ছবি: সংগৃহীত।
বর্ষা বিদায় নিলেও নিম্নচাপ, নিম্নচাপ-অক্ষরেখা বা ঘূর্ণাবর্ত যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না বাংলার!
কয়েক দিন আগেই বেপরোয়া এক নিম্নচাপের জেরে গাঙ্গেয় বঙ্গে প্রবল বৃষ্টি হয়েছিল। আবার এক নাছোড় নিম্নচাপ অক্ষরেখা হাজির হয়েছে বাংলার উপরে। রবিবার তার মতিগতি খতিয়ে দেখে দক্ষিণ এবং উত্তর, দুই বঙ্গেই ফের বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে হাওয়া অফিস। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস এ দিন জানান, আজ, সোমবার দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। আগামী তিন দিন বৃষ্টি হতে পারে উত্তরবঙ্গে।
রবিবার সকাল থেকেই মেঘের প্রবল আনাগোনা চলছে। আবহাওয়া দফতরের খবর, নিম্নচাপরেখাটি প্রলম্বিত রয়েছে বায়ুমণ্ডলের নিচু স্তর দিয়ে। সাগর থেকে জোলো হাওয়া টেনে আনছে সে। সেই জলীয় বাষ্পই ঘনীভূত হয়ে মেঘ তৈরি করছে।
বর্ষা বিদায় নিয়েছে প্রায় পক্ষকাল আগে। ঋতু-পঞ্জিকা ধরলে এখন হেমন্ত। কিন্তু হেমন্তের চিরচেনা হিমেল হাওয়ার দেখা নেই। গভীর রাতে বা ভোরের দিকে কমবেশি ঠান্ডা লাগছে বটে, কিন্তু সেটা জোলো ঠান্ডা। দিন কয়েক আগে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের বহু জায়গায় ভোরে কুয়াশাও দাপট শুরু করেছিল।
পরিবেশবিদদের অনেকে বলছেন, বিশ্ব উষ্ণায়ন আর জলবায়ু বদলের চক্করে বেশ কয়েক বছর ধরেই হেমন্ত উধাও। বর্ষা বিদায় নিতে নিতে অক্টোবর প্রায় শেষ করে ফেলে। নভেম্বরের ঠান্ডা-গরমের ধাক্কা সইতে সইতে ডিসেম্বরেও শীত পড়ে না। শীত কালেও মেলে না হাড়কাঁপানো শীত। আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, উত্তরের বাতাস এখনও ঢুকছে না। বরং বারবার নিম্নচাপ আর নিম্নচাপ-অক্ষরেখার হানাদারিতে সাগরের জোলো হাওয়া ঢুকে পড়ছে। তার জেরেই এই পরিস্থিতি। কুয়াশার জন্যও দায়ী বাতাসের অতিরিক্ত জোলো ভাব। রাতে তাপমাত্রার পতনে সেই জোলো হাওয়াই ঘনীভূত হয়ে কুয়াশা তৈরি করছে।
দিল্লির মৌসম ভবনের একটি সূত্রের বক্তব্য, হিমেল হাওয়ার জন্য উত্তর-পশ্চিম ভারতের তাপমাত্রা নামতে হবে। সেখানে ঠান্ডা পড়লে তবেই সেই হাওয়া বয়ে আসবে এ দিকে। কিন্তু এ দিন ভোরে কলকাতায় যে-সর্বনিম্ন তাপমাত্রা (২২.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের তুলনায় এক ডিগ্রি বেশি) রেকর্ড করা হয়েছে, তাতে আপাতত হিমেল হাওয়ার তেমন জোরালো হয়ে ওঠার আশা দেখছেন না আবহবিজ্ঞানীরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, ঠান্ডা হাওয়ার জন্য পঞ্জাব-রাজস্থানে রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের নীচে নামা দরকার। কিন্তু থার্মোমিটার বলছে, ওই দুই রাজ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এখনও স্বাভাবিকের থেকে ৩-৫ ডিগ্রি বেশি।
এবং পূর্বাভাস, আগামী কয়েক দিনে সেই ছবি বদলের আশা নেই।