দিন কয়েক আগে নদিয়ায় বিধায়ক মহুয়া মৈত্রের উপর রেশনের পচা চাল ছুঁড়ে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন গ্রামবাসীরা। সেই থেকে প্রকাশ্যে এসেছে ২ টাকা কেজি অচল চালের কথা। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে রেশন ডিলার-ডিস্ট্রিবিউটরদের গুদামে শুরু হয়েছে টানা তল্লাশিও। বৃহস্পতিবার সেই ডিলার-ডিস্ট্রিবিউটরদের একাংশ বর্ধমানে পাল্টা পচা চাল দেওয়ার জন্য খাদ্য দফতরকে কাঠগড়ায় তুললেন। বর্ধমান শহর লাগোয়া একটি গুদামে চাল আনতে গিয়ে তাঁরা অভিযোগ করেন, খাদ্য দফতরই নিম্নমানের চাল দিচ্ছে।
যদিও জেলা খাদ্য নিয়ামক দেবমাল্য বসু বলেন, ‘‘ডিস্ট্রিবিউটরেরা সরকারের বদনাম করার চেষ্টা করছেন। প্রতি তিন-চার মাস অন্তর পুরনো চাল পাল্টানো হয়। তা রেশনে পাঠানোর জন্য নয়।’’ এ দিন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘ওঁরা যাই বলুন, তল্লাশি চলবে। ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, কালিম্পং, নদিয়া, বাঁকুড়া, বর্ধমান-সহ আরও কয়েকটি জায়গায় নিম্নমানের চাল, গম মিলেছে। যা রেশনে বণ্টনের জন্য দেওয়া হয়নি।’’ তিনি জানান, ইতিমধ্যে ৪২ জন ডিলার-ডিস্ট্রিবিউটরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
মেমারির সাতগেছিয়ায় বুধবার বিকেলে এক রেশন ডিলারের গুদামে আচমকা হাজির হয়ে খারাপ চাল ও গমের নমুনা দেখেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তার পরেই তাঁর নির্দেশে খাদ্য দফতর ও ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকেরা তদন্ত করেন। খাদ্য দফতর জানায়, সরকারের দেওয়া চালের সঙ্গে সেখানে অন্য চাল মেশানো হয়েছে। অভিযান চালিয়ে পূর্ব বর্ধমানে রেশনের পাঁচটি গুদামঘর সিল করা হয়েছে। বসিরহাটে কয়েকটি রেশন ডিলার এবং রেশনের দোকানে এ দিন অভিযান চালায় প্রশাসন।
চালের গুণমান নিয়ে তিনি যে খুশি নন, তা এ দিনও স্পষ্ট করেন মুখ্যমন্ত্রী। রায়গঞ্জের হেমতাবাদের প্রশাসনিক সভায় মমতা বলেন, ‘‘আমরা রাজ্যের মানুষকে দু’টাকা কেজি দরে চাল দিচ্ছি। তা কিনতে কেজি প্রতি ২৪ টাকা খরচ হয়। প্রতি কেজিতে ২২ টাকা করে ভর্তুকি দিতে হয়।’’ খাদ্যমন্ত্রীর দাবি, রেশনে যে চাল দেওয়া হয় তা ভাল। সেই চাল না দিয়ে একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী নিম্নমানের চাল রেশনে গ্রাহকদের দিচ্ছেন। এ বার সরকারের দেওয়া চাল কোথায় যাচ্ছে, কারা ওই অসাধু কাজের সঙ্গে যুক্ত তা জানতে সিআইডি তদন্ত করাতে চায় খাদ্য দফতর।