বাড়িতে হামলা, গুলি, পার্টি অফিস দখল শুরু

কোচবিহারে তৃণমূল প্রার্থী পরেশ অধিকারীকে হারিয়ে জয়ী হন বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিক। অভিযোগ, তার পরেই বিভিন্ন জায়গায় গোলমাল শুরু হয়।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০১৯ ০২:৪৬
Share:

নৈহাটি পুরসভার কাছে জ্বলছে মোটরবাইক। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়।

লোকসভা ভোটের ফল ঘোষণার পর থেকে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের কিছু এলাকায় বিক্ষিপ্ত গোলমাল শুরু হয়ে গেল। সেই তালিকায় বাঁকুড়া ও বর্ধমানের পাশাপাশি কোচবিহার কেন্দ্রের একাধিক জায়গা রয়েছে। কোথাও অভিযোগ, ফল ঘোষণার পরে হামলা হয়েছে তৃণমূল নেতানেত্রীর বাড়িতে, ভাঙচুর হয়েছে তৃণমূলের পার্টি অফিস। কোথাও পাল্টা অভিযোগ, বিজেপি কর্মীর কান ঘেঁষে গিয়েছে তৃণমূলের ছোড়া গুলি।

Advertisement

কোচবিহারে তৃণমূল প্রার্থী পরেশ অধিকারীকে হারিয়ে জয়ী হন বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিক। অভিযোগ, তার পরেই বিভিন্ন জায়গায় গোলমাল শুরু হয়। তৃণমূলের অভিযোগ, বক্সিরহাট, মহিষকুচি, রামপুর, শালবাড়িতে তাদের কার্যালয়ে ভাঙচুর করা হয়। শুক্রবার সকালে সিতাইয়ে হামলা হয়। তৃণমূলের অভিযোগ, চার-পাঁচশো মোটরবাইক ভাঙচুর করেন বিজেপি কর্মীরা। সিতাই বাজারে তৃণমূলের একটি পার্টি অফিস ভাঙচুর করা হয়। একটিতে আগুন ধরানো হয় বলেও দাবি। সিতাইয়ের তৃণমূল নেতানেত্রীর বাড়িতে হামলার অভিযোগ ওঠে। শীতলখুচিতে এক পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়ি ভাঙচুর হয় বলেও অভিযোগ। ওই বিধানসভায় সাতটি পার্টি অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। মাথাভাঙার ফুলবাড়িতেও তৃণমূলের পার্টি অফিস দখলে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। সিতাইয়ের তৃণমূল বিধায়ক জগদীশ বসুনিয়া বলেন, “চারদিকে তাণ্ডব চলছে। তৃণমূল কর্মীরা বাড়িতে থাকতে ভয় পাচ্ছে।”

উল্টো দিকে, বৃহস্পতিবার রাতেই তুফানগঞ্জ শহরের দেওচড়াইয়ে বিজেপি কর্মীদের উপরে হামলার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বিজেপির দাবি, তাদের চার জন কর্মী জখম হন। বিজেপির জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। সেই প্রসঙ্গে মালতী বলেন, “যা ঘটছে তার বেশির ভাগটাই জনরোষ। কিছু জায়গায় তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠী হামলা করছে।” তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “সিপিএম তথা বামেরা বিজেপিতে ভিড়ে তৃণমূলের উপরে হামলা করছে।”

Advertisement

সংঘর্ষের ঘটনা দক্ষিণবঙ্গেও ঘটেছে। বাঁকুড়া লোকসভার শালতোড়া বিধানসভা এলাকায় বৃহস্পতিবার রাতে একটি গোলমালের ঘটনাকে ঘিরে বিজেপি কর্মীরা থানার সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন। অভিযোগ, সেখানে তৃণমূলের ছোড়া গুলি এক বিজেপি কর্মীর কান ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। তৃণমূল ব্লক সভাপতির বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে।

পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রাম, কালনা, বর্ধমান শহরের কিছু অংশে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় দখল, তাতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া ও ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। কালনায় বড়ধামাস পঞ্চায়েতে এক মহিলা সদস্যকে যৌনহেনস্থার অভিযোগও উঠেছে। বর্ধমান শহরে তাদের ১১টি পার্টি অফিস দখল করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছে তৃণমূল। বিজেপি এই সব অভিযোগই অস্বীকার করেছে।

দুর্গাপুর-ফরিদপুর (লাউদোহা) থানা এলাকার পাটশ্যাওড়া গ্রামে তৃণমূল কর্মীর উপরে হামলা ও তাঁর বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। বিজেপি তা অস্বীকার করেছে। উল্টো দিকে, জামুড়িয়ার শ্যামলা গ্রামে দুই বিজেপি কর্মীর উপরে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তৃণমূল তা অস্বীকার করেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন