সংঘর্ষের পরে ভাতার কলেজের সামনে পুলিশি পাহারা। — নিজস্ব চিত্র।
ফের তৃণমূলের ছাত্র সংগঠনের দুই গোষ্ঠীর লড়াইয়ে অশান্ত হল শিক্ষাঙ্গন। এ বারের ঘটনাস্থল ভাতারের দাশরথি তা কলেজ। ঘটনার কেন্দ্রে এক ছাত্রীর সঙ্গে বহিরাগতদের অশালীন আচরণ। তার প্রতিবাদ করায় কলেডে ঢুকতে মারধর। বহিরাগতেরা টিএমসিপি-র এক ‘বহিষ্কৃত’ নেতার অনুগামী। যাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন কলেজেরই টিএমসিপি সমর্থকেরা। কলেজে গোলমালের জেরে দু’পক্ষের চার জন গুরুতর জখম হয়ে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। দু’পক্ষ পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে।
শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বিষয়টিকে ‘বিক্ষিপ্ত ঘটনা’ বলে অভিহিত করেছেন। ক’দিন আগেই সবং কলেজে ছাত্র খুনের অভিযুক্ত টিএমসিপি সমর্থকেরা। কিন্তু মন্ত্রীর দাবি, ‘‘আমাদের ৯০ শতাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঠিক ভাবে চলছে। দু’একটা গণ্ডগোল হলে তা বিক্ষিপ্ত ঘটনা।’’ তাঁর আশ্বাস, ‘‘তৃণমূলের মধ্যে যে অন্তর্দ্বন্দ্ব, তা কড়া হাতে মোকাবিলা করা হবে।’’
কলেজের ছাত্রীদের অভিযোগ, রোজই বর্ধমান-কাটোয়া রাস্তার ধারে সকাল থেকে বহিরাগত ছাত্রেরা বসে থাকে। ছাত্রীদের প্রতি কটূক্তি করে। বৃহস্পতিবার অধ্যক্ষের ঘরের কাছে এক বহিরাগত প্রথম বর্ষের এক ছাত্রীর সঙ্গে অভব্য আচরণ করেছিল। কলেজের ছাত্রী তামান্না সুলতানা, আইভি সুলতানার কথায়, ‘‘এক শিক্ষক প্রতিবাদ করলে আমরাও ক্লাস থেকে বেরিয়ে গিয়ে চেঁচামেচি করি। তা শুনে বহিরাগতেরা বলে, ‘যা খুশি তাই করব। যা পারিস করে নিস।’ আমাদের দিকে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করে।’’ এর প্রতিবাদে টিএমসিপি সমর্থকদের একাংশ এ দিন বর্ধমান-কাটোয়া রাজ্য সড়ক অবরোধ করেন। কয়েক জন পড়ুয়া অধ্যক্ষের কাছে অভিযোগও জমা দেন। টিএমসিপি-র একাংশের অভিযোগ, তাঁরা অধ্যক্ষের ঘরের বাইরে আসতেই কলেজের কিছু পড়ুয়া ও বহিরাগত ছাত্রেরা মিলে হামলা চালায়। টিএমসিপি-র এই গোষ্ঠীর নেতা শেখ সাদ্দাম অভিযোগ করেন, “বহিরাগত ছাত্রদের কলেজে ঢোকা বন্ধ করার দাবি তুলতেই ছাত্রীদের উপরে হামলা হল। কয়েক জনকে মারধর করা হল।”
টিএমসিপি-র যে ‘বহিষ্কৃত’ ভাতার ব্লক সভাপতি সঞ্জিত দত্তের বিরুদ্ধে বহিরাগতদের মদত দেওয়ার অভিযোগ, তিনি অবশ্য সব অস্বীকার করেেছন। তাঁর দাবি, “এসএফআই ও সিপিএমের মদতে পুষ্ট কিছু বহিরাগত আমাদের ছাত্রদের মারধর করেছে।” যা শুনে এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সৌমেন কার্ফা পাল্টা বলেন, “টিএমসিপি গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামলাতে না পেরে এখন আমাদের খাড়া করতে চাইছে!’’