Food as Medicine

ওষুধ নয়, পথ্য! রোগীর শক্তি বৃদ্ধির পুরনো উপায় কাজে লাগতে পারে এ যুগেও, অন্য ভূমিকায় অন্য ভাবে

কথায় আছে ‘প্রিভেনশন ইজ় বেটার দ্যান কিয়োর’। রোগ হওয়ার আগে তাই রোগকে রুখে দেওয়ার ব্যবস্থা করা জরুরি। পথ্য সেই কাজটি ভাল ভাবেই করতে পারে। পুরনো দিনের তেমনই পাঁচ পথ্যের সন্ধান রইল।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৩:৪৫
Share:

ছবি : সংগৃহীত।

রোগীকে সারিয়ে তুলতে ওষুধের চেয়ে পথ্যেই বেশি জোর দেওয়া হত এক কালে। কিন্তু এ যুগে সুস্থ হয়ে ওঠার জন্যও অতিরিক্ত সময় ব্যয় করার উপায় নেই। রোগী যাতে অল্প দিনে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে পারে, তার হাজারো উপায় নিত্যদিন ভেবে বার করছে চিকিৎসাবিজ্ঞান। ফলে বিস্মরণে যাচ্ছে পুরনো পথ্য, যা রোগীকে শুধু সুস্থ করে তুলত না, তার পাশাপাশি রোগের সঙ্গে যুদ্ধ করার ক্ষমতা আবার ফিরিয়ে আনত। ভিতর থেকে বলবৃদ্ধি করত শরীরের। সে কালের সেই পথ্য এ কালেও কাজে লাগানো যেতে পারে। তবে তার জন্য অসুখ হওয়ার অপেক্ষা করলে চলবে না।

Advertisement

কথায় আছে ‘প্রিভেনশন ইজ় বেটার দ্যান কিয়োর’। রোগ হওয়ার আগে তাই রোগকে রুখে দেওয়ার ব্যবস্থা করা জরুরি। পথ্য সেই কাজটি ভাল ভাবেই করতে পারে। পুরনো দিনের তেমনই পাঁচ পথ্যের সন্ধান রইল, যা শীতে তো বটেই বছরের অন্যান্য সময়েও রোগ থেকে দূরে রাখে শরীরকে।

মরসুমি সব্জি দিয়ে হালকা মাছের ঝোল

Advertisement

বঙ্গের চিরকালীন পথ্য পাতলা শিঙি মাছের ঝোল। তবে এটি শুধু পেটের রোগের পথ্য নয়। হালকা মশলা এবং মরসুমি সব্জি দিয়ে তৈরি মাছের ঝোল শরীরের বলবৃদ্ধি এবং রোগ প্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধির জন্যও আদর্শ। এতে রয়েছে প্রোটিন, ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, ভিটামিন ডি, এবং ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, যা পেশি এবং হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য জরুরি। থাইরয়েড নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী। ওজন নিয়ন্ত্রণেও সহায়ক।

পাঁচন

জ্বর-সর্দি-কাশিতে বিভিন্ন গাছগাছালি জলে ফুটিয়ে তৈরি করা হত পাঁচন। এ যুগে যাকে কাড়া বলা হয়, তা বহু আগে থেকেই খাওয়ার চল ছিল। যষ্টিমধু, গোলমরিচ, বাসকপাতা, তুলসীপাতা, আদাশুঁট, গোটা ধনে ইত্যাদি নানা ধরনের ঔষধি দিয়ে তৈরি হত পুরনো দিনের সেই ‘কফ সিরাপ’। দিনে রাতে খেলে ঠান্ডা লাগার সমস্যা তো মিটতই। শীতে শরীর গরম করতেও সক্ষম এই পানীয়।

গঁদের লাড্ডু, পাঞ্জিরা ও শরবত

বাবলা গাছ বা জিওল গাছের কান্ড থেকে বেরনো আঠালো পদার্থকে বলা হয় গঁদের আঠা। তা দিয়ে নানা ধরনের খাবারও বানানো হয়। বিশেষ করে পেটের অসুখ, অজীর্ণ রোগ সারাতে এবং শীতে শরীরে উষ্ণতা জোগাতে, রোগ প্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধি করতে এটি অত্যন্ত উপযোগী। গঁদের সঙ্গে আটা, ঘি, গুড়, বাদাম, শুকনো ফল, পোস্ত এবং বিভিন্ন মশলা মিশিয়ে গঁদের লাড্ডু তৈরি করা হয়। পাঞ্জাবিরা আবার এই সমস্ত জিনিস দিয়েই তৈরি করেন পাঞ্জিরা। যা দেখতে অনেকটা ঝুরঝুরে পাউডারের মতো। গঁদ গরমকালেও পথ্য হিসাবে খাওয়া যেতে পারে। এটি গরম জলে ভিজিয়ে রেখে তাকে শীতল করে শরবত বানিয়ে খাওয়া হয়। বলা হয় গঁদ কাটিরা। এটি আবার শরীর শীতল রাখার জন্যও কার্যকরী। সন্তানসম্ভবা মায়েদের স্বাস্থ্যের জন্যও এটি উপকারী বলে মনে করা হয়।

নানা ধরনের খিচুড়ি

রোগীদের পথ্য হিসাবে খিচুড়ি খাওয়ার চল নতুন নয়। কেউ আতপ চাল আর মুগডালের খিচুড়ি রাঁধেন। কেউ রাঁধেন চালের সঙ্গে নানা ধরনের ডাল একসঙ্গে মিশিয়ে। এছাড়া রোগীদের সাবুদানার খিচুড়ি, ডালিয়ার খিচুড়িও দেওয়া হয়। অবাঙালিরা রোগীকে বাজরার খিচুড়িও খাওয়ান। প্রোটিন-ফাইবার এবং কিছু স্বাস্থ্যকর সব্জি এবং মশলার মিশ্রণে তৈরি এই হালকা খাবার রোগীকে যেমন শক্তি জোগায়, তেমনই রোগ প্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে।

নানা ধরনের তেতো তরকারি

শরীরকে জীবাণুমুক্ত করতে সাহায্য করে তেতো খাবার। নিম, উচ্ছে, করলা, পলতা ইত্যাদি নানা ধরনের তেতো পাতা এবং ফল দিয়ে তৈরি খাবার তাই রোগীকে খাওয়ানোর চল রয়েছে। শরীরকে টক্সিন মুক্ত করতে, হজমের সমস্যা দূর করতে, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ এবং প্রদাহের সমস্যা কমাতে রোজের পাতে নানা ধরনের তেতো খাবার রাখা যেতেই পারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement