হাওয়ালায় টাকা গিয়ে আসছে সোনা, ধৃত ১১

নতুন নোট হাওয়ালা মারফত বিদেশে যাচ্ছে। সেই টাকার বদলে চোরাপথে সোনা ঢুকছে এ দেশে। শুক্রবার হাওড়া স্টেশন এবং সদর স্ট্রিটের হোটেল থেকে বেআইনি ৩৪ কিলোগ্রাম সোনা-সহ ১১ জনকে পাক়ড়াও করার পর এমনই দাবি করেছেন শুল্ক দফতরের গোয়েন্দা শাখা ডিআরআই (ডিরেক্টরেট অব রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স)-র কর্তারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৭ ০৩:০৯
Share:

নতুন নোট হাওয়ালা মারফত বিদেশে যাচ্ছে। সেই টাকার বদলে চোরাপথে সোনা ঢুকছে এ দেশে। শুক্রবার হাওড়া স্টেশন এবং সদর স্ট্রিটের হোটেল থেকে বেআইনি ৩৪ কিলোগ্রাম সোনা-সহ ১১ জনকে পাক়ড়াও করার পর এমনই দাবি করেছেন শুল্ক দফতরের গোয়েন্দা শাখা ডিআরআই (ডিরেক্টরেট অব রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স)-র কর্তারা। সোনার বার লুকনো ছিল ধৃতদের চপ্পলের সোলের ভিতরে।

Advertisement

পুরনো ৫০০ এবং ১ হাজার টাকার নোট বাতিল হলে হাওয়ালা এবং চোরা কারবারের রমরমা কমবে বলে আশ্বাস দিয়েছিল মোদী সরকার। নোট বাতিলের ঘোষণার পরে গত দু’মাস তেমন সোনা পাচারকারী ধরাও পড়েনি। কিন্তু গোয়েন্দা কর্তারা বলছেন, পরিস্থিতির কারণে সেটা ছিল সাময়িক বিরতি। তাঁদের কথায়, ডিসেম্বরের শেষ থেকে ফের শুরু হয়েছে হাওয়ালা মারফত টাকা পাঠিয়ে সোনা কেনার রমরমা। তা আবার নতুন নোটে।

ডিআরআই জানায়, কলকাতায় ধৃতদের মধ্যে ১০ জনই মণিপুর ও মিজোরামের বাসিন্দা। তাঁরা চোরাই সোনার ‘ক্যারিয়ার’। অন্য জন কলকাতার এক ব্যবসায়ীর প্রতিনিধি। ধৃতদের জেরা করে শুল্ক-গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, চোরাই সোনা দুবাই থেকে মায়ানমার হয়ে মণিপুরের মোরে সীমান্ত দিয়ে এ দেশে ঢুকেছিল। তদন্তকারীরা বলছেন, ক্যারিয়ারেরা এই কারবারের চাঁইদের চেনে না। কিছু ফোন নম্বর মিলেছে। কিন্তু সেগুলি ভুয়ো নথি দিয়ে তোলা। ফলে সেই সূত্র ধরে এগোলেও লাভ হবে না।

Advertisement

গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তর-পূর্ব ভারত থেকে শুক্রবার ভোরে রেলপথে কলকাতায় চোরাই সোনা আসবে বলে খবর মিলেছিল। তাই বৃহস্পতিবার মাঝরাত থেকে হাওড়া স্টেশনে ওত পেতেছিলেন গোয়েন্দারা। অসম থেকে আসা দু’টি ট্রেন থেকে আট যুবককে আটক করা হলেও প্রথমে সোনা মেলেনি। ওই যুবকদের চপ্পলের দিকে নজর যায় গোয়েন্দাদের। চপ্পল হাতে নিয়ে টান মারতেই সোলের ভিতর থেকে বেরিয়ে আসে সোনার ‘বার’!

গোয়েন্দারা বলছেন, বিশেষ কায়দায় জুতোর সোলের ভিতর জায়গা তৈরি করে সোনা লুকনো হয়েছিল। এক-একটি সোলের ভিতরে একটি করে ‘বার’ ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ওই যুবকদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই সদর স্ট্রিটের একটি হোটেলের খোঁজ মেলে। সেখানে হানা দিয়ে আরও দুই পাচারকারী এবং বড়বাজারের এক ব্যবসায়ীর প্রতিনিধিকে মেলে। হোটেল থেকে পাকড়াও করা যুবকদের ব্যাগেও ফোকর তৈরি করে সোনার ‘বার’ এবং বিস্কুট লুকনো ছিল। এক-একটি সোনার বিস্কুটের ওজন ১৬০ গ্রাম। এক-একটি ‘বার’ ১৬৮০ গ্রামের।

ডিআরআই জানিয়েছে, হাওড়া স্টেশন থেকে প্রায় ২৮ কিলোগ্রাম এবং সদর স্ট্রিটের হোটেল থেকে ৬ কিলোগ্রাম সোনা মিলেছে। ব্যাঙ্কশাল আদালতে হাজির করানো হলে ধৃতদের জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন