রাজ্যপালের ‘রাজনীতি’ বিবৃতি বিধানসভায়

জেলাসফরে গিয়ে মঙ্গলবার মুর্শিদাবাদে প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে উন্নয়ন-বৈঠকে  বসে‌ছিলেন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। সে জন্য  সরাসরি চিঠিও দিয়েছিলেন ওই জেলার প্রশাসনিক কর্তাদের। বুধবার রাজ্যপালের ওই বৈঠক নিয়ে উত্তপ্ত রইল বিধানসভা। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৪:৪৯
Share:

রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। —ফাইল চিত্র।

জেলাসফরে গিয়ে মঙ্গলবার মুর্শিদাবাদে প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে উন্নয়ন-বৈঠকে বসে‌ছিলেন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। সে জন্য সরাসরি চিঠিও দিয়েছিলেন ওই জেলার প্রশাসনিক কর্তাদের। বুধবার রাজ্যপালের ওই বৈঠক নিয়ে উত্তপ্ত রইল বিধানসভা।

Advertisement

এ দিন বিধানসভায় শিক্ষা তথা পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির উদ্দেশে রাজ্যপাল সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন। কেন্দ্রীয় সরকার এবং কেন্দ্রের শাসক দলের হয়ে তিনি রাজ্যপালের পদকে কলঙ্কিত করেছেন।’’ রাজ্যপাল এ ভাবে চিঠি দিয়ে কোনও বৈঠক ডাকতে পারেন না বলে দাবি করে পার্থবাবু বলেন, ‘‘যে ভাবে রাজ্যপাল সংবিধান বিরোধী কাজ করেছেন, তার নিন্দা করছি।’’

সভায় পরিষদীয় মন্ত্রীর বিবৃতি শুনে কংগ্রেসের তরফে অসিত মিত্র এবং বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী বিষয়টির উপর আলোচনার দাবি জানান। সরকারি ভাবে এ ব্যাপারে প্রস্তাব এলে বিষয়টি বিবেচনা করে দেখার আশ্বাস দেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। অধিবেশনের পরে সুজনবাবু বলেন, ‘‘সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে এর আগে অনেক কড়া ভাষায় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সমালোচনা করেছেন বিভিন্ন রাজ্যপাল। তখন বিরোধী দল হিসেবে তৃণমূল কিন্তু রাজ্যপালের ভূমিকার প্রশংসাই করেছিল। এখন নিজেরা শাসক হয়ে সব বদলে গেল!’’

Advertisement

রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ অবশ্য বলেন,‘‘সংবিধানে রাজ্যপালের যে ক্ষমতার কথা বলা আছে, তাতে তিনি জেলায় গিয়ে বৈঠক করতেই পারেন। সৈয়দ নুরুল হাসান, বীরেন জে শাহ, গোপালকৃষ্ণ গাঁধীর মতো রাজ্যপালেরা এমন বৈঠক আগেও করেছেন। আসলে সরকার যে মিথ্যা প্রচার চলছে তা রাজ্যপালের সামনে জেলার অফিসারেরা জানিয়ে দিতে পারেন, সেই ভয়ে সরকার হল্লা করছে। এর মূলে রয়েছে রাজনীতি।’’ রাজভবন অবশ্য বুধবার এ নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি। ঘনিষ্ঠমহলে কেশরীনাথ জানিয়েছেন, এ ভাবে রাজ্যপালের পদের গরিমা কালিমালিপ্ত করা হচ্ছে। তবে তিনি এখনই কিছু বলতে চান না। লোকসভার প্রাক্তন স্পিকার সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের মতে, ‘‘বিষয়টি যতটা না সাংবিধানিক তার চেয়ে বেশি রাজনৈতিক। রাজ্যপাল চিঠি লিখে রিপোর্ট চাইতে বা বৈঠক করতেই পারেন।’’ মুম্বই হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি চিত্ততোষ মুখ্যোপাধ্যায়ের কথায়,‘‘ রিপোর্ট চাওয়ায় নয়, রাজ্যপাল কেন্দ্রকে রিপোর্টও পাঠান। সে জন্য মন্ত্রিসভার সঙ্গে তাঁকে আলোচনাও করতে হয় না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন