সাত নম্বর সাত পাকে বিপাকে বর

একাধিক ‘বিয়ে’ করার অভিযোগে গ্রেফতার করা হল এক যুবককে। মালদহের পুরাতন মালদহ পুরসভার বাঁশহাট্টি এলাকায় ‘বিয়ে’র আসর থেকেই গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। তাঁর মা ও ঘটককেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশের দাবি, সুশান্ত তালুকদার নামে ওই যুবক স্বীকারও করেছেন যে, তিনি এর আগে বেশ কয়েকবার ‘বিয়ে’ করেছেন। জেরার মুখে তিনি জানিয়েছেন, গত ৫ বছরে ৬ বার তিনি ‘বিয়ে’ করেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৫ ০৩:১৩
Share:

পুরাতন মালদহ থানায় ধৃত সুশান্ত তালুকদার। মনোজ মুখোপাধ্যায়ের তোলা ছবি।

একাধিক ‘বিয়ে’ করার অভিযোগে গ্রেফতার করা হল এক যুবককে। মালদহের পুরাতন মালদহ পুরসভার বাঁশহাট্টি এলাকায় ‘বিয়ে’র আসর থেকেই গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। তাঁর মা ও ঘটককেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

Advertisement

পুলিশের দাবি, সুশান্ত তালুকদার নামে ওই যুবক স্বীকারও করেছেন যে, তিনি এর আগে বেশ কয়েকবার ‘বিয়ে’ করেছেন। জেরার মুখে তিনি জানিয়েছেন, গত ৫ বছরে ৬ বার তিনি ‘বিয়ে’ করেছেন। তাঁর দাবি, প্রতিবারই ‘স্ত্রী’-রা কয়েক মাসের মধ্যেই তাঁকে ছেড়ে চলে যান। কিন্তু তাঁর মা একা থাকেন বলে তিনি তখন আবার ‘বিয়ে’ করেন। সেই ভাবেই বৃহস্পতিবার রাতে তিনি বাঁশহাট্টির বাসিন্দা উত্তম আচার্যের ছোট মেয়েকে ‘বিয়ে’ করতে গিয়েছিলেন।

অনুষ্ঠান তখন বেশ জমে গিয়েছে। মন্ত্র পড়া হচ্ছে। মালাবদলও হয়ে গিয়েছে। হঠাৎই স্থানীয় এক অটোচালকের নজর পড়ে ‘বর’-এর উপরে। তিনি দেখেন, এই যুবকই বছর তিনেক আগে তাঁর অটোতে চেপে ইংরেজবাজারের আমজামতলায় ‘বিয়ে’ করতে গিয়েছিলেন। অনুষ্ঠান বাড়িতে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে সে কথা। কনের বাড়ির লোকজন চেপে ধরেন সুশান্তকে। উত্তমবাবুর জামাই
মদন সরকার বলেন, ‘‘সুশান্ত তখন সকলের সামনেই স্বীকার করে যে, ও এর আগে অনেকবার বিয়ে করেছে।’’ পরে তাঁরা থানায় প্রতারণার অভিযোগও করেন। আদালতে তিন জনেরই ১৪ দিনের জেল হেফাজত হয়েছে। ঘটকের অবশ্য দাবি, সুশান্তের অনেকবার করে ‘বিয়ে’র ঘটনা তাঁর জানা ছিল না।

Advertisement

মালদহের মনস্কামনাপল্লির বাসিন্দা সুশান্ত পেশায় বেসরকারি নিরাপত্তা রক্ষী। কেন সে বারবার ‘বিয়ে’ করেছে, তার কারণ অবশ্য এখনও অজানা। জেলা পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কী কারণে সে এমন করত, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, একবার বিয়ে করার পরে স্ত্রী-র সঙ্গে আইনানুগ ভাবে বিচ্ছেদ না করে আবার বিয়ে করা দণ্ডনীয় অপরাধ। তবে পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, এখন সবার আগে সুশান্তর আগের ‘স্ত্রী’দের খোঁজ করা হবে।

উত্তমবাবুর মেয়েকে ‘বিয়ে’ করার জন্য সুশান্ত পণ বাবদ ২১ হাজার টাকা, একটি সোনার আংটি এবং মেয়ের কানের দুল দাবি করেন। তার মধ্যে তাঁকে ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন মদনবাবু।

পুলিশ জেনেছে, সুশান্তর বাড়ি ছিল ইংরেজবাজারের গয়েশপুরে। সুশান্তের বাবা সুশীল তালুকদার পূর্ত দফতরে চতুর্থ শ্রেণির কর্মী ছিলেন। বছর চারেক আগে তিনি মারা যাওয়ার পরে বাড়ি বিক্রি করে মা-ছেলে ভাড়া বাড়িতে ওঠেন। মনস্কামনাপল্লিতে তাঁরা এসেছেন ৬ মাস আগে। প্রতিবেশীদের বক্তব্য, সুশান্তদের পরিবারে মা- ছেলে ছাড়া অন্য কোনও মহিলাকে তাংরা দেখেননি। কেন সুশান্ত এতবার করে ‘বিয়ে’ করতেন আর কেনই বা তাঁর দাবি মতো স্ত্রীরা তাঁকে ছেড়ে চলে যেতেন, তা তাঁরাও জানেন না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন