আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে মোদীর শপথে দিল্লি যাচ্ছেন মমতা

রাজনৈতিক শিবিরের অনেকে মোদীর শপথে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যাওয়ার এই সিদ্ধান্তকে তাৎপর্যপূর্ণ মনে করছেন। কারণ, আগামী দিনে প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতাকে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় প্রয়োজনীয় কাজ করতে হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০১৯ ০৩:৪০
Share:

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

প্রচারে পরস্পরকে নিশানা করেছিলেন দু’জনেই। বক্তৃতায় কেউ কাউকে বিন্দুমাত্র রেয়াত করেননি। দল ছাপিয়ে এ বার বাংলায় লোকসভা ভোটের প্রচার কার্যত ‘মোদী বনাম দিদি’র লড়াইয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে কেন্দ্রের সরকারে ফেরত আসার পরে সংসদের সেন্ট্রাল হলে সংসদীয় দলের বৈঠকে নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, প্রচারে কে কী বলেছেন, মনে না রেখে সকলে মিলে উন্নয়নের কাজ করতে চান। এ বার সৌজন্য এবং আনুষ্ঠানিকতায় সাড়া দিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদীর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ স্বীকার করে আজ, বুধবার দিল্লি যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

রাজনৈতিক শিবিরের অনেকে মোদীর শপথে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যাওয়ার এই সিদ্ধান্তকে তাৎপর্যপূর্ণ মনে করছেন। কারণ, আগামী দিনে প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতাকে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় প্রয়োজনীয় কাজ করতে হবে। ফলে, আনুষ্ঠানিক সৌজন্য রক্ষা করা এখন তাঁর পক্ষে জরুরি। মমতারও বক্তব্য, ‘‘সংবিধানে কয়েকটি আনুষ্ঠানিকতা রয়েছে। এটা সাংবিধানিক সৌজন্য। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতির শপথ গ্রহণের যখন আমন্ত্রণ পাই, তখন চেষ্টা করি যাওয়ার।’’

দ্বিতীয় বার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদীর শপথ নেওয়ার কথা কাল, বৃহস্পতিবার। সেই শপথ অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র মঙ্গলবার দিল্লিতে রাজ্যের রেসিডেন্ট কমিশনারের কাছে পৌঁছেছে। আমন্ত্রণ গ্রহণ করার আগে মুখ্যমন্ত্রী কথা বলেছেন একাধিক প্রবীণ বিরোধী নেতা ও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে। পরে তিনি বলেন, ‘‘সবার সঙ্গে কথা বলে নিয়েছি। আমার সঙ্গে দু-এক জন মুখ্যমন্ত্রীরও কথা হয়েছে। এটা যে হেতু আনুষ্ঠানিক সরকারি কর্মসূচি, তাই তাকে সম্মান দিয়ে আমি যাব।’’ সূত্রের খবর, শপথের পরের দিন বিরোধী শিবিরের নেতা-নেত্রীরা ভোট-পরবর্তী প্রথম বৈঠকও সেরে নিতে পারেন। মমতাও এ ব্যাপারে উদ্যোগী।

Advertisement

ভোটের প্রচার এবং ভোট-পর্ব যত এগিয়েছে, দুই যুধুধান শিবিরের নেতা-নেত্রীর তরজার উত্তাপ তত বেড়েছিল। রাজ্যে গণতন্ত্রের হত্যা, স্বৈরাচার চালানো, দুর্নীতি ও সিন্ডিকেট-রাজকে প্রশ্রয় দেওয়ার দায়ে মমতাকে কাঠগড়ায় তুলেছেন মোদী। বারবার বলেছেন, ‘‘দিদি সাংবিধানিক রীতিনীতি মানেন না। প্রধানমন্ত্রীকে মানতেও তাঁর আপত্তি। ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র পরে দু’বার ওঁকে ফোন করেছি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী ফোন ধরেননি, কলব্যাকও করেননি!’’ আবার মমতা বলেছেন, ‘‘এক জন কাউন্সিলর হওয়ার যোগ্যতাও মোদীবাবুর নেই।’’ মোদী তৃণমূলের ‘মাফিয়া রাজনীতি’ নিয়ে অভিযোগ করার পরে তাঁকে কান ধরে ওঠবোস করানোর চ্যালেঞ্জ ছুড়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গেই মমতার ‘গণতান্ত্রিক থাপ্পড়’ মন্তব্য নিয়ে প্রভূত বিতর্ক হয়েছিল। মোদী বলেছিলেন, ‘‘দিদির থাপ্পড় আমার কাছে আশীর্বাদ হবে।’’

এই সবই আপাতত পিছনে ফেলে দিল্লি যাচ্ছেন মমতা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন