ভাটপাড়া-সহ গড়া হচ্ছে চারটি থানা

পুলিশ মহলের খবর, ভাটপাড়ায় একটি আউটপোস্ট বা ফাঁড়িকে থানায় পরিণত করার প্রস্তাবটি বেশ পুরনো। কিন্তু সেই প্রস্তাব এত দিন কার্যত ধামাচাপা পড়ে ছিল।

Advertisement

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০১৯ ০২:৩৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

লোকসভা ভোটের সময় থেকে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে গোলমাল হচ্ছে। তবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বেশি অবনতি হয়েছে ভাটপাড়া এলাকায়। এই অবস্থায় ভাটপাড়া, কাঁকিনাড়া বা ব্যারাকপুরের পরিস্থিতি সামলাতে অতিরিক্ত নতুন থানা চাইছে রাজ্য পুলিশ। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ওই সব এলাকায় নতুন থানা চেয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে রাজ্য সরকারের কাছে। নবান্ন সেই প্রস্তাব মেনে ভাটপাড়া থেকে বেলঘরিয়া পর্যন্ত নতুন চারটি থানা তৈরির প্রক্রিয়া শুরুও করে দিয়েছে।

Advertisement

পুলিশ মহলের খবর, ভাটপাড়ায় একটি আউটপোস্ট বা ফাঁড়িকে থানায় পরিণত করার প্রস্তাবটি বেশ পুরনো। কিন্তু সেই প্রস্তাব এত দিন কার্যত ধামাচাপা পড়ে ছিল। ভোট পর্বে, বিশেষত ভোটের পরে ভাটপাড়া-কাঁকিনাড়ার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপ হতে থাকায় প্রস্তাবটি নতুন করে জলবাতাস পেয়েছে। রাজ্যের অন্যতম বড় থানা হিসেবে পরিচিত জগদ্দল থানা ভেঙে ভাটপাড়ায় পৃথক থানা তৈরির সিদ্ধান্ত প্রায় চূড়ান্ত।

এমন সিদ্ধান্ত কেন?

Advertisement

পুলিশ শিবিরের ব্যাখ্যা, ভোট-পরবর্তী পরিস্থিতির মোকাবিলায় প্রাথমিক ভাবে ১৫ দিনের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ডিএসপি এবং ইনস্পেক্টরদের নিয়ে ১২-১৪টি ছোট দল তৈরি করা হয়েছিল। গত ২৪ দিন ধরে ভাটপাড়া, কাঁকিনাড়া, জগদ্দল এলাকায় মোতায়েন থাকা পুলিশকর্মীর সংখ্যা ৭৫০। আপাতত এই ব্যবস্থা চালু থাকবে। পুলিশ আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, ১০-১৫ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় এই বিপুল পুলিশি ব্যবস্থাই প্রমাণ করছে, পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। এখন ভাটপাড়া ফাঁড়িতেই থানার থেকে বেশি সংখ্যায় পুলিশ রয়েছে। অনেক পুলিশকর্মী আহত।

শুধু ভাটপাড়া থানা নয়। খড়দহ থানা ভেঙে নতুন রহড়া থানা তৈরিরও প্রস্তাব দিয়েছে রাজ্য পুলিশ। বেলঘরিয়া থানা ভেঙে কামারহাটি ও দক্ষিণেশ্বর থানা গড়ার প্রস্তাবও জমা পড়েছে নবান্নে। সব প্রস্তাবই ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে বিবেচনা করছে রাজ্য সরকার। পুলিশি সূত্রের খবর, গোটা রাজ্যে এই পর্বে অন্তত ৪০টি নতুন থানা তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে সরকারকে।

লোকসভা ভোটের ফলপ্রকাশের পরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল ভাটপাড়া-কাঁকিনাড়া এলাকা। রাজনৈতিক এবং গোষ্ঠী-সংঘর্ষ থামাতে প্রথম দিকে ভোটের কাজে আসা কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ব্যবহার করা হলেও পরে রাজ্য পুলিশকেই সেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামাল দিতে হয়। ভাটপাড়া পুরসভা বিজেপির হাতে চলে যায়। কয়েক দিন আগে মুখ্যমন্ত্রীর ভাটপাড়া সফরে পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে ওঠে।

সোমবার রাতে ভাটপাড়ার বারুইপাড়ায় বোমার আঘাতে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত চার জন। ওই গোলমালের জন্য বিজেপি-কে দায়ী করেছে তৃণমূল। যদিও বিজেপি তা অস্বীকার করেছে।

আধিকারিকেরা মনে করছেন, গোলমেলে পরিস্থিতি এত দিন ধরে চলতে থাকায় নতুন থানা গঠনের প্রস্তাবে সিলমোহর দিতে আর দেরি করতে চায়নি রাজ্য সরকার।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন