রফা খুঁজতে দিল্লিতে মোর্চার দল

পাহাড়বাসীদের মধ্যে বন‌্ধ তোলার দাবি আরও জোরাল হচ্ছে। আবার সমতলেও প্রতিরোধ শক্তিশালী চেহারা নিচ্ছে। বুধবার থেকে সমতলে আন্দোলন তীব্র করার হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছিলেন বিমল গুরুঙ্গ।

Advertisement

কিশোর সাহা ও প্রতিভা গিরি

শিলিগুড়ি ও দর্জিলিং শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০১৭ ০২:৪৯
Share:

ক্ষোভ: সংবাদপত্রের গাড়িতে আগুন বন্‌ধ সমর্থকদের। বুধবার কার্শিয়াঙের কাছে। —নিজস্ব চিত্র।

রাজ্যের সঙ্গে স্নায়ুর লড়াই জারি রেখেই সম্মানজনক রফাসূত্র খুঁজতে দিল্লিতে এ বার বিধায়ক ও পাহাড়ের বিশিষ্টজনদের দল পাঠাচ্ছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। কারণ, পাহাড়বাসীদের মধ্যে বন‌্ধ তোলার দাবি আরও জোরাল হচ্ছে। আবার সমতলেও প্রতিরোধ শক্তিশালী চেহারা নিচ্ছে।

Advertisement

বুধবার থেকে সমতলে আন্দোলন তীব্র করার হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছিলেন বিমল গুরুঙ্গ। কিন্তু এ দিন মোর্চার আন্দোলন পাহাড়েই সীমাবদ্ধ ছিল। বুধবার ভোরে কার্শিয়াঙের জিরো পয়েন্টে সংবাদপত্র বহনকারী একটি গাড়ি আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। আর একটি গাড়িতে পেট্রোল ঢালা হলেও তার চালক কোনওমতে পালিয়ে যান। যদিও মোর্চা নেতা বিনয় তামাঙ্গ এই ঘটনার নিন্দা করে দোষীদের শাস্তির দাবি করেছেন। উল্টো দিকে, এ দিনই দার্জিলিঙের চকবাজার থেকে নারী মোর্চার নেত্রী সৃজনা তামাঙ্গকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এর মধ্যে আবার শিলিগুড়ি-সহ তরাই-ডুয়ার্সে সকাল থেকে আদিবাসীরা পথে নেমে ‘এক ইঞ্চি জমি ছাড়া হবে না’ বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে মিছিল করেছে। শিলিগুড়িতে সরাসরি আসরে নেমেছে তৃণমূল। পাহাড়ে গোলমালের পরে দলীয় পতাকা নিয়ে তৃণমূলের প্রথম ‘মহামিছিল’ এটি। পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব ভেনাস মোড় থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার এই মিছিলে হাঁটেন। শিলিগুড়ি প্রায় আড়াই ঘণ্টা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে।

Advertisement

এই স্নায়ুযুদ্ধে তাই আবার দিল্লিতে টিম পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিমল গুরুঙ্গ। মোর্চার স্টাডি ফোরামের মুখপাত্র সরোজ থাপা বলেছেন, ‘‘ভাল কিছু প্রস্তাব মিলবে, এই আশায় নতুন প্রতিনিধি দল দিল্লি যাচ্ছে।’’ এই দলে বিশিষ্টজনেদের সঙ্গে থাকছেন দলের তিন বিধায়কও।

দিল্লিতে গিয়ে কাজ কতটা হবে? মোর্চা নেতারা একান্তে বলছেন, পাহাড়-সমতলে একযোগে চাপ বাড়ায় বিমল গুরুঙ্গকে থেকে দ্রুত বন্‌ধ তোলার উপায় খুঁজতে হচ্ছে। কিন্তু এটাও ঠিক যে, আলাদা রাজ্যের দাবি নিয়ে আলোচনা না হলে তাঁরা বন্‌ধ তুলতে পারবেন না। অথচ আলাদা রাজ্যের ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কেন্দ্র আগ্রহ দেখায়নি। তা হলে? পাহাড়ের প্রবীণদের কেউ কেউ বলছেন, সে ক্ষেত্রে পাহাড়ে আরও শক্তিশালী স্বায়ত্তশাসন কিংবা জিটিএ চুক্তি সমীক্ষার প্রস্তাব পেলেও মোর্চার মুখরক্ষা হতে পারে। কিন্তু মোর্চা আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রস্তাব না দিলে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকা হবে কি না সন্দেহ, জানালেন বিজেপির দার্জিলিং জেলার একাধিক নেতা।

আলোচনার দরজা খুলতে গেলে যে হিংসা বন্ধ করতে হবে, সেটা আরও এক বার বুঝিয়ে দিয়ে মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘আন্দোলনের নামে স্টেশন, সংবাদমাধ্যমের গাড়ি না পুড়িয়ে কুইন অব হিলসের জনজীবন স্বাভাবিক করুক আন্দোলনকারীরা। তার পর আলোচনা চলুক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন