ভোট হওয়া ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনের জন্য নির্দেশিকা জারি করেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু আদালতের নির্দেশে থমকে রয়েছে বিনাযুদ্ধের আসনগুলিতে বিজ্ঞপ্তি জারি। এখন প্রশ্ন, তেমন আসন থাকা পঞ্চায়েতগুলিতে কী হবে? পঞ্চায়েত দফতরের নির্দেশিকা থেকে ইঙ্গিত মিলছে, ওই সব পঞ্চায়েত চালাবেন রাজ্য সরকারের আধিকারিকেরা।
গত ৯ তারিখ পঞ্চায়েত ভোট হওয়া ২০টি জেলার জেলাশাসকদের কাছে পাঠানো নির্দেশিকায় পঞ্চায়েত দফতর বলেছে, ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে বোর্ডের মেয়াদ শেষ হওয়া থেকে নতুন বোর্ড গঠন না-হওয়া পর্যন্ত অফিসারেরা তা চালাবেন। জেলা পরিষদে জেলাশাসক, পঞ্চায়েত সমিতিতে মহকুমাশাসক এবং গ্রাম পঞ্চায়েতে বিডিওরা দায়িত্বে থাকবেন।
এটা কি কার্যত প্রশাসক বসানোর সমতুল? পঞ্চায়েত দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, প্রশাসক বসানোর কোনও সংস্থান পঞ্চায়েত আইনে নেই। শুধু বলা আছে, আপৎকালীন পরিস্থিতিতে যদি নির্বাচিত প্রতিনিধিদের দিয়ে পঞ্চায়েত চালানো না-যায়, তা হলে সরকার তার কোনও অফিসারকে দৈনন্দিন কাজকর্ম চালাতে বলতে পারে। কেননা, পঞ্চায়েতের কাজ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেলে এমনকি কর্মীদের বেতন পেতেও সমস্যা হবে। এর আগে ২০০৭-’০৮ সালে জঙ্গলমহলে অশান্ত পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে কিছু ব্লকে এই ভাবে কাজ চালানো হয়েছিল। ২০১৩ সালেও পঞ্চায়েত ভোট দেরিতে হওয়ায় মেয়াদ শেষ হওয়া বোর্ডের কাজ সামলান সরকারি অফিসারেরা।
বিনা ভোটে জেতাদের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যে মামলা জারি হয়েছে, তার পরবর্তী শুনানি সোমবার। পঞ্চায়েত আধিকারিকেরা বলছেন, মামলার রায় বিনা ভোটে জেতাদের বিরুদ্ধে গেলে তো বটেই, এমনকি সে দিন শীর্ষ আদালত তার নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিলেও বিদায়ী বোর্ডের মেয়াদ ফুরনোর আগে নতুন বোর্ড গঠন করা সম্ভব নয়। কারণ, বিজ্ঞপ্তি জারির বিভিন্ন প্রক্রিয়া আছে। তাতে অন্তত এক মাস সময় লাগে। বোর্ড গঠন হতে চলা পঞ্চায়েতগুলিতেও অফিসারদের দায়িত্ব নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে বলে জানাচ্ছেন পঞ্চায়েত কর্তারা। কারণ, কিছু ক্ষেত্রে বিদায়ী বোর্ডের মেয়াদ শেষের আগে নতুন বোর্ড গঠনের প্রক্রিয়া শেষ না-ও হতে পারে।
সরকারি নির্দেশিকায় সব আসনে ভোট হওয়া ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে সাধারণ সভা ডেকে গ্রাম প়ঞ্চায়েতে প্রধান-উপপ্রধান, পঞ্চায়েত সমিতিতে সভাপতি, সহ সভাপতি এবং জেলা পরিষদে সভাধিপতি-সহ সভাপধিপতি নির্বাচন করতে বলা হয়েছে। কিন্তু এখনই স্থায়ী সমিতি বা উপ সমিতি গঠন করতে বারণ করা হয়েছে। কারণ, ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের সব স্তরেই জনপ্রতিনিধিরা পদাধিকারবলে কোনও না কোনও স্থায়ী সমিতির সদস্য হন। ফলে স্থায়ী সমিতি গঠনের ক্ষেত্রে বিনাযুদ্ধে জেতা প্রার্থীদের অংশগ্রহণ এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।