মাওবাদী ছকে গোর্খা আন্দোলন শহরেও

রাজ্যের মুখ্যসচিব মলয় দে-কে পাঠানো বার্তায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব রাজীব গৌবা বলেছেন, মাওবাদীদের কয়েকটি গণসংগঠন কলকাতার কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস থেকে গোর্খাল্যান্ডের আওয়াজ তোলার চেষ্টা চালাচ্ছে।

Advertisement

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:৩৫
Share:

গোর্খাল্যান্ড আন্দোলন শুধু পাহাড়েই থেমে থাকবে এমন নয়, তা কলকাতা শহরেও ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে রাজ্যকে সতর্ক করল কেন্দ্রীয় সরকার। রাজ্যের মুখ্যসচিব মলয় দে-কে পাঠানো বার্তায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব রাজীব গৌবা বলেছেন, মাওবাদীদের কয়েকটি গণসংগঠন কলকাতার কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস থেকে গোর্খাল্যান্ডের আওয়াজ তোলার চেষ্টা চালাচ্ছে।

Advertisement

মাওবাদী কার্যকলাপ নিয়ে প্রতি ছ’মাসে রাজ্যকে কিছু পরামর্শ দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সেই সূত্রেই গোর্খাল্যান্ড আন্দোলনের সঙ্গে মাওবাদীদের যোগসূত্রের কথা জানিয়েছে কেন্দ্র। স্বরাষ্ট্রসচিবের লেখা চিঠিতে বলা হয়েছে, মাওবাদীদের বিভিন্ন গণসংগঠন জাতিসত্তা এবং আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের কথা বলে কলকাতা শহরে দার্জিলিংয়ের পড়ুয়াদের একত্রিত করার চেষ্টা করছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দাবি, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে দার্জিলিং, সিকিম-সহ উত্তর পূর্ব থেকে আসা ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে ‘গোর্খা ডেমোক্রেটিক ফোরাম’ নামে সংগঠন গড়ে তুলেছে মাওবাদীরা। সেই সংগঠনের আড়ালেই গোর্খাল্যান্ডের সমর্থনে আন্দোলন শুরু হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা নর্থ ব্লকের।

মন্ত্রক আরও জানিয়েছে, ২০১১ সালে ২৪ নভেম্বর পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে মাওবাদীদের অন্যতম শীর্ষ নেতা কিষেনজি মারা যাওয়ার পরে পশ্চিমবঙ্গে মাওবাদী কার্যকলাপ অনেকটাই স্তিমিত হয়ে আসে। কিন্তু সম্প্রতি নকশালবাড়ি আন্দোলনের ৫০ বছর পালনকে সামনে রেখে মাওবাদী আদর্শঘেঁষা বেশ কিছু গণসংগঠন ফের সক্রিয় হয়েছে। তাদের সঙ্গে তলায় তলায় যুক্ত হচ্ছে কয়েকটি বামপন্থী দলও। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক কর্তা জানান, কাশ্মীরে পাথর ছোড়া শুরুর পর দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে বামপন্থী ছাত্ররা ‘আজাদি’ আন্দোলন শুরু করেছিল। তার প্রভাব পড়ে দেশ জুড়ে। এ বার সেই ধাঁচে কলকাতার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও গোর্খা আন্দোলন শুরু হতে পারে।

Advertisement

নবান্নের এক কর্তার বক্তব্য, ‘‘কেন্দ্রের সতর্কবার্তা পেয়ে আমরা যাদবপুর, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় এবং কয়েকটি কলেজের উপর নজর রাখছি। পাহাড়ের ছেলেমেয়েরা যে সব এলাকায় থাকে, সেই সব এলাকাতেও নজরদারি চালানো হচ্ছে।’’ তা ছাড়া, পাহাড়ে মাওবাদীদের যুক্ত থাকার কিছু প্রমাণও ইতিমধ্যেই মিলেছে বলে রাজ্যের দাবি। পাহাড়ে পর পর যে ভাবে বিস্ফোরণ হচ্ছে তার সঙ্গে অনেক ক্ষেত্রে জঙ্গলমহলে নাশকতার ঘটনার মিল রয়েছে বলেও মনে করছেন রাজ্য গোয়েন্দারা। এখন দিল্লির সতর্কবার্তা আসায় বিশেষ নজরদারি অব্যাহত থাকবে বলে জানান নবান্নের কর্তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন