারা দায়বদ্ধ। সেই কারণে চলতি বছরে পদ্ধতিগত যেমন কিছু পরিবর্তন করা হয়েছে, তেমনই কোনও রকম তাড়াহুড়ো না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে গণনাকর্মীদের।
কী ভাবে চলবে গণনা প্রক্রিয়া? কমিশন সূত্রে বলা হচ্ছে, প্রতিটি রাউন্ড গণনার শেষে প্রয়োজনীয় নথিপত্র তৈরি হবে। তাতে স্বাক্ষর করবেন সংশ্লিষ্ট পর্যবেক্ষক। তার পর ওই রাউন্ডের ফলাফল ‘নিউ সুবিধা অ্যাপ’-এ আপলোড হবে। পাঠানো হবে ভোটার হেল্পলাইন অ্যাপ এবং কমিশনের ওয়েবসাইট (https://results.eci.gov.in)-এও। প্রতিটি রাউন্ডের শেষে নথিপত্র তৈরি এবং পর্যবেক্ষকের সইসাবুদ শেষ হওয়ার পরেই পরের রাউন্ডের ইভিএম গণনা টেবিলে আনা হবে। ফলে সব মিলিয়ে খানিকটা সময় লাগবে। তাই অন্যান্য বার দুপুর দু’টো নাগাদ গণনা মিটে গেলেও এ বার কয়েক ঘণ্টা বাড়তি সময় লাগতে পারে। এর পর ভিভিপ্যাট গণনা হতে আর আরও সাত-আট ঘণ্টা লাগতে পারে। তাই আনুষ্ঠানিক ফল ঘোষণা হতে বৃহস্পতিবার মধ্যরাত বা শুক্রবারের ভোরও হতে পারে বলে আন্দাজ করছেন কমিশন কর্তারা।