‘নীরবতা’ নয়, প্রশাসনের সক্রিয়তা চান রাজ্যপাল

উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায় মঙ্গলবার প্রশাসনিক বৈঠকের জন্য গিয়েও ‘ব্যর্থ’ হয়ে ফিরে আসতে হয় রাজ্যপালকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৯ ০৪:০৩
Share:

—ফাইল চিত্র।

দুই ২৪ পরগনায় তাঁর সফরে প্রশাসনিক কর্তাদের ‘অসহযোগিতা’য় এ বার রাজ্য সরকারের শীর্ষ স্তরের হস্তক্ষেপ চাইলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের সঙ্গে প্রশাসনিক কর্তাদের এই ‘আচরণ’ নিয়ে রাজ্যের শীর্ষ মহলের ‘নীরবতা’র সমালোচনাও করেছেন রাজ্যপাল।

Advertisement

উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায় মঙ্গলবার প্রশাসনিক বৈঠকের জন্য গিয়েও ‘ব্যর্থ’ হয়ে ফিরে আসতে হয় রাজ্যপালকে। তাঁর ক্ষোভ সংবাদমাধ্যমের সামনে ব্যক্ত করার পরেও প্রশাসনের শীর্ষ স্তর নীরব। সেই সূত্রে বুধবার টুইটারে প্রশাসনকে রাজ্যপালের সতর্ক-বার্তা, ‘‘এ ভাবে চুপ করে থাকলে সারা জীবনই চুপ করে থাকতে হবে! সেই দিনটা বোধহয় আমরা কেউ দেখতে চাই না। এটা এড়ানো উচিত।’’

রাজ্যপাল টুইট করার পরেও রাজ্য সরকারের তরফে কেউ সরাসরি কোনও জবাব দিতে চাননি। শিক্ষামন্ত্রী এবং তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাজ্যপালের যা মনে আসছে, তা-ই বলছেন। অনেক রাজ্যেপালকে দেখেছি, কিন্তু এমন রাজ্যপাল আগে দেখিনি! যদি কোনও ব্যাপারে সরকারের সঙ্গে দ্বিমত হয়, তা হলে তা রাজভবনের অন্দরেই মিটিয়ে নিতে হয়। বাংলার মানুষ সব দেখছে। এ সব বলে বাংলার মননকে, উন্নয়নকে ধাক্কা দেওয়া যাবে না।’’

Advertisement

তাঁর সঙ্গে প্রশাসন অসহযোগিতা করলেও দুই জেলায় গিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে তিনি যে অভিভূত, তা-ও উল্লেখ করেছেন রাজ্যপাল। শীর্ষ কর্তারা না থাকলেও দু-এক জন নবীন আধিকারিকের সঙ্গে রাজ্যপালের দেখা হয়েছে জেলা-সফরে। ওই তরুণ অফিসারেরা যাতে আগামী দিনে সব প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে কাজের যোগ্য পরিবেশ পায়, তা-ও সুনিশ্চিত করার আবেদন জানিয়েছেন রাজ্যপাল। রাজ্য প্রশাসনের এই ‘অসহযোগিতা’র পরিবেশ কী ভাবে কাটানো সম্ভব, তা নিয়ে শিক্ষাবিদ, রাজনীতিক, সমাজকর্মীদের সঙ্গে আলোচনাতেও আগ্রহী ধনখড়।

রাজ্যপালের এই ভূমিকা ঘিরে রাজনৈতিক বিতর্কও অব্যাহত। রাজ্যপালের সঙ্গে রাজ্য সরকারের আচরণের নিন্দা করে বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় এ দিন হুগলির ধনেখালিতে বলেছেন, ‘‘যাঁরা রাজ্যপালকে সম্মান দিতে পারে না, তাঁরা আবার সাধারণ মানুষকে কী করে সম্মান দেবে? মানুষ আগামী ভোটে এর যোগ্য জবাব দেবে।’’ বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘রাজ্যপাল পদের যৌক্তিকতা নিয়েই আমাদের প্রশ্ন আছে। সেটা নীতিগত অবস্থান। কিন্তু যতক্ষণ রাজ্যপাল সাংবিধানিক প্রধান, তাঁকে মানতে হবে। তাঁকে তো বলার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। এখন যাঁরা রাজ্যপালের বিরুদ্ধে বলছেন, বিরোধী দলে থাকার সময়ে তাঁরাই রাজ্যপালের সক্রিয়তা চাইতেন!’’ সিপিআই (এম-এল) লিবারেশনের রাজ্য সম্পাদক পার্থ ঘোষের মতে, রাজ্যপালের ‘অতি-সক্রিয়তা’ ক্ষমতার দু’টি কেন্দ্র তৈরি করবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement