অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক হরিদয়াল রায়। —নিজস্ব চিত্র।
মাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসে অভিযুক্ত ময়নাগুড়ি সুভাষনগর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক হরিদয়াল রায়কে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা সংক্রান্ত সব দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। একই সঙ্গে তাঁর থেকে দূরত্ব তৈরি করতেও শুরু করল জেলা তৃণমূল। জানানো হয়েছে, উনি তৃণমূলের সঙ্গে কোনও ভাবেই যুক্ত নন। স্বয়ং শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়ে দিলেন, হরিদয়ালের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ প্রমাণ হলে তাঁর শিক্ষারত্ন কেড়ে নেওয়া হবে।
এই পরিস্থিতিতে এ দিন কলকাতা রওনা হয়েছেন হরিদয়াল। আজ শুক্রবার কলকাতায় মধ্য শিক্ষা দফতরের অফিসে হাজিরা দিতে হবে তাঁকে। শুধু হরিদয়ালই নন, ময়নাগুড়ির স্কুলের পরিচালন সমিতির সদস্য এবং সংশ্লিষ্ট আরও কয়েক জনকে ডাকা হয়েছে বলে জেলা শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর। বৃহস্পতিবার পর্ষদের আঞ্চলিক অফিসে ডেকে পাঠানো হয়েছিল হরিদয়ালকে। দুপুরের পরে তাঁকে জানানো হয়, তিনি যখন কলকাতায় উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হচ্ছেন, তখন তাঁর আর শিলিগুড়ির অফিসে যাওয়ার প্রয়োজন নেই।
পর্ষদের একটি সূত্রের সন্দেহ, প্রশ্ন ফাঁসে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে আরও কয়েক জন জড়িত। কারণ, একা এমন কাজ অসম্ভব। পর্ষদের এক কর্তার দাবি, দোষ প্রমাণ হলে তাঁদেরও শাস্তি হবে। এর মধ্যে হরিদয়ালকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, তাঁকে আর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় সুভাষনগর স্কুলের পরীক্ষা পরিচালনা করতে হবে না।
ময়নাগুড়ি তো বটেই, গোটা রাজ্যের শিক্ষামহলেই এখন একটা প্রশ্ন, হঠাৎ এমন কেন করতে গেলেন হরিদয়াল? তাঁকে যাঁরা চেনেন, তাঁদের একটি বড় অংশের দাবি, সম্ভবত অতিরিক্ত উচ্চাকাঙ্ক্ষাই কাল হল তাঁর। বছর ২৩ আগে এই স্কুলে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন হরিদয়াল। দু’বছর বাদে স্কুলের প্রধান শিক্ষক হন। স্থানীয় সূত্রের খবর, কোনও কালেই এলাকার ছাত্রছাত্রীদের প্রথম পছন্দের স্কুল হিসেবে পরিচিত ছিল না সুভাষনগর হাইস্কুল। স্কুলের শিক্ষকদের একাংশের দাবি, এই অবস্থার পরিবর্তন আনতে চেয়েছিলেন হরিদয়াল। ২০১১ সাল থেকে উচ্চ মাধ্যমিকের মেধা তালিকায় নিয়মিত ঠাঁই পেতে থাকে স্কুল। শিক্ষকদের একাংশের দাবি, তাই হয়তো মাধ্যমিকেও একই পথ নিতে চেয়েছিলেন তিনি। হরিদয়ালের দাবি, ‘‘প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা হচ্ছে৷ আমি রাজনীতির শিকার৷’’ যদিও বৃহস্পতিবার হরিদয়ালের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে তৃণমূলই৷