জ্বলছে পুলিশের গাড়ি।—ফাইল চিত্র।
লাগাতার বন্ধে ব্যবসা বন্ধ। তাই চাঁদা আদায়ের সুযোগ কমছিল। এ বারে আগুন লাগিয়ে দোকান লুঠের অভিযোগ উঠল পাহাড়ে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে।
শনিবার গভীর রাতে চকবাজারে একটি জুতোর দোকান পুড়িয়ে দেওয়া হয়। রবিবার সকালে প্রথমে বিভিন্ন মহল থেকে দাবি করা হয়েছিল যে, বন্ধ উপেক্ষা করে দোকান খোলার চেষ্টা করায় আগুন লাগানো হয়েছে। পরে জানা যায়, দোকানের শাটার পুড়িয়ে-ভেঙে জুতো লুঠ করা হয়েছে।
এই ঘটনায় পাহাড়বাসীদের একটা বড় অংশ উদ্বিগ্ন। তাঁদের আশঙ্কা, আন্দোলনের রাশ যে ক্রমশ নেতাদের হাতছাড়া হচ্ছে, এই ঘটনা তারই ইঙ্গিত দেয়। বনবাংলো, সরকারি অফিস, বাস, পুলিশে জিপ জ্বালানো তো চলছিলই এত দিন। এ বার দোকানে আগুন লাগিয়ে লুঠপাট এই তাণ্ডবে নতুন মাত্রা যোগ করল।
ব্যবসায়ীদের একাংশের দাবি, অনেকেই আন্দোলনের নামে চাঁদা আদায় করছে। এ বার লুঠপাট শুরু হলে নৈরাজ্যের দিকে এগোবে পাহাড়। এক ব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘দুষ্কৃতীরা সক্রিয় হয়ে উঠছে। তাই এখনই নেতাদের রাশ শক্ত করে ধরতে হবে।’’ মোর্চা নেতারা এ দিনও দাবি করেন, কোনও রকম হামলার সঙ্গে তাঁদের যোগ নেই। মোর্চার এক কেন্দ্রীয় কমিটির নেতার দাবি, ‘‘আগুন লাগানোর ঘটনাগুলি নিয়ে তদন্ত হোক। তা হলেই জানা যাবে পিছনে কারা রয়েছে। আন্দোলনকে বদনাম করার চেষ্টা হচ্ছে।’’ মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরির দাবি, ‘‘সংবিধানসম্মত একটি দাবি নিয়ে গণতান্ত্রিক ভাবে আমরা আন্দোলন চালাচ্ছি। পাহাড়বাসী আন্দোলনের সঙ্গে রয়েছে।’’
আরও পড়ুন: প্রকাশ্যে ইস্তফা দিতে চাপ তৃণমূলকে
এ দিনই দার্জিলিঙে শিল্পী ও শিক্ষকরা গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে মিছিল করেন। সঙ্গীত শিল্পী কুমার সুব্বাও রাজ্য সরকারের দেওয়া সঙ্গীত সম্মান ফিরিয়ে দেন। শিক্ষকদের মুখপাত্র তথা একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা পূর্ণিমা রোকা বলেন, ‘‘রাজ্য যতই মাইনে কাটার ভয় দেখাক, আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।’’ পাহাড়ে পানীয় জল সরবরাহ এখনও স্বাভাবিক হয়নি, রসদ সংগ্রহেও সমস্যা চলছে। আগামী মঙ্গলবার ফের পাহাড়ের সর্বদল বৈঠক রয়েছে। সে দিকেই এখন নজর পাহাড়বাসীর।
সিকিমে যাতে নির্বিঘ্নে যেতে পারে গাড়ি, তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। এই নির্দেশ মেনে আজ, সোমবার থেকে ওই রাজ্যে পণ্য-আনাজ যাওয়া শুরু হবে। পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ সেই পরিবহণের নিরাপত্তা কী ভাবে নিশ্চিত করবে, তা নিয়ে প্রশ্ন করায় শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার নীরজকুমার সিংহ বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশ শুনেছি। ৮ জুলাই থেকেই দার্জিলিং, কালিম্পঙের পুলিশ সুপারকে চিঠি দিয়ে সমন্বয় রাখা হচ্ছে। মালবাহী গাড়ির চাইলে নিরাপত্তাও দেওয়া হচ্ছে।’’
নর্থ বেঙ্গল মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সঞ্জয় টিব্রেয়াল বলেন, ‘‘দেশের সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ মেনে সিকিমে নির্বিঘ্নে পণ্যবাহী গাড়ি যাবে বলে জেনেছি। দেখা যাক।’’