সস্তায় তুলাইপাঞ্জি খাওয়াবেন মমতা

বাজারের থেকে কিছুটা কম দামেই ওই সুগন্ধি চালের স্বাদ নিতে পারবেন রাজ্যবাসী। তবে চাহিদার তুলনায় তুলাইপাঞ্জির উৎপাদন কম। তাই ক’জনের পাতে তা পড়বে, সেই অঙ্কই ভাবাচ্ছে খাদ্য দফতরের কর্তাদের।

Advertisement

পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৮ ০২:৫৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তুলাইপাঞ্জি চালের গুণে এতটাই মুগ্ধ যে, ‘ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর’-এর ধাঁচে নিরন্তর এর প্রচার চালিয়ে যান। এ বার মোড়কবন্দি করে এবং রীতিমতো তকমা (ব্র্যান্ডিং) সেঁটে সেই চাল বিক্রি করবে রাজ্যের খাদ্য দফতর। বাজারের থেকে কিছুটা কম দামেই ওই সুগন্ধি চালের স্বাদ নিতে পারবেন রাজ্যবাসী। তবে চাহিদার তুলনায় তুলাইপাঞ্জির উৎপাদন কম। তাই ক’জনের পাতে তা পড়বে, সেই অঙ্কই ভাবাচ্ছে খাদ্য দফতরের কর্তাদের।

Advertisement

শুধু মুখ্যমন্ত্রী নন, যাঁরা বর্ধমানের গোবিন্দভোগ বা উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জের তুলাইপাঞ্জি চালের ভাত খেয়েছেন, তাঁদের বক্তব্য, এর স্বাদ জীবনভর মনে রাখার মতো। দেশ-বিদেশের অতিথিদের জন্য মমতা উপহারের যে-ডালি সাজান, তাতে তুলাইপাঞ্জির জায়গা পাকা। লন্ডন অলিম্পিক্সের খাদ্য উৎসবেও তুলাইপাঞ্জি পাঠিয়েছিল রাজ্য। প্রথম থেকেই মুখ্যমন্ত্রী এই চালের উৎপাদন বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বিপণনের উপরে জোর দিয়ে আসছেন। সরকারি উদ্যোগে বিভিন্ন মেলায় বা সুফল বাংলার মতো কিছু সরকারি বিপণন কেন্দ্রে মাঝেমধ্যে তুলাইপাঞ্জি চাল পাওয়া যায়। এ বার সংগঠিত ভাবে সারা বছরই ওই চালের বিপণনের পরিকল্পনা করছে খাদ্য দফতর।

খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানান, মান পরীক্ষার ভিত্তিতে দাম নির্ধারণের পরে আকর্ষক মোড়কে তুলাইপাঞ্জি বিক্রি করা হবে। চালের খাদ্যগুণ কেমন, সেই বিবরণের সঙ্গে সঙ্গে প্যাকেটে কত শতাংশ ভাঙা চাল রয়েছে, মোড়কে তা-ও লিখে দেওয়া হবে। নির্ধারিত দাম যা-ই হোক, রাজ্যের বাসিন্দারা যাতে কিলোগ্রাম-পিছু ১০-১৫ টাকা কমে ওই চাল কিনতে পারেন, সেই ব্যবস্থা করার চেষ্টা চলছে বলে জানান মন্ত্রী।

Advertisement

আরও পড়ুন: শহরের গরিবদের ফ্ল্যাট দিতে নয়া প্রকল্প

মাটির গুণ ও প্রাকৃতিক কারণেই সেরা তুলাইপাঞ্জি চাল হয় উত্তর দিনাজপুরের চারটি ব্লক— রায়গঞ্জ, কালিয়াগঞ্জ, হেমতাবাদ ও ইটাহারে। দক্ষিণ দিনাজপুরের দু’-একটি ব্লকে তুলাইপাঞ্জি হলেও তার মান রায়গঞ্জের মতো নয়। বর্ধমানের গোবিন্দভোগের মতোই স্বাদে-গন্ধে তুলাইপাঞ্জি বাংলার সেরা চালগুলির অন্যতম। রন্ধন বিশেষজ্ঞেরা বলেন, তুলাইপাঞ্জি চালের পোলাও নাকি মুখে লেগে থাকে! নানা প্রাকৃতিক গুণে সমৃদ্ধ ওই চালকে বাংলার সম্পদ হিসেবে ধরে রাখার জন্য রাজ্য সরকার বর্ধমানের গোবিন্দভোগের মতো তুলাইপাঞ্জির জিআইএস-স্বীকৃতি (ভৌগোলিক ভাবে চিহ্নিত করে নিজস্বতার তকমা আদায়) পেতে উদ্যোগী হয়েছে। নিজস্ব বিপণন পরিকাঠামো ব্যবহার করে খাদ্য দফতর কবে কিছুটা সস্তায় বঙ্গবাসীর পাতে তুলাইপাঞ্জির ভাত-পোলাও তুলে দিতে পারে, সেটাই দেখার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন