PK

BJP's PK: প্রশিক্ষণ দেন বিজেপি সাংসদ-বিধায়কদের, তবে তাঁর দাবি, তিনি ‘পদ্মের পিকে’ নন

বাংলার রাজনীতিতে বিজেপি বিধায়কদের পরিষদীয় রাজনীতির পাঠ পড়াতে এসেছে একটি বেসরকারি সংস্থা। সেই সংস্থাটির নেতৃত্বে রয়েছেন মানস গুব্বি।

Advertisement

অমিত রায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২১ ১৪:৩৭
Share:

বেসরকারি সংস্থা ‘পিআরএস লেজিসলেটিভ রিসার্চ’-এর নেতৃত্বে রয়েছেন মানস গুব্বি। তবে তাঁর সংস্থাকে ‘আইপ্যাক’ বা নিজেকে ‘বিজেপি-র পিকে’ ভাবতে নারাজ দিল্লির এই যুবক। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।

তিনি কি পদ্মশিবিরের প্রশান্ত কিশোর? ভাবগতিক এবং তাঁর কর্মপদ্ধতি দেখে তো তেমনই ঠাউরেছেন অনেকে। কারণ, পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় নবনির্বাচিত বিজেপি বিধায়কদের পরিষদীয় রাজনীতির পাঠ পড়াতে তাঁকে ডেকে এনেছে গেরুয়া শিবির। ঠিক যেমন তৃণমূল নিয়ে এসেছিল প্রশান্ত কিশোর ওরফে ‘পিকে’-কে।

গত ২ মে ভোটে জিতে পশ্চিমবঙ্গে তৃতীয়বার ক্ষমতায় এসেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে সেই অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে বড় ভুমিকা নিয়েছিলেন ভোটকুশলী পিকে। তাই তাঁর সংস্থা ‘আইপ্যাক’-এর সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ ২০২৬ সাল (পরের বিধানসভা ভোট) পর্যন্ত বাড়িয়েছে তৃণমূল। পিকে-র নেতৃত্বাধীন সংস্থা তৃণমূলকে বিধানসভা ভোটে জেতাতে ময়দানে নেমে কাজ করেছিল। কলকাতা পুরসভার ভোটেও তারা মাঠে নেমে কাজ করছে। সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম বাছাই করা তো বটেই, তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ভোটে লড়ার কার্যকারিতা বোঝানোর কাজও শুরু করে দিয়েছে তারা।

Advertisement

মানসের নেতৃত্বাধীন ‘পিআরএস লেজিসলেটিভ রিসার্চ’ ২০০৫ সাল থেকে ভারতের সংসদীয় ও পরিষদীয় রাজনীতি নিয়ে কাজ করছে। ফাইল চিত্র।

কাকতালীয় ভাবে, তারই পাশাপাশি বাংলার রাজনীতিতে বিজেপি বিধায়কদের পরিষদীয় রাজনীতির পাঠ পড়াতে এসেছে একটি বেসরকারি সংস্থা ‘পিআরএস লেজিসলেটিভ রিসার্চ’। সেই সংস্থাটির নেতৃত্বে রয়েছেন মানস গুব্বি। তবে তাঁর সংস্থাকে ‘আইপ্যাক’ বা নিজেকে ‘বিজেপি-র পিকে’ ভাবতে নারাজ দিল্লির এই যুবক। এমনকি, এই সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দিতেও রাজি নন তিনি।

মানস নয়াদিল্লির ‘ইন্ডিয়ান স্কুল অব পাবলিক পলিসি’ থেকে ‘পাবলিক পলিসি, ডিজাইন এবং ম্যানেজমেন্ট’ নিয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি পেয়েছেন। তার আগে তিনি মুম্বইয়ের ‘প্রজা ফাউন্ডেশন’-এর হয়ে কাজ করেছেন। মুম্বই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাজনীতিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী মানস মুম্বইয়ের সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের স্নাতক।

Advertisement

মানসের নেতৃত্বাধীন ‘পিআরএস লেজিসলেটিভ রিসার্চ’ ২০০৫ সাল থেকে ভারতের সংসদীয় ও পরিষদীয় রাজনীতি নিয়ে কাজ করছে। লোকসভা ও রাজ্যসভার সচিবালয়, স্পিকার এবং রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে কাজ করার পাশাপাশি বিভিন্ন রাজ্যের বিধানসভাতেও একই কাজ করে থাকে তারা। লোকসভা বা কোনও রাজ্যে বিধানসভা ভোট হয়ে গেলে সংসদ বা সংশ্লিষ্ট বিধানসভার প্রত্যেকটি অধিবেশনে নজর রাখা থেকে শুরু করে বিল, প্রস্তাব, আলোচনা, প্রশ্নোত্তরপর্ব, উল্লেখপর্ব-সহ নানা বিষয় সংগ্রহে রেখে তা নিয়ে গবেষণা করাই এই সংস্থার প্রধান কাজ। কোনও সাংসদ বা বিধায়ক যদি সংসদে বা বিধানসভায় বক্তৃতা করার জন্য তাদের সাহায্য চান, তা হলে সে ক্ষেত্রেও সক্রিয় সাহায্য করে থাকে এই সংস্থাটি। বর্তমানে সেই সংস্থার দায়িত্বে রয়েছেন মানস।

কোনও একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে মানসের সংস্থার কোনও ‘পেশাগত’ যোগাযোগ নেই। সেই কারণেই পিকে-র সঙ্গে ‘এমজি’-র তুলনা চলে না। ফাইল চিত্র।

সেই সূত্রেই মানস যোগাযোগ করেন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দল বিজেপি-র সঙ্গে। তাঁর কথা শুনে ‘নড়বড়ে’ বিধায়কদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিজেপি-র পরিষদীয় দল। তবে আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে মানসের দাবি, এমন প্রশিক্ষণ তাঁরা আগেও দিয়েছেন। কোনও একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তাঁদের কোনও ‘পেশাগত’ যোগাযোগ নেই।

মানসের সংস্থার লোকজন মনে করেন, সেই কারণেই পিকে-র সঙ্গে ‘এমজি’-র কোনও তুলনা চলে না। তাঁদের ব্যাখ্যা, পেশাদার ভিত্তিতে ভাবে মানস বা ‘পিআরএস লেজিসলেটিভ রিসার্চ’ ওই কাজে জড়িত নয়। তা ছাড়া, পিকে কখনও বিজেপি, কখনও জেডি (ইউ), কখনও কংগ্রেস, কখনও আপ, কখনও ডিএমকে, কখনও তৃণমূল বা কখনও ওয়াইএসআর কংগ্রেসের হয়ে পেশাদার ভিত্তিতে কাজ করেছেন। সবক্ষেত্রেই পারিশ্রমিকের বিষয় ছিল। কিন্তু মানস বা তাঁর নেতৃত্বধীন সংস্থা রাজনৈতিক দলের জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কাজ করলেও কোনও আর্থিক লেনদেন হয়নি। ‘পেশাদার ভোটকুশলী’-র সঙ্গে তাঁর পার্থক্য বিস্তর বলেই দাবি মানসের। এবং তিনি চান না, বিজেপি বা অন্য কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তাঁর বা সংস্থার নাম সরাসরি জড়াক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন