খটখটে। নিজস্ব চিত্র
দেশের পূর্ব প্রান্তে ‘দিদি’র রাজ্য বাংলা এবং পশ্চিম প্রান্তে ‘মোদী’র রাজ্য গুজরাত। রাজনীতিতেও দু’জন ভিন্ন মেরুতে। কিন্তু বাংলা ও গুজরাতকে মিলিয়ে দিলেন বরুণদেব!
১ জুন থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর— মৌসম ভবনের খাতায় এটাই দেশের বর্ষাকাল। সেই বর্ষার মরসুম শেষে মৌসম ভবনের তথ্য বলছে, দেশের বেশির ভাগ রাজ্যে স্বাভাবিক বর্ষণ হলেও গুজরাত আর শস্যশ্যামলা বাংলার ভাগ্যে এ বার স্বাভাবিক বৃষ্টি জোটেনি। গুজরাতে বর্ষার ঘাটতি ২৮ শতাংশ, পশ্চিমবঙ্গে ২০ শতাংশ। চলতি মরসুমে গোটা দেশে অতিবৃষ্টি হয়েছে শুধু কেরলে। আর সেই বর্ষণ এমনই প্রবল যে, ভয়াবহ বন্যায় বিধ্বস্ত ‘ঈশ্বরের আপন রাজ্য’।
বৃষ্টির দেবতা বরুণদেবের কৃপা থেকে বঞ্চিতের তালিকায় রয়েছে বিহার, ঝাড়খণ্ডও। ত্রিপুরা, মেঘালয়, মিজোরামেও বর্ষণ স্বাভাবিকের কোঠা ছোঁয়নি। কেন এমন হাল? পশ্চিমের গুজরাতের প্রকৃতি অনেকটা শুষ্ক হলেও বাংলা তো বর্ষার দাক্ষিণ্য থেকে সে-ভাবে বঞ্চিত হয় না! অধিকাংশ মরসুমেই স্বাভাবিক বর্ষণ হয় এখানে। তা হলে এই বিরূপ বর্ষা কি জলবায়ু বদলের ইঙ্গিত?
আবহবিজ্ঞানীরা বলছেন, বর্ষার চরিত্রে কিছু তারতম্য ধরা পড়ছে ঠিকই। কিন্তু এক বছরের তথ্য দেখে জলবায়ু বদলের তত্ত্বে সিলমোহর দেওয়া যায় না। এর আগে অনেক বছরেই তো বাংলায় স্বাভাবিক বৃষ্টি হয়েছে। প্রতি বছরই বিভিন্ন রাজ্যে বর্ষার মেজাজমর্জিতে হেরফের হয়। এ বছর বর্ষার পূর্বাভাসেই মৌসম ভবন জানিয়েছিল, গোটা দেশে স্বাভাবিক বর্ষণ হলেও পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতে ঘাটতি থাকবে। তবে এটাও ঠিক যে, চলতি বছরে বঙ্গোপসাগরে একের পর এক ঘূর্ণাবর্ত এবং নিম্নচাপ দানা বেঁধেছে। তার পরেও বাংলার কপালে পর্যাপ্ত বর্ষণের শিকে ছিঁড়ল না কেন?
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল (পূর্বাঞ্চল) সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, এ বছর অধিকাংশ নিম্নচাপ-ঘূর্ণাবর্তই ওড়িশার দিকে চলে গিয়েছে। ফলে ওড়িশায় পর্যাপ্ত বৃষ্টি পেয়েছে, কিন্তু বাংলা-বিহার-ঝাড়খণ্ডের কপালে তা জোটেনি। ওড়িশা হয়ে বহু নিম্নচাপ চলে গিয়েছে ছত্তীসগঢ়ের দিকে। ফলে সেই রাজ্যেও বৃষ্টি হয়েছে যথেষ্ট। একই ভাবে গুজরাতে পর্যাপ্ত বৃষ্টি হওয়ার মতো অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হয়নি বলে জানাচ্ছে মৌসম ভবন।