সংবিধান মেনে গড়া হয় বেতন কমিশন। আর সেই বেতন কমিশন যে-সব সুপারিশ করে, তা মেনে নিয়ে রাজ্য সরকার বিধি তৈরি করে বেতন-কাঠামো সংশোধন করে। এত আইনি ধাপ পেরিয়ে বেতন ও ভাতা চূড়ান্ত করা হয়। তাই ডিএ বা মহার্ঘ ভাতা কর্মীদের ‘অধিকার’ই।
বুধবার কলকাতা হাইকোর্টে এই মর্মেই সওয়াল করেন রাজ্য সরকারি কর্মী সংগঠনের আইনজীবী। তাঁর যুক্তি, বেতন কমিশন গড়া হয় সংবিধান মেনে। সেই জন্য ডিএ দেওয়া বা না-দেওয়া রাজ্য সরকারের ইচ্ছার উপরে মোটেই নির্ভর করে না।
স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনাল (স্যাট) গত বছর জানায়, ডিএ কর্মীদের কোনও অধিকার নয়। ডিএ দেওয়া রাজ্য সরকারের ইচ্ছার উপরে নির্ভর করে। স্যাটের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে মামলা করেছে রাজ্য সরকারি কর্মীদের দু’টি ইউনিয়ন। কিছু দিন সেই মামলা চলার পরে রাজ্যের অর্থ দফতরের এক কর্মীও ওই মামলায় যুক্ত হন। তার শুনানি চলছে বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্ত ও বিচারপতি শেখর ববি শরাফের ডিভিশন বেঞ্চে।
কর্মী সংগঠনের আইনজীবী সর্দার আমজাদ আলির প্রশ্ন, মুদ্রাস্ফীতির দরুন বাজারদরের সঙ্গে ভারসাম্য রাখতেই ১০ বছর অন্তর বেতন কমিশন গড়ে কেন্দ্র। এত দিন রাজ্যও নিয়মিত নিজস্ব বেতন কমিশন গঠন করেছে। রাজ্যের গড়া কমিশন রিপোর্ট দেয় ২০০৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি। কমিশনের সুপারিশ মেনে বেতন-কাঠামো সংশোধন করে বিধি তৈরি হয়। রাজ্যপাল তাতে সায় দেন। তার পরেও স্যাট কী ভাবে জানায়, ডিএ সরকারে ইচ্ছার উপরে নির্ভর করবে, প্রশ্ন তোলেন আমজাদ। ওই কৌঁসুলি আদালতে আরও জানান, বেতন কমিশনের সুপারিশ মেনে রাজ্য যে ডিএ দিচ্ছে না, তা নয়। দিচ্ছে। কিন্তু নিয়মিত বকেয়া ডিএ মেটাচ্ছে না। ন’মাসের বেশি বকেয়া পড়ে রয়েছে। কেন্দ্র যে-ভাবে বছরে দু’বার মহার্ঘ ভাতা দেয়, রাজ্য তা দিচ্ছে না।
ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, আজ, বৃহস্পতিবার ফের শুনানি হবে।