সপ্তাহখানেক আগেই পুজোর মুখে পাহাড়ে অনির্দিষ্ট কালের বন্ধ ডাকার হুমকি দিয়েছিলেন বিমল গুরুঙ্গ। তাতে আশঙ্কার মেঘ ঘনিয়েছিল পর্যটকদের মনে। কিন্তু অবস্থান বদলে এ বার সেই পর্যটকদের জন্যই পাহাড়ে দুর্গাপুজো করার সিদ্ধান্ত নিল জিটিএ। এত দিন পুজো উপলক্ষে মেলা করেছে জিটিএ। করেছে সাংস্কৃতিক
অনুষ্ঠান। কিন্তু নিজেদের ব্যানারে পুজো এই প্রথম।
দার্জিলিঙের চৌরাস্তা, কালিম্পঙের জনমুক্তি পার্ক, মিরিকের মোটর স্ট্যান্ড এবং কার্শিয়াঙের গোর্খা দুখ নিবারক সম্মেলন হলে পুজোর আয়োজন হয়েছে। জিটিএ- র বক্তব্য, পুজোর ক’দিন পাহাড়ে এসে পর্যটকরা যাতে ‘বাইরে আছি’ এমন না মনে করেন, তার জন্যই এই উদ্যোগ। জিটিএ-র এই উদ্যোগকে অবশ্য নিছকই পুজো আয়োজন ভাবতে রাজি নন পাহাড়ের রাজনৈতিক মহল।
মহালয়ার দু’দিন আগেই পাহাড়ে ১২ ঘণ্টার বন্ধ ডেকে চাপে পড়েছিল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন লাগাতার বন্ধেরও। এতে ব্যবসায়ীরা যেমন আশঙ্কায় ভুগতে শুরু করেছিলেন, তেমনিই উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছিল পর্যটকদের মধ্যেও। এতে ঘরে বাইরে চাপের মুখে পড়তে হয় মোর্চাকে। দলের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে মোর্চা নেতাদের একাংশ দাবি করেন। এখন পুজোর আয়োজন করে পর্যটকদের বার্তা দিয়ে প্রবল চাপ থেকে মোর্চা প্রধান তথা জিটিএ-এর চিফ বিমল গুরুঙ্গ কিছুটা অন্তত রেহাই পাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে দলের অন্দরের খবর। ইতিমধ্যেই পুজো শুরু হয়ে গিয়েছে পাহাড়ে।
গত শনিবার দার্জিলিঙের চৌরাস্তায় দেবী প্রতিমা পৌঁছেছে। চৌরাস্তায় ভজনও হচ্ছে সকাল-সন্ধ্যে। সামিল পর্যটকদের অনেকেই। কেউ আরতির দর্শক, কেউ বা আরতির প্রস্তুতিতে হাত লাগিয়েছেন, কেউ শুধুই এই পুজোর আয়োজনে নিজেকে এক ফ্রেম-বন্দি করতে ব্যস্ত।
পুজো আয়োজনের সঙ্গে চাপ অথবা কোনও বার্তার সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেছেন জিটিএ-এর সাংস্কৃতিক বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাসদ বিনয় তামাঙ্গ। তিনি বলেন, ‘‘এবারই প্রথম জিটিএ পুজোর আয়োজন করেছে। তার অন্যতম উদ্দেশ্য হল পর্যটকদের উৎসবে সামিল করা। পাহাড়ের পর্যটন প্রসারেই এই উদ্যোগ।’’