বিমল গুরুঙ্গ এখন বিজেপির শাঁখের করাত।
অমিতাভ মালিক নিহত হওয়ার পরে যে ভাবে পশ্চিমবঙ্গে গুরুঙ্গ বিরোধী জনমত তৈরি হয়েছে, তাতে বিমল সম্পর্কে নরম মনোভাব নিয়ে বিজেপি বেকায়দায়। গুরুঙ্গকে নিয়ে এর আগে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে রাজনাথ সিংহের কথা হয়েছিল। আলোচনা হয়েছিল রাজনাথ-অমিত শাহেরও। রাজনাথের বক্তব্য, গুরুঙ্গ এনডিএ শরিক কিন্তু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের রিপোর্ট যা বলছে, তাতে কেন্দ্রীয় সরকার তাঁকে কোনও ভাবে সমর্থন করতে পারে না। রাজনাথ একাধিক বার গুরুঙ্গের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মূলত দলের চাপে। বিজেপির বক্তব্য ছিল, দার্জিলিং সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়ার জেতা আসন। তা ছাড়া, গুরুঙ্গের কার্যকলাপ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক ব্যর্থতাকে তুলে ধরছে।
কিন্তু অমিতাভের মৃত্যুতে পরিস্থিতি ঘুরে গিয়েছে। সেটা এখন অমিত শাহরা বুঝছেন। গত কাল রাজ্য বিজেপির বৈঠকেও গুরুঙ্গ সম্পর্কে দলের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। চাপের মধ্যে তাই এখন অমিত শাহ, কৈলাস বিজয়বর্গীয়রা রাজ্য বিজেপিকে ধীরে চলার পরামর্শ দিয়েছেন। ঘটনা হল, বিমল এখনও বিজেপির উপর চাপ বাড়াচ্ছেন। এনডিএ ছাড়ারও হুমকি দিয়েছেন তিনি। তবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মুখ না খুললেও রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ আজ বিমলের হয়েই মমতাকে নিশানা করেছেন। ফেসবুক পোস্টে দিলীপ বলেন, ‘‘বিজেপি ও গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা আলাদা। তবে গুরুঙ্গের উপর রাজ্য সরকারের অযথা হিংসা মেনে নিচ্ছি না।’’ তাঁর বক্তব্য, বিমল যখন তৃণমূলের কাছে, তখন তিনি ভাল মানুষ আর এখন তাঁকে বলা হচ্ছে সন্ত্রাসবাদী।
দিলীপ যখন বিমলের হয়ে ব্যাট ধরেছেন, তখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক মনে করছে, দার্জিলিঙে যে মজুত অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে, তা গুরুঙ্গ বাহিনীরই। আর বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মনে করছেন, অমিতাভের মৃত্যুর পরে পশ্চিমবঙ্গে গুরুঙ্গ বিরোধী ক্ষোভ প্রবল হয়ে উঠেছে। সেই অবস্থায় তাঁকে নিয়ে সতর্ক পদক্ষেপ করতে হবে। বিজেপির এক শীর্ষ নেতার মতে, কার্গিলের সময়ে নিহত সেনার কফিনবন্দি দেহ এলে, কংগ্রেসের পক্ষে বাজপেয়ী সরকারকে দোষ দেওয়া সম্ভব ছিল না। অমিতাভকে ঘিরে বাংলায় এখন তেমনই আবেগ। আর দিলীপ ঘোষকে নিশানা করে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘অমিতাভ মালিকের হত্যাকাণ্ডের পরেও ওঁরা গুরুঙ্গের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। বুদ্ধি থাকলে কেউ এই পরিস্থিতিতে এ সব বলে না।’’